বিদায় বাংলাদেশ, ফাইনালে তাজিকিস্তানের মুখোমুখি ফিলিস্তিন

কক্সবাজার প্রতিনিধি:

সেমিফাইনাল পর্বে ফিলিস্তিনের বিপক্ষে ২-০ গোলে হেরে বাদ পড়লো বাংলাদেশ। বাংলাদেশকে হাড়িয়ে ফাইনালে তাজিকিস্তানের মুখোমুখি হবে ফিলিস্তিন। শুক্রবার বঙ্গবন্ধ জাতীয় স্টেডিয়ামে  প্রতিযোগিতার পঞ্চম আসরের শিরোপা লড়াইয়ের এ খেলা অনুষ্ঠিত হবে।

পর্যটন নগরী কক্সবাজারে  বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়ামে সেমিফাইনালে  ১০ অক্টোবর বুধবার দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ২-০ গোলে হেরে ২০১৫ সালের পর বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের ফাইনালে ওঠার স্বপ্ন গুঁড়িয়ে গেছে জেমি ডে ও জামাল ভূইয়া বাহিনীর। গতবার বাহরাইনের অনূর্ধ্ব-২৩ দলের কাছে হেরে সেরা চার থেকে বিদায় নিয়েছিল দল।

নিম্নচাপের কারণে কক্সবাজারে সারাদিন টিপটিপ বৃষ্টির কারণে মাঠ ভারী ও পিচ্ছিল হয়ে পড়ে। শুরু থেকে লম্বা পাসে খেলতে থাকা ফিলিস্তিন এগিয়ে যায় অষ্টম মিনিটেই। ডান দিক দিয়ে আক্রমণে ওঠা মুসাব বাতাতের বাড়ানো ক্রস দূরের পোস্টে থাকা মোহাম্মদ বালাহ হেড করে বলে জালে জড়িয়ে দেন। পরের মিনিটে জোনাথন গোরিল্লার কর্নারে আব্দুল্লাতিফ আলবাহাদারির হেডে বল ক্রসবারে লাগলে ব্যবধান দ্বিগুণ হয়নি।
২১তম মিনিটে বিপলু আহমেদ থেকে পাওয়া বল নাবীব নেওয়াজ জীবন বাড়ান ডি-বক্সের মধ্যে থাকা মাহবুবুর রহমান সুফিলকে উদ্দেশ্য করে। কিন্তু ফিলিস্তিনের তামের সালেহ বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে গোলরক্ষকের উদ্দেশ্যে ব্যাকপাস দিলে ভারী মাঠে তা আটকে যায়। সুফিল শট আটকে বাংলাদেশকে সমতায় ফিরতে দেননি ডিফেন্ডার মুসাব।

৩৪ তম মিনিটে দাব্বাঘ ওদেইয়ের কাছের পোস্টে নেওয়া শট ফেরান গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানা। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে সুফিলের বাড়ানো বলে জীবনের জোরালো শট বাইরের জালে লাগলে গ্যালারি ভরা স্বাগতিক সমর্থকদের হতাশা আরও বাড়ে।

৬০তম মিনিটে খালেদ সালেমের ছোট ডি বক্সের মধ্যে থেকে নেওয়া শট ফিরিয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ হতে দেননি তপু। এরপর টানা তিনটি কর্নার পায় বলের নিয়ন্ত্রণ রেখে খেলতে থাকা বাংলাদেশ, কিন্তু গোল মেলেনি। ৭০তম মিনিটে সতীর্থের লম্বা করে বাড়ানো বল নিয়ন্ত্রণে নেওয়া খালেদ একা পেয়ে যান গোলরক্ষককে, এবারও তার শট আটকে দেন রানা।

৮৮তম মিনিটে ফিলিস্তিনের বাতরান ইসলামের শট অল্পের জন্য দূরের পোস্ট দিয়ে যায়। যোগ করা সময়ে দাব্বাঘের শটও বেরিয়ে যায় দূরের পোস্টে ঘেঁষে।

শেষের বাঁশি বাজার আগ মুহূর্তে দুটি কর্নার পেলেও প্রতিপক্ষের লম্বা খেলোয়াড়দের ডিঙিয়ে হেড করতে পারেননি সবুজরা। উল্টো সতীর্থের থ্রো ইন দাব্বাঘ হেড করে নামিয়ে দেওয়ার পর নিখুঁত শটে বল জালে পৌঁছে ফিলিস্তিনের জয় নিশ্চিত করেন বদলি ফরোয়ার্ড মারাবাহ সামেহ। খেলায় ম্যান অব দ্যা ম্যাচ নির্বাচিত হয়েছে ফিলিস্তিনের ১৫ নাম্বার জার্সিধারি খেলোয়ার আবদুল লতিফ।

সাগরপাড়ে যন্ত্রণা মুছে নেয়ার ম্যাচে মিললো আরো বড় যন্ত্রণা, দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া হার। আবার ঘরের মাঠে ঘরের ছেলেদের ঠাই হলোনা প্রথম থেকে। দ্বিতীয়ার্ধের ২০ মিনিট আগে তৌহিদুল আলম সবুজকে মাঠে নামালেও দেখাতে পারেনি কোনো ম্যাজিক। শেষ পর্যন্ত হেসে খেলে ম্যাচ জিতলো ফিলিস্তিন ফুটবল দল।

গ্যালারীভর্তি ১৫ হাজার দর্শক হতাশায় বৃষ্টিভেজায় মাঠ ত্যাগ করে। স্বপ্নভঙ্গ হলেও ক্রীড়ামোদিদের দাবি-কক্সবাজারে যেন এরকম নিয়মিত আয়োজন করা হয় আন্তর্জাতিক ফুটবল উম্মাদনা। যার ফলে পর্যটন নগরীর সুনাম ও আকর্ষন বিশ্বের দরবারে আরো পরিচিতি লাভ করবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন