“লোকবল না থাকার কারণে সোনাদিয়া ও ঘটিভাঙ্গার সৃজিত বনের গাছ দিয়ে তৈরি করছে ফিশিং বোট।”

মহেশখালীতে প্রায় ২৫ হাজার বনাঞ্চল পাহারা দিচ্ছে আটজন প্রহরী

মহেশখালী গোরকঘাটা সদর বিট এর অধীনে সৃজিত বাগান

 

কক্সবাজারের উপকূলীয় দ্বীপ উপজেলা মহেশখালী সদরে চারপাশে জেগে ওঠা চর নিয়ে গোরকঘাটা সদর বিট। এই বিটের অধীনে প্রায় ৩ হাজার একর সৃজিত বাগান রয়েছে। কিন্তু এসব বনাঞ্চল পাহারা দেওয়ার জন্য দুই বছর ধরে নেই কোনো বন প্রহরী। অথচ এই বিটে চারজন বনপ্রহরী থাকার কথা। গোরকঘাটা সদর বিটের পশ্চিমে ঘটিভাঙা বিটেরও ৬ হাজার একর বনাঞ্চল পাহারা দিচ্ছেন মাত্র দুজন প্রহরী। এই বিটেও থাকার কথা চারজন।

একই দশা আরও পাঁচটি বিটের। মাত্র আটজন প্রহরী প্রায় ২৫ হাজার বনাঞ্চল পাহারা দিচ্ছেন। এই সাতটি বিট উপকূলীয় বন বিভাগের কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার গোরকঘাটা রেঞ্জের অধীনে।
ঠিকমতো পাহারা দিতে না পারায় প্রায় সময় বনদস্যুরা বনাঞ্চলের গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে।

গোরকঘাটা রেঞ্জ কার্যালয় সূত্র জানায়, এ রেঞ্জের সাতটি বিটের অধীনে সৃজিত বাগান রয়েছে প্রায় ২৫ হাজার একর। প্রস্তাবিত জনবল কাঠামো অনুযায়ী এই রেঞ্জে ১০০ জন লোকবল থাকার কথা থাকলেও আছে মাত্র ২০ জন। তার মধ্যে ২৯ জন বনপ্রহরীর মধ্যে রয়েছেন মাত্র আটজন। এর মধ্যে মাতারবাড়ীতে একজন, কালারমারছড়ার ঝাপুয়ায় একজন, বড়দিয়ায় একজন, ঘটিভাঙ্গায় দুজন, সোনাদিয়ায় দুজন ও পোকখালীতে একজন বনপ্রহরী রয়েছেন।

পোকখালী বিটের বনপ্রহরী মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘একজন লোক দিয়ে প্রায় তিন হাজার একর বনাঞ্চল দেখা কষ্টকর। তারপরও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বনাঞ্চল রক্ষা করার জন্য চেষ্টা করছি।’ একই কথা বলেন ঝাপুয়া বিট কর্মকর্তা মাহাবুবুল হক।

উপকূলীয় বন বিভাগের গোরকঘাটা রেঞ্জ কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাবিবুল হক বলেন, প্রায় ২৫ হাজার একর বনাঞ্চল পাহারা দিচ্ছেন মাত্র আটজন প্রহরী। এ কারণে বাগান পাহারা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। লোকবল নিয়োগ দেওয়ার জন্য অনেক লেখালেখি করেও কোনো কাজ হচ্ছে না।

উপকূলীয় বন বিভাগের কক্সবাজারের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, নিয়োগ বিধির জটিলতায় নতুন করে লোকবল নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে মহেশখালীসহ সারা দেশে লোকবল সংকট লেগেই আছে। শীঘ্রই নিয়োগ বিধির জটিলতা নিষ্পত্তি হওয়ার কথা। এরপর লোকবল নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে।

এদিকে লোকবল না থাকার কারণে সোনাদিয়া ও ঘটিভাঙ্গার সৃজিত বনের গাছ দিয়ে তৈরি করছে ফিশিং বোট।

বর্তমানে ঘটিভাঙ্গার ঘাটে ১০/১২টি ফিশিং ট্রলার তৈরির করতে দেখা যাচ্ছে। এসব বোটের বেশিভাগ গাছ যোগান দিচ্ছে সরকারি বনের গাছ। সোনাদিয়া ও কুতুবজুমের তাজিয়া কাটার একদল বনদস্যু এই গাছ নিধনের কাজ করছে বলে স্থানীয়রা জানান।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন