বাঘাইছড়িতে আঞ্চলিক সন্ত্রাসীদের ত্রিমুখী বন্ধুকযুদ্ধে জেএসএস কর্মী নিহত

নিজস্ব প্রতিনিধি:
রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে সশস্ত্র তিন আঞ্চলিক সংগঠন জেএসএস (সংস্কার), ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) এবং ইউপিডিএফ (প্রসীত গ্রুপ)-এর সন্ত্রাসীদের মধ্যে ২ ঘন্টাব্যাপী চলা ত্রিমুখী বন্দুকযুদ্ধে বন কুসুম চাকমা (৩০) নামে এক জেএসএস (সংস্কার) কর্মী নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় ইউপিডিএফ (প্রসীত গ্রুপ)-এর ২ সন্ত্রাসী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুলাই) বিকেল ৩টার সময় বাঘাইছড়ির রূপকারি ইউনিয়নের দাঙ্গাছড়া, রাইন্নাছড়া ও বেতাগীছড়া এলাকায় সংস্কারপন্থী জেএসএস ও গণতান্ত্রিক ইউপিডিএফ-এর সঙ্গে ইউপিডিএফ (প্রসীত গ্রুপ)’র সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা বন্দুক যুদ্ধে লিপ্ত হয়।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, প্রায় দুই ঘন্টাব্যাপী চলা এই বন্দুকযুদ্ধে অন্তত ৪’শ রাউন্ড গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে। এতে দাঙ্গাছড়া এলাকায় জেএসএস (এমএন-লারমা) গ্রুপের বন কুসুম চাকমা প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসীদের গুলিতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়।

নিহত বন কুসুম বাঘাইছড়ির বালুখালী এলাকার বাসিন্দা। সে এমএন লারমা সমর্থিত পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি জেএসএস এর সদস্য বলে নিশ্চিত করেছেন দলটির একাধিক নেতা।

অপরদিকে ত্রিমুখী এই বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় ইউপিডিএফ (প্রসীত গ্রুপ)’র ২ জন সন্ত্রাসী গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেলেও তাদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

এদিকে জেএসএস সংস্কারের এক নেতা পার্বত্যনিউজকে বলেন, ইউপিডিএফ রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলা নির্বাচনে জয়লাভে ব্যর্থ হয়ে প্রতিশোধ নিতে আমাদের উপর অতর্কিতে হামলা চালিয়েছে। এটা জনরায়কে মেনে না নেয়ার ইউপিডিএফের ফ্যাসিবাদী চরিত্র।

বাঘাইছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ আমির হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, নিহতের লাশ উদ্ধারের ব্যাপারে পুলিশ নিরাপত্তা বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন। তবে এ ব্যাপারে থানায় কেউ কোনো অভিযোগ দায়ের করেনি বলেও তিনি জানান।

এদিকে নাম প্রকাশ নাকরার শর্তে জেএসএস (এমএন-লারমা)-এর একাধিক নেতা বন কুসুম চাকমাকে নিজেদের একজন কর্মী দাবি করে তার নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সেই সঙ্গে বনকুসুম চাকমা তাদের সংগঠনের নেতাকর্মীদের পথ প্রদর্শক হিসেবে কাজ করতো বলেও জানিয়েছেন।

এই ঘটনার পর থেকে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন সময় আরও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে বাঘাইহাট জোনের সেনা সদস্যরা ছুটে গেলে সশস্ত্র গ্রুপগুলো পালিয়ে যায়।
এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বাঘাইছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমির হোসাইন জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে রওনা করেছে। ঘটনাস্থল থেকে ফিরে বিস্তারিত জানানো হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন