Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

বাঘাইছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান বড়ঋষি চাকমা গ্রেফতার

%e0%a6%ac%e0%a7%9c-%e0%a6%8b%e0%a6%b7%e0%a6%bf-%e0%a6%9a%e0%a6%be%e0%a6%95%e0%a6%ae%e0%a6%be

নিজস্ব প্রতিবেদক:

একাধিক হত্যা মামলার আসামী রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান বড় ঋষি চাকমাসহ পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এর চার নেতাকে জেল হাজতে পাঠিয়েছে আদালত। মঙ্গলবার রাঙামাটি জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট রোকন উদ্দিন কবির এর আদালতে বাঘাইছড়ি থানায় দায়ের করা অবসর প্রাপ্ত সার্জেন্ট মুকুল চাকমা হত্যা মামলায় আত্মসমর্পন করে জামিন চাইলে আদালত জামিন না মঞ্জুর করে আসামীদের জেল হাজতে প্রেরণ করে।

বাকি আসামীরা হলেন উপজাতীয় আঞ্চলিক সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) বাঘাইছড়ি উপজেলা শাখার সভাপতি প্রভাত কুমার চাকমা, সাংগঠনিক সম্পাদক ত্রিদিপ কুমার চাকমা (প্রকাশ দীপ) এবং সার্বাতলী ইউপি মেম্বার অজয় চাকমা।

উল্লেখ্য গত ৩০ মে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট মুকুল চাকমা অপহৃত হয়। তার বাড়ি রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ির মারিস্যায়। সাবেক সেনা সার্জেন্ট হওয়ার কারণে স্থানীয় জেএসএস’র তার প্রতি অভিযোগ ছিলো, ‘তিনি সেনাবাহিনীর পক্ষে কাজ করেন। সেনাবাহিনীকে বিভিন্ন তথ্য প্রদান করেন’।

গত ২৩ জুন সরেজমিন পরিদর্শনে মুকুল কান্তির মেয়ে নমিসা চাকমার সাথে কথা বলেছিলেন পার্বত্যনিউজের প্রতিনিধিসহ ঢাকা থেকে যাওয়া একটি সাংবাদিক টিম। নমিসা চাকমা মিডিয়া টিমকে বলেন, ‘জেএসএস’র লোকজন বাবাকে সন্দেহ করতো। তারা ভাবতো তাদের অপকর্মের সব তথ্য বাবা সেনাবাহিনীকে দিয়ে দেয়।’ আর একারণেই গত ৬ মে বাড়ির কাছেই বসেই মুকুল কান্তিকে মারধর করে স্থানীয় জেএসএস নেতা বিস্তার চাকমা। এই ঘটনার পর মুকুলবাড়ি ছেড়ে খাগড়াছড়ি গিয়ে থাকতেন।

risi-chakma-rangamati-bagha-copy

মুকুল কান্তির স্ত্রী সাধনা চাকমা মিডিয়া টিমকে বলেন, গত ৩০ মে বিকেলে মোবাইলে ফোন করে তার স্বামীকে ডেকে নেয় প্রভাত কুমার চাকমা ওরফে কাকলি বাবু। সে জেএসএস উপজেলা কমিটির সভাপতি বলে জানান সাধনা। তিনি বলেন, ৬ মেযে মারধর করা হয়েছিলো তার একটি মিট মিমাংসার কথা বলে তার স্বামীকে ডাকা হয়। তাকে ডেকে উগছড়ির লাইল্যেঘোনার বক্কা চাকমার দোকানে নেয়া হয়। সেখান থেকে মুকুল একবার তার স্ত্রীকে ফোন করে বলেন, সেখানে প্রভাত চাকমা, আবিস্কার চাকমা, ত্রিদিব চাকমা এবং বিস্তার চাকমা আছে। তাদের সাথে তিনি কথা বলছেন।

৩০ মে রাত সাড়ে ৮ টার দিকে এই কথা হয়। ফিরতে দেরী হওয়ায় সাধনা রাত ৯ টার দিকে আবারো তার স্বামীকে ফোন দেন। কিন্তু এবার মোবাইলটি বন্ধ পাওয়া যায়। রাতে আরো কয়েকবার ফোন দিয়েছেন, কিন্তু মোবাইল বন্ধ। সেই থেকেই নিখোঁজ মুকুল। তিন/চারদিন পরে একবার ফোনটি খোলা পাওয়া গিয়েছিলো, কেউ ফোন ধরেনি। তারপর থেকে আর কোন সংযোগ মেলেনি। এদিকে, ঘটনার পর বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়। থানা পুলিশ মামলা নিতে গড়িমসি করতে থাকে।

নমিসা চাকমা বলেন, ওসি সরাসরি বলে দেন, ‘ওরা হলো সম্রাট। ওদের সাথে পারবা না। ওদের সাথে ঝামেলা করো না। মামলা করো না। মামলা করার যখন সময় হবে তখন বলবো।’ থানায় গেলে এই বলে প্রতিবারই বিদায় করে দেয়া হয় সাধনা চাকমা এবং তার মেয়েকে। শেষ পর্যন্ত এই পরিবার ২০ জুন একটি সাধারণ ডায়েরী করতে সক্ষম হন। এরপরও তারা অসংখ্যা বার মামলা করতে গেলে পুলিশ তাদেরকে নানা কথা বলে বিদায় করে দেয়। সাধারণ ডায়েরী করার পরে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরকেও হুমকী দেয়া হয়।৪/৫ জন মুখোশধারী লোক তাদের বাড়িতে গিয়ে হুমকি দিয়ে আসে। এরপর পরিবারের সদস্যরা অন্যত্র গিয়ে আশ্রয় নেন।

নাসিরাবাদ মহিলা কলেজের অনার্সের ছাত্রী নমিসা চাকমা গত ২৩ জুন মিডিয়া টিমকে আরো বলেন, তার মা এবং তারা দুই বোন এখন আর বাড়িতে যেতে পারছেন না। তাদের কোনই নিরাপত্তা নেই। এদিকে, গত ৩ জুুলাই বিকেলেও সার্জেন্ট মুকুলের পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় এই ঘটনায় পুলিশ মামলা নেয় নি। তবে ১ মাস পর পুলিশ নমিসা চাকমার দায়ের করা পুরাতন মামলা এজহার হিসাবে গ্রহণ করে পূর্বের তারিখে।

মুকুল কান্তি চাকমার মেয়ে নমিসা চাকমা বাদি হয়ে দায়ের করা এই মামলার তারিখ ৪/৭/২০১৬। মামলার নং- জি আর ২৩৭/১৬। মামলায় বড়ঋষি চাকমাসহ ৮ জনকে আসামী করা হয় যার ১ নম্বর আসামী ছিলেন বড় ঋষি চাকমা। উচ্চ আদালত থেকে অন্তবর্তী জামিনে ছিলেন তিনি। জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় মঙ্গলবার রাঙামাটির সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রোকন উদ্দীন কবিরের আদালতে আত্মসমর্পন করেন বড় ঋষি চাকমাসহ ৪ জন।  আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর না করে ৪ জনকেই জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।

এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে বড়ঋষি চাকমার নামে আরো একটি হত্যা রয়েছে খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা থানায়। এই মামলাটি একটি হত্যা মামলা। যার নাম্বর হলো-৫, তারিখ ২০/০৯/২০১২ । ধারা-৩০২/৩৪ জিআর ২৮৩/২০১২।

দীঘিনালা উপজেলার ইউপিডিএফ এর তৎকালীন সমন্বয়ক কিশোর চাকমা বাদী হয়ে মোট ১১জনকে আসামী করে এই হত্যা মামলাটি দায়ের করেছিলেন।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: চাকমা, জেএসএস, বড় ঋষি চাকমা
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন