দীঘিনালায় বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত, ভাঙ্গন আতংকে তীরবাসী

নিজস্ব প্রতিবেদক, খাগড়াছড়ি:

খাগড়াছড়ি জেলা সদর ও মহালছড়ির বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হলেও জেলার দীঘিনালা উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে।

টানা তিন দিনের বর্ষণে এখনো ডুবে আছে মেরুং হাসপাতাল, মেরুং পুলিশ ফাড়ি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ মেরুং বাজারের তিন শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। সেই সাথে তিন দিন ধরে বিদ্যুত বিহীন রয়েছে মেরুং। ভেসে গেছে শত শত পুকুরের মাছ। পাহাড় ধস ও সড়ক নিমজ্জিত থাকায় খাগড়াছড়ি-রাঙামাটি ও দীঘিনালা-লংগদু সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। সেই সাথে নদী ভাঙ্গণ আতংকে রয়েছে তীরবাসী। আকস্মিক ভয়াবহ বন্যায় থমকে গেছে খাগড়াছড়িবাসীর ঈদ আনন্দ।

বুধবার (১৩ জুন) সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, খাগড়াছড়ি শহরের মেহেদীবাগ, বাস টার্মিনাল, শান্তিনগর, সবজি বাজার, গঞ্জপাড়া, মিলনপুর, মুসলিমপাড়া, ফুটবিল, মাস্টার পাড়া, শহীদ কাদের সড়ক, অর্পনা চৌধুরী পাড়া, আপার পেড়াছড়া পানির নীচে তলিয়ে আছে। পানিবন্দি লোকজন বাড়ী ফেরার অপেক্ষায় আছে।

দীঘিনালা উপজেলা চেয়ারম্যান নব কমল চাকমা জানান, দীঘিনালা উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকায় প্রায় তিন হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। বিভিন্ন আশ্রয় শিবিরে ও স্বজনদের বাড়ীতে দুই হাজার পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। সেনাবাহিনীর সহায়তায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা দুর্গতদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করছে।

এদিকে খাগড়াছড়ি জেলা সদর ও মহালছড়ির বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে এখনো নিজবসত বাড়িতে ফিরতে পারেনি লোকজন। ভাসিয়ে নিয়ে গেছে কয়েকশত পুকুরের মাছ, গবাদি পশু ও ফসলের ক্ষেত। চেঙ্গী নদীর পানি কমার সাথে নদী ভাঙ্গণে তীরবর্তী মানুষের মাঝে আতংক দেখা দিয়েছে।

প্রসঙ্গত, টানা বর্ষণে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা খাগড়াছড়ি শহরের অধিকাংশ এলাকা ও মহালছড়ি উপজেলার ৫টি গ্রাম পানির নীচে তলিয়ে গেলে অন্তত ৪ হাজার মানুষ পানিবন্দি ও সহস্রাধিক পরিবার বাড়ী-ঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে আসে। পাহাড় ধসে মাটি চাপা পড়ে বেশ কিছু কাচা ঘর-বাড়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়। খাগড়াছড়িস্থ পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড ও সড়ক বিভাগের অফিস পানি ঢুকে গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র নষ্ট হয়ে যায়।

খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো. রাশেদুল ইসলাম জানান, পর্যাপ্ত ত্রাণ রয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ করে সবার কাছে সাহায্য পৌঁছে দেওয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন