রোহিঙ্গারা উজাড় করছে বনভূমি, প্রতিদিন পুড়ছে ৫ লক্ষ কেজি কাঠ


কক্সবাজার প্রতিনিধি:
জাতীসংঘসহ বিভিন্ন মধ্যম সাড়ে ৫ লাখের কথা বললেও গত ২৫ আগস্ট থেকে এই পর্যন্ত প্রায় ৮ লাখের বেশি রোহিঙ্গা এদেশে প্রবেশ করেছে। আর এসব রোহিঙ্গারা অবস্থান করছে উখিয়া-টেকনাফের আড়াই হাজার একর বনভূমিতে। তারা বনভূমিতে বসবাসের পাশাপশি গাছ-বাঁশ কেটে তৈরী করছে ঘর-বাড়ি। আর কাট পুড়ে ব্যবহার করছে জ্বালানী কাজে। এতে উজাড় হচ্ছে উখিয়া-টেকনাফের বনাঞ্চল। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছেন এভাবে চলতে থাকলে উখিয়া টেকনাফ থেকে হারিয়ে যাবে বনভূমি। মুছে যাবে সবুজ।

বনভূমির দেওয়া তথ্যে জানা য়ায়, দৈনিক ৫ লক্ষ কেজি জ্বালানি কাঠ পুড়ছে রোহিঙ্গারা। পুরাতন রোহিঙ্গাদের জ্বালানির ব্যবস্থা থাকলেও নতুনদের সেই ব্যবস্থা নেই। এছাড়া যে আড়াই হাজার বনভূমিতে রোহিঙ্গারা অবস্থান করছে। ওখানে সামাজিক বনায়ন রয়েছে ১৫ একর। যা ইতিমধ্যে ধ্বংস হয়ে গেছে। এর ক্ষতির পরিমান আনুমানিক ১৫০ কোটি টাকা।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, রোহিঙ্গাদের ত্রাণ সামগ্রির মধ্যে জ্বালানী দেওয়া প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে। এছাড়া তাদের দ্রুত বনভূমি থেকে সরিয়ে কুতুপালং এর অস্থায়ী ক্যাম্পে নিয়ে যেতে হবে। আর পুনরায় বনায়নের ব্যবস্থা করতে হবে।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানসহ ব্যক্তিগতভাবে রোহিঙ্গাদের জন্য ত্রাণ সামগ্রি পাঠানো হচ্ছে। কিন্তু রান্না করার জন্য কোন জ্বালানী কাঠ দেওয়া হচ্ছে না। তাদের ঘরবাড়ি তৈরীর জন্য কোন গাছ-বাঁশ দেওয়া হচ্ছে না। যার ফলে এই চাহিদা পূরণ হচ্ছে বনায়ন থেকে। তাই নির্বিচারে পাহাড়ের গাছ-বাঁশ কেটে জ্বালানি কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। তৈরী করা হচ্ছে ঘরবাড়ি। এতে পরিবেশের মারাত্বক ক্ষতি হচ্ছে বলে জনান, পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সাইফুল এরশাদ। তিনি জানান, রোহিঙ্গা পাশ^বর্তী বন থেকেই জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ করছে। ফলে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে পরিবেশের উপর। এ বিষয়টি সরকার অবগত রয়েছে। আর আশা করা যাচ্ছে এটি সমাধান হবে।

এ ব্যাপারে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (দক্ষিণ) আলী কবির জনান, রোহিঙ্গারা যেভাবে বনের কাঠ উজাড় করছে এভাবে চলতে থাকলে কক্সবাজারে সবুজ আর থাকবেনা। তাই অন্যান্য ত্রানের সাথে জ্বালানী কাট দেওয়ার পরার্মশ দিচ্ছেন তিনি।

রোহিঙ্গাদের পাহাড় থেকে সরিয়ে ৩ হাজার একরের অস্থায়ী ক্যাম্প কুতুপালং এ নিয়ে আসা সম্পন্ন হলে বনভূমি রোহিঙ্গা মুক্ত হবে। এছাড়া পরিকল্পনা রয়েছে পরবর্তী বর্ষায় তা পূর্ন বনায়ন করা হবে। সেক্ষেত্রে ক্ষতি অনেকটা কাটিয়ে উঠবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন