চকরিয়ায় সাত কেজি গাঁজা উদ্ধারে আটক ৩ শিশুকে সংশোধনাগারে পাঠাতে নির্দেশ

চকরিয়া প্রতিনিধি:

চকরিয়ায় ৭ কেজি গাঁজাসহ তিন শিশু মেয়েকে আটকের সময় ক্রেতা পেশাদার গাঁজা ব্যবসায়ী হিরো চৌধুরী পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায়। ওই সময় বাবাকে না পেয়ে তার ছেলে নারায়ণ চৌধুরীকে থানায় নিয়ে যায়। পরে চকরিয়া থানার এসআই আবদুল বাতেন বাদী হয়ে চারজনকে আসামি করে মাদক আইনে মামলা দায়ের করে।

পুলিশ বৃহস্পতিবার দুপুরে আটক চারজনকে চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে উপস্থাপন করেন। ওইসময় আদালতের বিচারক মামলার প্রাথমিক শুনানী শেষে আটক নারায়ণ চৌধুরীকে কক্সবাজার জেলা কারাগারে এবং আটক অপর তিন শিশু চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার আমিরাবাদ এলাকার মৃত রিদুয়ান আক্তারের মেয়ে দুই শিশু মেয়ে রুখসানা আক্তার তাসপিয়া (১১), কোহিনুর আক্তার (১০), একই এলাকার নুরুল ইসলাম প্রকাশ নুরুর মেয়ে পারুল আক্তারকে (১০) চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার কাটিরহাটস্থ শিশু সংশোধনাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

জানা গেছে, চকরিয়া পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের হিরু চৌধুরী একজন পেশাদার মাদক ব্যবসায়ী। ইতিপূর্বে মাদকসহ ধরা পড়ে কারাবাসও করে সে। মাত্র ৬মাস পূর্বে জামিনে মুক্তি পেয়ে ফের মাদক ব্যবসায় জড়ায়। এ ঘটনা জানতো তার স্ত্রীও। তবে মাদক ব্যবসা নিয়ে বাবা হিরো চৌধুরী ও ছেলে নারায়ণের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ লেগেই ছিল। বাবাকে মাদক ব্যবসা ছাড়াতে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তির দ্বারস্থও হয় ছেলে। তবুও মাদক ব্যবসা ছাড়েনি হিরো চৌধুরী।

বুধবার সকালে লোহাগাড়ার তিন শিশু সাতকানিয়ার এক মাদক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৭ কেজি গাঁজা নিয়ে আসে হিরো চৌধুরীর ঘরে। এ খবর পায় পুলিশ। সাথে সাথে পুলিশ ফোর্স অভিয়ানে গেলে টের পেয়ে স্ত্রীকে সাথে নিয়ে পালিয়ে যায় হিরো চৌধুরী। ওই সময় ঘুমে ছিল নারায়ণ চৌধুরী। তাকে ঘুম থেকে উঠিয়ে তিন শিশুসহ থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

এ ঘটনায় নারায়ণ চৌধুরীসহ তিন শিশুকে আসামি করে পুলিশ মামলা করলেও আসল অপরাধী হিরো চৌধুরী আসামি হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। পাশাপাশি শিশুদের পায়ে গাঁজা বেধে সাতাকনিয়া থেকে পাঠনো ব্যবসায়ীকেও আসামি করা হয়নি।

সচেতন মহলের দাবি, হিরো চৌধুরী ও সাতকানিয়ার গাঁজা সরবরাহকারী ব্যবসায়ীকে আইনের আওতায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে গাঁজা ব্যবসায় সংশ্লিষ্ট বেশক’জন প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম বেরিয়ে আসবে। তাই প্রাথমিক মামলায় ছেলে নারায়ণ নয় বাবা হিরো চৌধুরীকে আসামি করা প্রয়োজন ছিল বলে তাদের অভিমত।

থানার এসআই সুকান্ত চেীধুরী বলেন, হিরো চৌধুরীর বাড়ি থেকে ৭ কেজি গাঁজা পেয়েছি। যাদের অধিকার থেকে গাঁজা পেয়েছি তাদেরকেই আসামি করা হয়েছে। চুড়ান্ত প্রতিবেদনের আগে এই গাঁজা ব্যবসায় অন্য কাউকে জড়িত প্রমাণ পেলে তাদেরও আসামি করা হবে। আর কেউ নিরাপরাধ প্রমান পেলে তাকে অব্যাহতি দেয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন