ধানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার দাবিতে খাগড়াছড়িতে বিএনপির স্মারকলিপি

fec-image

পুলিশের বাঁধায় ধানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত এবং পাটকল শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপি।

কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে মঙ্গলবার (২১ মে) সকাল ১১টায় জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলামের কাছে স্মারকলিপি দিতে বিএনপির নেতৃবৃন্দ বের হলে আদালত সড়ক এলাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়ে।

স্মারকলিপিতে অভিযোগ করা হয়, কৃষকদের পথে বসিয়ে নিজেদের লোকদের টাকা লুটের সুযোগ করে দিতেই ধানের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে কৃষকদের। উৎপাদন খরচ থেকে কমে ধান বিক্রি করতে হচ্ছে কৃষকদের।

স্মারকলিপিতে অভিযোগ করা হয়, বোরো ধানের দাম নিয়ে কৃষকদের মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। উৎপাদিত ধানের মূল্য উৎপাদন খরচের চেয়ে অনেকগুণ কম হওয়ায় কৃষকরা হাহাকার করছে। উৎপাদন খরচ থেকে ৩শ’ টাকা কমে প্রতি মন ধান বিক্রি করতে হচ্ছে কৃষকদের। প্রতি বিঘা জমিতে কৃষকের ক্ষতি হচ্ছে দুই হাজার টাকা। ধানের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় টাঙ্গাইল, জয়পুরহাট ও নেত্রকোনাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কৃষকরা পাকা ধানক্ষেতে আগুন দিচ্ছে, পাকা ধানে মই দিচ্ছে, সড়কে ধান ছিটিয়ে প্রতিবাদ করছে। সরকার প্রতি মন ধান কেনার জন্য ১ হাজার ৪০ টাকা প্রদান করলেও কৃষকের হাতে যাচ্ছে ৪শ’ থেকে ৫শ’ টাকা। বাকি টাকা যাচ্ছে সরকারের আনুকূল্য পাওয়া মধ্যস্বত্বভোগীদের পকেটে। এ নিয়ে সরকারের কোন মাথা ব্যাথা নেই। ধানের দাম কমার জন্য উদ্ভুত সংকটে সরকার উদাসীন। এ বিষয়ে তাদের কোন দায় নেই বলে কৃষি মন্ত্রী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। সরকারের গণবিরোধী নীতির কারনেই কৃষকরা উৎপাদিত ধানের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অথচ কৃষকরাই বাংলাদেশের আত্মা ও দেশের প্রাঁণ। কৃষকদের রক্ষা করতে না পারলে দেশে দুর্যোগ নেমে আসবে। তারা উৎপাদন বন্ধ করে দিলে দেশে দুর্ভিক্ষ নেমে আসবে। ১৭ কোটি মানুষ না খেয়ে মরবে। মধ্যস্থতাকারী সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে ধান ক্রয় না করে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে কিনে ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করা ও মধ্যস্বত্বভোগী সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম বন্ধ করার জন্য আমরা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি, খাগড়াছড়ি জেলা, সরকারকে আপনার মাধ্যমে আহ্বান জানাচ্ছি।

পাশাপাশি জাতীয় মুজুরী কমিশন বাস্তবায়ন ও বকেয়া মুজুরীসহ ৯ দফা দাবিতে বাংলাদেশ রাষ্ট্রয়াত্ত্ব বিভিন্ন পাটকল শ্রমিকরা আন্দোলন করছে। দেশের ২৬টি পাটকলে একযোগে লাগাতার ধর্মঘট শুরু হলেও সরকার তাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নিচ্ছে না। ১০ থেকে ১৫ সপ্তাহ মুজুরী না পেয়ে শ্রমিকরা অর্ধাহার ও অনাহারে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। ২০১৫ সালের মুজুরী কমিশন রোয়েদাত এখনও বাস্তবায়ন করা হয়নি। অথচ রমজান মাস শুরু হয়েছে। এ মাসে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য পণ্য কেনার সামর্থ তাদের নেই। কর্মচারীদের চার মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থের প্রতি সরকারের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। বরং তাদের উপর শোষণের মাত্রা আরও তীব্র হয়েছে। শ্রমিকরা পাট জাত দ্রব্য উৎপাদন করছে বিনিময়ে তারা মুজুরী থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। দেশে বৈষম্য ও বঞ্চণা প্রকট আকার ধারণ করেছে

এ সময় উপস্থিত ছিলেন খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি প্রবীন চন্দ্র চাকমা, মংসাথোইয় চৌধুরী, মোসলেম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক এম এন আবছার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক আ. রব রাজা’র, আবু তালেব, খনি রঞ্জন ত্রিপুরা, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. মফিজুর রহমান, জেলা যুবদলের সভাপতি মাহবুবুল আলম সবুজ, সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম খলিল, জেলা মহিলা দলের সহ-সভাপতি শাহেনা আক্তার, সাধারণ সম্পাদক কুহেলী দেওয়ান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি নজরুল ইমলাম, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো. সাহেদ হোসেন সুমন, সাধারণ সম্পাদক জাহেদুল আলম ও কৃষক দলের সভাপতি পারদর্শী বড়ুয়াসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: খাগড়াছড়ি, বিএনপি, স্মারকলিপি
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন