চালিয়াতলী-মাতারবাড়ী সংযোগ সড়কে সংস্কার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে নিম্নমানের সামগ্রী

মহেশখালী প্রতিনিধি:

মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়া ইউনিয়নের চালিয়াতলী চিতাখুলা রাস্তা মাথা থেকে মাতারবাড়ী সংযোগ সড়ক সংস্কারের কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, নিম্নমানের বালু, কংকর ও বিটুমিন ব্যবহার করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তাদের অভিযোগ করার পরও কোনো কাজ হচ্ছে না।

স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের মহেশখালী কার্যালয় সূত্র জানায়, চালিয়াতলী চিতাখুলা রাস্তার মাথা সড়ক থেকে মাতারবাড়ী উত্তর রাজঘাট বাজার পর্যন্ত সাড়ে ৪ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার করতে ৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। আধা কিলোমিটার সিটি ঢালাই দেওয়ার কথা রয়েছে। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে কক্সবাজারের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আসাদ এন্টারপ্রাইজ।

মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার চালিয়াতলী মাতারবাড়ী সংযোগ সড়ক এলাকায় সংস্কার কাজে ব্যবহারের জন্য নিম্নমানের ইট এনে খোয়া বানানো হচ্ছে।  কম পরিমাণ উপাদান ও নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে তড়িঘড়ি করে সড়কের এ অংশের সংস্কার কাজ শেষ করতে তড়িঘড়ি করছে কাজের দায়িত্ব পাওয়া ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া সংস্কার কাজের জন্য চালিয়াতলী এলাকায় এনে মজুত করা হয়েছে নিম্নমানের পাথর, বালি ও বিটুমিন। বিটুমিন ব্যবহারের আগে ময়লা ও শুকনো পাতা পরিষ্কার না করেই প্রলেপ দেওয়া হচ্ছে। এতে পিচঢালাই অনেক স্থানে উঠে যাচ্ছে।

মাতারবাড়ী নিরাপদ সড়ক চাই সংগঠনের সমন্বয়ক আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, চালিয়াতলী-মাতারবাড়ী  সংযোগ সড়কটি দীর্ঘদিন সংস্কার বঞ্চিত ছিল।

অনেক আন্দোলন ও দাবীর প্রেক্ষিতে এখন সংস্কারকাজ হচ্ছে। কিন্তু চরম অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে যেনতেনভাবে সংস্কার কাজ শেষ করার চেষ্টা করছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বারবার তাগাদা দিয়েও কাজ হচ্ছে না। আর কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য বিকল্প সড়ক না থাকায় উক্ত সড়ক দিয়ে মালবাহী বড় বড় গাড়ী চলাচল করতে গিয়ে আমাদের মাতারবাড়ী বাসির যাতায়াতের এক মাত্র মাধ্যম সড়কটি নষ্ট করে ফেলছে।

মাতারবাড়ী টেম্পু মালিক সমিতির অর্থ সম্পাদক মো. ওয়াসিম উদ্দিন বলেন, নিম্নমানের সংস্কার কাজ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। নিম্নমানের খোয়া ও বিটুমিন ব্যবহারের কারণে সড়কের স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। নিম্নমানের কাজে উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে যোগসাজশ থাকতে পারে। উক্ত সড়কের সংস্কার কাজ টেকসই করার জন্য সেনাবাহিনী দিয়ে তদারকি করা দরকার। অনেকে বলছেন এটা পুকুর চুরি না, সাগর চুরি বলতে হবে।

মাতারবাড়ী সেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি মুরাদ বলেন, সম্প্রীতি আলহাজ্ব আশেক উল্লাহ রফিক এমপি স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগের ভিত্তিতে উক্ত সড়কের সংস্কার কাজ পরিদর্শন করেন। কাজের মান নিয়ে তিনি অসন্তুষ্ট প্রকাশ করলে সে সময় কিছুটা কাজ ভাল হয়। তিনি চলে যাওয়ার পর আবার ও নিম্মমানের কাজ করায় ব্রিক সলিং উঠে যাচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সংস্কার কাজে নিম্ন মানের উপকরণের ব্যবহার ও যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করায় সরকারি বিপুল অর্থ লোপাট হচ্ছে। একই সাথে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে টেকসই উন্নয়ন। গত দুই সপ্তাহ ধরে সংস্কার কাজে এ অনিয়ম দুর্নীতি চলে আসলেও এর বিরুদ্ধে দৃশ্যত কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এতে ক্ষোভ জানিয়েছেন স্থানীয় সচেতন মহল।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, অত্যন্ত নিম্নমানের ইটের খোয়া, পাথর ও বালি ব্যবহার করে সড়কটি সংস্কার করা হচ্ছে। সড়কে ব্যবহারের জন্য মজুদ করা হয়েছে মানহীন বিটুমিন। নিম্নমানের এসব উপকরণ সংস্কার কাজে ব্যবহার না করতে অনুরোধ করা হলেও এতে কর্ণপাত করছেনা প্রভাবশালী ঠিকাদার মো. আসাদ। ইতিমধ্যে সোস্যল মিডিয়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অনেকে ক্ষোভের সাথে কাজের গুণগত মান নিয়ে স্ট্যাটাস দিলে তা ভাইরাল হয়ে দেশব্যাপি ছড়িয়ে পড়ে। তার পরও তদারকিতে নিয়োজিত থাকা সংশ্লিষ্ট প্রশাসন এখনোও ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষোভের ধানা বেঁধেছে। ডেন্স কারপেটিং এবং আর সি সি দ্বারা উক্ত সড়কের কাজ পুরুধমে শুরু হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন