পাহাড় সংরক্ষণে স্থানীয় জনগণ ও প্রশাসনের সমন্বিত উদ্যোগ জরুরী

কক্সবাজার প্রতিনিধি:

পরিবেশবান্ধব পর্যটন শিল্পের বিকাশ ও অর্থনৈতিক দিক থেকে কক্সবাজারের গুরুত্ব অপরিসীম। কিন্তু চিহ্নিত পাহাড় খেকোদের পাশাপাশি উন্নয়নের নামে অপরিকল্পিত কিছু প্রকল্পের আঘাতে কক্সবাজার আজ  নিজেই রুগ্ন প্রায়।

পাহাড় কেটে বিভিন্ন আবাসন ও চাষযোগ্য জমি সৃষ্টির জন্য চলছে কক্সবাজারের প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংসের মহাযুদ্ধ। তাই পরিবেশ সংরক্ষণের পাশাপাশি প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবেলা করতে পাহাড় ও বন সংরক্ষণ করা অত্যন্ত জরুরী। পাহাড় সমৃদ্ধ কক্সবাজারকে সুরক্ষার জন্য উচ্চ আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে স্থানীয় জনগণ ও প্রশাসনের সমন্বিত উদ্যোগ জরুরী।

রবিবার(২৩ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) আয়োজিত ‘কক্সবাজারের পাহাড় সংরক্ষণে করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান লে.কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমদের সভাপতিত্বে কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, পর্যটনের পাশাপাশি পরিবেশের দিক দিয়েও কক্সবাজারের গুরুত্ব অপরিসীম। কক্সবাজারে পরিবেশবান্ধব পর্যটন শিল্পের বিকাশে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। বিশেষ করে কক্সবাজারের পাহাড় সংরক্ষণে জেলা প্রশাসন সর্বাত্মক কাজ করে যাচ্ছেন।

জেলা প্রশাসক বলেন, ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের পর প্রশাসন ও স্থানীয় জনগণের সমন্বয়ে শক্তিশালী একটি পাহাড় সংরক্ষণ কমিটি গঠন করা হবে।

উদ্ধোধনী বক্তব্যে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, কক্সবাজারে শুধু সাধারণ জনগণ পাহাড় কাটছে তা নয়, উন্নয়নের নামে কিংবা সরকারের দোহাই দিয়ে অপরিকল্পিত কিছু প্রকল্পের জন্যও পাহাড় কাটা হচ্ছে। আর এসব পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে পরিবেশবাদীদের বিরুদ্ধে উল্টো মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। তাই পাহাড় সংরক্ষণে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের আরো বেশি দায়িত্বশীল হওয়া প্রয়োজন।

সভাপতির বক্তব্যে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান লে.কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমদ বলেন, কক্সবাজারকে পরিকল্পিত এবং পরিবেশবান্ধব পর্যটন নগরী হিসাবে গড়ে তুলতে উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কাজ শুরু করেছে। এ জন্য প্রশাসনের পাশাপাশি স্থানীয় জনগণের আন্তরিক সহযোগিতা প্রয়োজন।

সেমিনারে বক্তব্য রাখেন, কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আশরাফুল আফসার, কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির, সহকারী পুলিশ সুপার সাইকুল আহমেদ, পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাইফুল আশ্রাব, কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সভাপতি মাহবুবুর রহমান, সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজারের সভাপতি মুহম্মদ নুরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি মমতাজ উদ্দিন বাহারী, কক্সবাজার জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মোহাম্মদ শাহজাহান, ডেইলি স্টারের কক্সবাজারস্থ স্টাফ রিপোর্টার মুহাম্মদ আলী জিন্নাত, কক্সবাজার সিভিল সোসাইটিজ ফোরামের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী কানন পাল, সিনিয়র আইনজীবী রমিজ আহমদ, সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজারের সাধারণ সম্পাদক হাসানুর রশিদ, দৈনিক সৈকতের নির্বাহী সম্পাদক আনছার হোসেন, সমাজ সেবক ও সংগঠক নাজিম উদ্দিন, ইয়েস কক্সবাজারের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হাসান, প্রধান নির্বাহী ইব্রাহিম খলিল মামুন, কোস্ট ট্রাস্টের সহকারী পরিচালক মকবুল আহমেদ, বেলা’র কো-অর্ডিনেটর মামুন, দুদকের পিপি এড. আব্দুর রহিম, দৈনিক সকালের নির্বাহী সম্পাদক মুহসীন শেখ ও বার্তা সম্পাদক রাশেদুল মজিদ,পর্যটন কর্মকর্তা (অব.) প্রবীর কুমার বড়–য়া, ছায়ানীড় এর সাধারণ সম্পাদক কল্লোল চৌধুরী ও ইয়েস কক্সবাজারের ট্রেজারার দীপন বিশ্বাস প্রমুখ।

সেমিনারে কক্সবাজারের পাহাড় সংরক্ষণে করণীয় নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কক্সবাজার গ্লামার স্কুলের অধ্যক্ষ নিলা রাখাইন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন