গুইমারায় অবৈধ ইট ভাটায় ভ্রাম্যমান আদালতের দায়সারা জরিমানা

ফলোআপ

গুইমারা প্রতিনিধি:

বিভিন গণমাধ্যমে খাগড়াছড়ির গুইমারার অবৈধ তিনটি ইটভাটার সংবাদ প্রকাশের পর দুটি ইট ভাটাকে  ভ্রাম্যমান আদালত কর্তৃক পঁয়ত্রিশ হাজার টাকা জরিমানা ও বৈধ অনুমোদন না পাওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখার জন্য মৌখিক নির্দেশ প্রদান করেছে। পাশাপাশি মেসার্স শহিদ ব্রিকস ও ফোর স্টার ব্রিকস এর ড্রাম চিমনী গুলো ফেলে দেওয়া হয়েছে।

অবৈধভাবে সংরক্ষিত বনের কাঠ পোড়ানোর জন্য শেষ বারের মত বলা হয়েছে। তবে প্রভাবশালী বিএনপি নেতার মেসার্স কামাল ব্রিকসকে জরিমোনা না করা, পাহাড় ও কৃষি জমির উর্বর মাটি কাটার বিষয়ে কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রতি হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়েছে স্থানীয় এলাকাবাসি ও ভুক্তভোগিরা।

বৃহস্পতিবার দুপুরে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিট্রেট ইমরান হোসাইন সজীব ও পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক মাইদুল ইসলামের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়।

ভুক্তভোগি  স্থানীয়রা জানান, বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর প্রশাসন দায়সারা ভাবে এ অভিযান পরিচালনা করেছে। পরিবেশ অধিদপ্তর ও প্রশাসন সারা দেশে ইটভাটায় ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে উপযুক্ত কার্যক্রম চালালেও গুইমারায় হয়েছে তার ব্যতিক্রম।

দুটি ইট ভাটাকে মাত্র পয়ঁত্রিশ হাজার টাকা জরিমানা করায়, অবৈধ ইটভাটাকে গুড়িয়ে না দেওয়া এবং শত শত গাড়ি লাকড়ি জব্দ না করা, পাহাড় ও কৃষি জমির মাটি কাটার বিষয়ে কোন ব্যবস্থা না নেওয়া প্রশাসনের প্রতি হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়েছে তারা। অনেকে বলছে ইট ভাটার মালিকদের সাথে প্রশাসনের যোগসাজসের ফলে দায়সারাভাবে কার্যক্রম করেছে তারা।

উপস্থিত অংশেও মার্মা জানান, উপজেলার নাকের ডগায় এই ইটভাটাগুলো। ইটভাটার ফলে ধূলাবালির কারণে পরিস্কার পোশাক নিয়ে তাদের বাচ্চারা স্কুলে যেতে পারেনা। গ্রামের মানুষ শাষকষ্টসহ অনেক রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে র্নিমত রাস্তাঘাট গুলো ধ্বংশ হচ্ছে, নষ্ট হচ্ছে কৃষি জমি গুলো কিন্তু উপজেলা প্রশাসনের চোখে পড়েনা। স্থানীয়রা ইট বা মাটিবাহী গাড়ির যাতায়াত বন্ধ করলে তখন প্রশাসনের ব্যথা শুরু হয়।

মাওলানা ফারুক সাহেব বলেন, স্থানীয় কোন ঈমাম বাড়ি করতে সামান্য মাটি ড্রেসিং করলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাধা চলে আসে কিন্তু ইট ভাটাগুলো নির্বিচারে কৃষি জমি ও পাহাড় কাটছে। শুধু সময়ের অভাবে প্রমাসনের চোখে পড়েনা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভাটার দায়িত্বরত এক ব্যক্তি জানান, গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর মেহমান হিসেবে এসেছে। সামান্য জরিমানা করেছে। এগুলো নিয়ে ভাটা মালিকদের কোন সমস্যা হবেনা। মাসিক মাশহারা দেওয়া হয়। লেখা লেখি করলে সরকারি আমলাদের ভাতার পরিমানটা একটু বেড়ে যায়। ভাটা মালিকদের বা ভাটার কিছু হয়নি কখনো কিছু হবেওনা।

অভিযানে দায়িত্বরত এক্সিকিউটিভ ম্যাজিট্রেট ইমরান হোসাইন সজীব ও পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক মাইদুল ইসলাম শহিদ ব্রিকসকে পঁচিশ হাজার টাকা জরিমান করে ভ্রাম্যমান আদালতের মুলতবি করেন। উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীরা  অভিযানের বিষয়ে ও পাশাপাশি ফোর স্টারকে রেখে চলে যাওয়ার কারণ  জানতে চাইলে তারা এড়িয়ে যান।

পরে বিষয়টি  জেলাপ্রশাসক মো. শহিদুল ইসলামের নিকট মোবাইল ফোনে অবগত করা হলে দুপুর শেষে গিয়ে ফোর স্টারকে নামে মাত্র দশ হাজার টাকা জরিমানা করেন।

এবিষয়ে খাগড়াছড়ি জেলাপ্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম জানান, গণমাধ্যম কর্মীদের সংবাদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালতের কার্যক্রম খাগড়াছড়িতে শুরু করা হয়েছে এবং এ অভিযান  জেলাব্যাপী অব্যাহত থাকবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন