কাপ্তাই প্রশান্তি বিনোদন পার্কে পর্যটকদের উপচে পড়া ভীড়
কাপ্তাই প্রতিনিধি:
অপরুপ সৌন্দর্যের লীলাভুমি রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলা। কাপ্তাইয়ের প্রতিটি স্থানেই রয়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মিলনমেলা। সবুজ পাহাড়, লেক, কর্ণফুলী নদী সহ আঁকা-বাঁকা পাহাড়ি পথ যে কোন মানুষের মনকে আকর্ষণ করে সহজেই।
বিনোদনপ্রেমীদের বিনোদন প্রদানের প্রয়াসে কাপ্তাইয়ের বালুরচর এলাকায় কাপ্তাই-চট্টগ্রাম সড়কের গাঁ ঘেসে নব রুপে নির্মিত হয়েছে আকর্ষণীয় পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্র ‘প্রশান্তি পার্ক’। পাহাড়, সবুজ বৃক্ষ, কর্ণফুলী নদী সহ বেশ কয়েকটি আকর্ষণীয় স্পট নিয়ে ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য আর্কষনীয় এই স্পটে প্রতিনিয়ত হাজার হাজার পর্যটকের আগমন ঘটেছে।
এই বিনোদন পার্কে বেড়াতে আসা চট্রগ্রামের বহদ্দার হাট হতে মৌসুমি-কামরুল দম্পতি জানান, প্রকৃতির অপরুপ সৌন্দর্য মণ্ডিত কর্ণফুলী নদীর পাশে অবস্থিত এই বিনোদন স্পটে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা পাওয়া গেছে। যা তাদের ভ্রমনকে আনন্দদায়ক করেছে।
কথা হয় এই পার্কে বেড়াতে আসা চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থীদের সাথে। তারা জানান, প্রশান্তি পিকনিক স্পটের খাবারের মান অনেক মানসম্মত এবং দাম হাতের মুঠোয়।
এদিকে রাঙ্গামাটির কাউখালী থেকে বেড়াতে আসা উমেচিং মার্মা, চিনুপ্রু মার্মা সহ অনেকের সাথে কথা হয়। তারা সকলেই প্রশান্তি পিকনিক স্পটের মনোরম পরিবেশ দেখে মুগ্ধ হন। সাপ্তাহিক ছুটি শুক্রবার ও শনিবার ছাড়াও প্রতিদিন এই বিনোদন কেন্দ্রে ভ্রমনপিপাসুরা আসেন দল বেঁধে।
কাপ্তাই ন্যাশনাল পার্কে অবস্থিত এই বিনোদন কেন্দ্র ইতোমধ্যে অন্যতম ভ্রমণ কেন্দ্র হিসেবে সবার কাছে পরিচিতি লাভ করেছে। কাপ্তাই-চট্টগ্রাম মহাসড়কের একেবারে পাশে অবস্থিত হওয়ায় সড়কপথে যে কোনো সময় অতি সহজে প্রশান্তি পিকনিক স্পটে আসা যায়। আবার কর্ণফুলী নদীর তীর ঘেঁষে অবস্থিত হওয়ায় নৌপথেও প্রশান্তি পিকনিক স্পটে আসার সুযোগ রয়েছে।
অসংখ্য গাছগাছালির সমাহার রয়েছে এই প্রশান্তি পিকনিক স্পটে। গাছের মগডালে লম্বা লেজওয়ালা কালোমুখি হনুমান প্রায় সময় দেখা যায়। এ গাছ থেকে ও গাছে বানরের দাপাদাপি ও লাফালাফি দেখা যাবে এখানে। এছাড়াও হরেক রকম পাখির কলকাকলিতো আছেই। প্রশান্তি স্পটে অনেকগুলো আকর্ষণীয় সিমেন্টের তৈরি গোলঘর রয়েছে। এসব গোলঘরে সিমেন্টের তৈরি বসার স্থায়ী ব্যবস্থাও আছে। প্রশান্তি পিকনিক স্পট সংলগ্ন কর্ণফুলী নদীতে নৌ ভ্রমণের ব্যবস্থা থাকায় অনেক পর্যটক এখানে এসে নৌ বিহারে বেরিয়ে পড়েন। আবার কর্ণফুলী নদীর মৃদু হাওয়া দুলতে পারে কায়াকিংয়ে। রয়েছে কায়াকিং করার জন্য সুব্যবস্থা। প্রশান্তি পিকনিক স্পটের কাছ ঘেঁষে বয়ে যাওয়া কর্ণফুলী নদী পর্যটকদের সবসময় আকৃষ্ট করে। প্রশান্তি পিকনিক স্পটের অদূরেই রয়েছে ঐতিহাসিক সীতাপাহাড়। যেখানে সীতাকে বনবাসে দেওয়া হয়েছিল। বনবাসে থেকে সীতা কর্ণফুলী নদীর যে ঘাটে এসে গোসল করতেন সেই ঘাটটি এখন সবার কাছে সীতার ঘাট নামে পরিচিত। এছাড়া পার্কের মধো রয়েছে টাইলস দিয়ে তৈরিকৃত নামাজ পড়ার সুন্দর মসজিদ।
প্রশান্তি পিকনিক স্পটে বিনোদনে এসে সীতার ঘাটে পা ফেলতে কার না মন চায়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করার জন্য রয়েছে কাঠের তৈরি মনোমুগ্ধকর মঞ্চ। পিকনিকে আসা লোকজন নেচে- গেয়ে হৈহুল্লোড় করে এই মঞ্চ মাতিয়ে রাখেন। এখানে একসঙ্গে পাঁচ হাজার লোক সমাগমের ব্যবস্থা রয়েছে। নারী-পুরুষের জন্য পৃথক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন টয়লেট সার্বক্ষণিক পানি সরবরাহ রয়েছে। আকর্ষণীয় এই বিনোদন কেন্দ্রের নাম প্রশান্তি। সত্যিকার অর্থেই এখানে আসলে প্রশান্তিতে মন ভরে যায়। প্রশান্তি পিকনিক স্পটের প্রবেশ মুখে রয়েছে শনের তৈরি গোলঘর। প্রশান্তির চতুর্দিকে রয়েছে বাঁশের চটির তৈরি হালকা দেয়াল।
প্রশান্তি পিকনিক স্পটের পরিচালক মো. নাছির উদ্দিন জানান, ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যের চেয়ে মানুষকে বিনোদন দেওয়ার প্রত্যাশা নিয়েই আমরা এটি পরিচালনা করছি। এখানে যারা ভ্রমণে আসবেন তারা যদি কাপ্তাইয়ের দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখতে চান, রাঙ্গামাটির ঝুলন্ত সেতু, সুবলং ঝর্ণা, পেডা টিং টিং, দুপপুর ঝর্ণাসহ যেকোনো স্থানে বেড়াতে যেতে চান তাহলে প্রশান্তি পিকনিক স্পটের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় যানবাহন ও গাইডের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।
Greetings! Very helpful advice within this post!
It’s the little changes that make the most important changes.