বাংলাদেশের অন্যতম আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র ‘লেক ভিউ আইল্যান্ড’
নিজস্ব প্রতিনিধি:
বাংলাদেশের কাপ্তাইয়ে পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিপরীত পাশে আছে লেক। আর লেকের পানির মাঝেখানে গড়ে তোলা হয়েছে একটি পর্যটন স্পট। যার নাম ‘লেক ভিউ আইল্যান্ড’।
এ দ্বীপটিতে এমন কিছু নেই যা পাওয়া যায় না।দ্বীপটিতে রয়েছে বজরায় রাত্রি যাপন, এসি কেবিন, হিলটপে সুইমিং পুল, কিডস জোন ও মাছ ধরার সুযোগ।
শহরের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বেডরুমের মতোই গাছ-গাছালি ঘেরা দ্বীপের মনোরম পরিবেশ। সব থেকে মজার ব্যাপার হলো রাত্রিযাপন এর জন্য রয়েছে পানিতে ভাসমান ‘পানকৌড়ি’ নামক বিশেষ এক বজরা।বজরার ছাদের ওপর বসেও লেক ও প্রকৃতির সৌন্দর্য্য উপভোগের ব্যবস্থা রয়েছে।
জানা গেছে, গত বছরের ৪ অক্টোবর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে থাকা কাপ্তাইয়ে ‘লেক ভিউ আইল্যান্ড’ নামের এই পর্যটন স্পটের দ্বীপটি উদ্বোধন করা হয়।
বাচ্চাদের নিয়ে কেউ এই দ্বীপে ভ্রমণে এলে তাদের জন্য রয়েছে ‘কেনুইং’ নামের কিডস জোন, যেখানে বাচ্চাদের উপযোগী বিভিন্ন রাইড থাকছে। অন্য এক পাহাড় চূড়ায় দুটি গাছের মধ্যে তৈরি করা হয়েছে ঝুলন্ত সেতু।
দ্বীপে এসে লেকের পানিতে সাঁতার কাটা বিপজ্জনক। তাই ‘লেক ভিউ আইল্যান্ডের’ বিপরীত পাশে ‘হিলটপ’ নামের একটি পাহাড়ে গড়ে তোলা হয়েছে সুইমিং পুল। ওপরে সুইমিং পুল আর নিচে লেক, দেখতে অসাধারণ মনে হবে যে কারোর।লেকের পানিতে বড়শি দিয়ে যদি কেউ শখের বশে মাছ ধরতে চান, তাদের জন্য সেই ব্যবস্থাও রয়েছে। তবে এজন্য প্রতি ঘণ্টায় গুণতে হবে ৫০০ টাকা।
হিলটপের পাদদেশেই রয়েছে কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বাঁধ ও স্পিলওয়ে। এত কাছে এসে যদি কেউ স্পিলওয়ে ও বাঁধ না দেখে যান, তাহলে মনের অতৃপ্তি রয়ে যেতেই পারে। তাই হিলটপ থেকে নেমে বর্ডার গার্ডের সদস্যদের অনুমোদন নিয়ে সহজেই বাঁধ আর স্পিলওয়ে দেখতে যেতে পারেন। গেলেই দেখা যাবে, কীভাবে লেকের পানি স্পিলওয়ের মাধ্যমে পানি কর্ণফুলীতে গিয়ে পড়ছে।
এতসব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করার মাঝে খাবার নিয়ে কোনো দুশ্চিন্তা করতে হবে না। লেকের চাপিলা, কেচকি ও রুই মাছের পাশাপাশি দেশি মুরগিসহ পর্যটকদের চাহিদা অনুযায়ী যেকোনো খাবার সরবরাহ করে থাকেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। নিজের পছন্দসই খাবার ছাড়াও রয়েছে তাদের নির্ধারিত সেট মেনুর মূল্যতালিকা।
আইল্যান্ড পরিচালনায় নিয়োজিত সেনাসদস্য লিয়াকত আলী বলেন, ‘গত বছরের ৪ অক্টোবর উদ্বোধনের পর থেকে অনেক পর্যটক আসেন এখানে। তবে ছুটির দিনগুলোতে অনেক বেশি মানুষ আসেন। কেউ রাত্রিযাপন করেন আবার কেউবা দিনে এসে দিনে চলে যান। পর্যটকদের আমরা আমাদের নিজেদের বোটে করে জেটিঘাট থেকে নিয়ে আসি। আবার যাওয়ার সময় দিয়ে আসি। এখানে কেউ চাইলে পিকনিকও করতে পারবেন।
ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম শহর হয়ে যেকোনো গাড়িতে কাপ্তাই জেটিঘাট পর্যন্ত যাওয়া যায়। আর এই আইল্যান্ডে প্রবেশের মূল্য রাখা হয়েছে ১৫০ টাকা।