বন্যা পরিস্থিতি খাগড়াছড়ি জেলা সদরে উন্নতি হলেও দীঘিনালায় অবনতি
পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতি খাগড়াছড়ি জেলা সদরে উন্নতি হলেও মাইনী নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় দীঘিনালায় অবনতি হয়েছে। দীঘিনালায় ২৫টি গ্রামের সহস্রাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ১২টি আশ্রয় শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে আড়াইশ’ পরিবার। তলিয়ে গেছে শত শত পুকুরে মাছ। নষ্ট হয়েছে জমির ফসল। মেরুং এলাকায় সড়ক ও সেতু পানি নীচে তলিয়ে যাওয়ায় দীঘিনালার সাথে রাঙামাটির লংগদু সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছন্ন রয়েছে।
গত ৫ দিনের টানা বর্ষণে খাগড়াছড়ি জেলা সদরের গঞ্জপাড়া, মুসলিম পাড়া, বাঙ্গালকাঠি, শান্তিনগর পেরাছড়া, কালাডেবা, বটতলী ও ইসলামপুর প্লাবিত হয়ে কয়েক হাজার পরিবার পানি বন্দী হয়ে পড়ে। তাদের মধ্যে ৬শতাধিক লোক ১০টি আশ্রয় কেন্দ্রে ঠাঁই নেয়। কিন্তু বুধবার বিকাল চেঙ্গী নদীর পানি কমতে শুরু করায় কিছু কিছু পরিবার বাড়ী-ঘরে ফিরে গেছে।
জেলা সদরের মুসলিম পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, গোলাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ, শিশু সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ১০টি আশ্রয় কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম। এসময় পানিবন্দি পরিবারের খোঁজ খবর নেন। তুলে দেন শুকনা খাবারের পাশাপাশি খিচুড়ি। এছাড়া দুর্গত এলাকায় সেনাবাহিনী, জেলা পরিষদ ও পৌরসভা রান্না করা খাবার বিতরণ অব্যাহত রেখেছে।
একইসাথে খাগড়াছড়ি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে প্লাবিত হওয়া এলাকার লোকজনদের বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে ট্যাবলেট ও পানির জার দেয়া হয়েছে।
এদিকে, টানা বর্ষণে নতুন করে প্লাবিত হয়েছে দীঘিনালা উপজেলার ২৫ টি গ্রাম। ২ শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলার পাঁচ ইউনিয়নের পানিবন্দি পরিবারগুলো ১২টি আশ্রয় কেন্দ্রে আড়াইশ পরিবার আশ্রয় নিয়েছে।
দীঘিনালা-মেরুং সড়কের বড় মেরুং এলাকার সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় দীঘিনালা-রাঙ্গামাটির লংগদু উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
খাগড়াছড়ি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল ইসলাম জানান, পানিবন্দি এলাকার লোকজনদের নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন নিশ্চিত করতে জেলায় ৪৫ হাজার ট্যাবলেট সরবরাহ করা হয়েছে। এরমধ্যে জেলা শহরের সবকটি আশ্রয় কেন্দ্র ও প্লাবিত এলাকায় প্রায় ৪ হাজার ট্যাবলেট দেয়া হয়েছে, একইসাথে প্রয়োজন অনুসারে স্যানিটেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম জানান, যে কোন ধরণের দূর্যোগ মোকাবেলায় প্রস্তুত রয়েছে জেলা প্রশাসন। পানিবন্দি মানুষদের সাহায্যর্থে খাবারের পাশাপাশি ৫০ মেট্রিক টন চাউল বিতরণ করা হয়েছে।
এছাড়াও দীঘিনালার বাবুছড়ায় পাহাড় ধসে নিহতের পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।