ব্যক্তি স্বার্থে জেলা পরিষদ ও এডিবি’র বরাদ্দ নিয়ে সমালোচনা
বসতবাড়ির স্বার্থের জন্য জেলা পরিষদ ও এডিবি দুই প্রতিষ্ঠানের বরাদ্দ নিয়ে এলাকায় সমালোচনার ঝড় বইছে। এদিকে বরাদ্দ দেওয়া হলেও অনিয়ম দূর্নীতির মাধ্যমে সম্পাদন হওয়া কাজ মাস না যেতেই বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের ১,২,৩নং ওয়ার্ডের মহিলা ইউপি সদস্য ও উপজেলা মহিলা লীগের সভানেত্রী জহুরা বেগম। তার স্বামী ফখরুল ইসলাম কালু সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। উপজেলা সদরের মসজিদঘোনা এলাকায় নিজ বাড়িতে যাওয়ার রাস্তার জন্য ইতোপূর্বে এডিবির ২লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয় উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ।
চলতি অর্থ বছরে একই প্রকল্প এলাকায় ২৬লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয় বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ। আরসিসি গাইড ওয়াল নির্মাণ কাজটি ‘‘যৌথখামার মারমা পাড়ায় যাওয়ার জন্য লতিফের বাড়ি থেকে সুরুত আলমের বাড়ি’ যাওয়ার রাস্তা উল্লেখ করা হলেও মূলত কাজটি করা হয়েছে ইউপি মেম্বার জুহুরা বেগমের বাড়ি রক্ষার স্বার্থে। এই গাইড ওয়ালটি মহিলা মেম্বারের বাড়ি রক্ষা ও পাহাড় ভাঙ্গন রোধের জন্য সরকারি বরাদ্দ অপচয় করা হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
সরেজমিনে স্থানীয়রা জানান- সম্প্রতি নতুনভাবে জেলা পরিষদের কাজ শুরু হলে ইতোপূর্বে এডিবি বরাদ্দের পিলারগুলো আত্মসাতের জন্য আওয়ামী লীগ নেতা ফখরুল ইসলাম কালু সরিয়ে নেন।
এই প্রসঙ্গে নাইক্ষ্যংছড়ি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) প্রকৌশলী তোফাজ্জল হোসেন জানান- আমার দায়িত্ব নেওয়ার পর সেখানে কোন কাজ হয়নি। অনেক আগে এডিবির বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল বলে শুনেছি। সম্প্রতি মাটি খুড়ে পিলারগুলো তুলে নেওয়া হয়েছিল।
পিলারগুলো তুলে নেওয়ার কারণে পুরনো কাজটি ঝুঁকিপূূর্ণ হয়ে পড়েছে। তবে পিলার সরিয়ে নেওয়া প্রসঙ্গে মহিলা মেম্বারের স্বামী ও সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ফখরুল ইসলাম কালু জানান- পূর্বের এডিবির কাজটি তার স্ত্রী করেছেন। তাই নতুন কাজ শুরু হওয়ার পর পিলারগুলো তিনি সরিয়ে রেখেছিলেন বলে স্বীকার করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল লতিফ জানান- জেলা পরিষদ থেকে ২৬ লক্ষ টাকার টেন্ডার দিয়ে এবছর নতুন গাইড ওয়াল নির্মাণ হওয়ার পর পুরনো গাইড ওয়াল মেম্বারের যোগসাজশে অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে। ফলে নতুন গাইড ওয়ালের মাটি সরে গিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
এদিকে বর্তমানে চলমান পার্বত্য জেলা পরিষদের কাজটিও করা হয়েছে ব্যাপক অনিয়ম দূর্নীতির মাধ্যমে। ফলে বছর না পেরুতেই কাজটির অধিকাংশ স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। রাস্তা ইটগুলোও উঠে গেছে বিভিন্নস্থানে।
উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাইফুদ্দিন মামুন শিমুলসহ মসজিদঘোনা এলাকার একাধিক প্রতিবেশী জানান- স্ত্রী মেম্বার ও স্বামী সরকারি দলের পরিচয়ে অপ্রয়োজনীয় বরাদ্দটি মূলত সরকারি টাকার অপব্যবহার করা হয়েছে। একই কাজ জনস্বার্থের চেয়ে ব্যক্তি স্বার্থে করা হয়েছে।