রোহিঙ্গা ক্যাম্পেগুলোতে জঙ্গিবাদ উত্থানের আশঙ্কা

টেকনাফ প্রতিনিধি:

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে জঙ্গিবাদ উৎপত্তি হবার আশঙ্কা করেছেন টেকনাফ কমিউনিটি পুলিশিংয়ের নেতৃবৃন্দ।

শনিবার (২৮ অক্টোবর) বেলা ১১টায় টেকনাফ মডেল থানা চত্বরে কমিউনিটি পুলিশিং ডে উদযাপনে অনুষ্ঠানে বক্তারা আরো বলেন, রোহিঙ্গারা ক্ষুধার্ত, বেপরোয়া, আশ্রয়ের খোঁজে থাকা রোহিঙ্গাদের এক্ষেত্রে ব্যবহারের ঝুঁকি রয়েছে। সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কগুলোর চোখ পড়তে পারে তাই তাদের দিকে নজর রাখা একান্ত প্রয়োজন। আশ্রয় শিবিরগুলো জঙ্গি বা উগ্রপন্থি গ্রুপগুলোর জন্য এক উর্বর ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। এই ঝুঁকি সামলাতে রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে ব্যাপক নজরদারি বাড়ানোর জন্য দাবি জানানো হয়েছে।

রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট পুরো এশিয়ায় ভূ-রাজনৈতিক ঝুঁকি বৃদ্ধি করছে। বিশেষ করে, উখিয়া-টেকনাফে ইতিমধ্যে সন্ত্রাস ও সামাজিকভাবে অস্থিরতা শুরু হয়েছে। এরপরও যদি আরো রোহিঙ্গা প্রবেশ অব্যাহত থাকে লজিস্টিক্যাল সমস্যা ও নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্ক আরো গভীর হবে।

ফলে জেলার আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা রক্ষা অসম্ভব হয়ে পড়বে। এমনিতেই রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অনেকে ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। রোহিঙ্গাদের যাতে কেউ ব্যবহার করতে না পারে সে  বিষয়ে সবাইকে সচেতন হতে হবে।

অনুষ্ঠানের সভাপতি টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)মো: মাইন উদ্দিন খান পুলিশ জনতা, জনতাই পুলিশ উল্লেখ করে বলেন, সরকার রোহিঙ্গাদের মানবিক চিন্তা করে ঘরহারা মানুষদের আশ্রয় দিয়েছেন। সরকার একার পক্ষে রোহিঙ্গাদের সামাল দেওয়া সম্ভব না, ফলে স্থানীয়দের পুলিশের ভুমিকা পালন করতে হবে। যাতে কোন রোহিঙ্গাদের মাদকসহ অপরাধ জড়িত কোন কাজে ব্যবহার করতে না সে বিষয়ে সকলের সজাগ থাকতে হবে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে জঙ্গিবাদ ও মাদক ব্যবসা নির্মূলের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন পুলিশ। ইতিমধ্যে রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করে বাণিজ্য করার অভিযোগে ৪’শ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রায় ৩’শ জনের বেশি মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারীকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ‘টেকনাফ’ এক সময় মানব পাচারের ইয়ারপোর্ট হিসেবে পরিচিত ছিল। স্থানীয়দের সহযোগিতা মানব পাচার এখন শুণ্য’র কোঠায় রয়েছে, টিক তেমনি ইয়াবা পাচার ও ব্যবসা বন্ধ করতে চাই।

এতে স্থানীয়রা সহযোগিতা না করলে পুলিশের একার পক্ষে তা সম্ভব হবে না। তাছাড়া রোহিঙ্গা শিবিরে পুলিশের নজর দারীতে রয়েছে। অনুষ্ঠানের শেষে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের উদ্দ্যোক্তা ও পুলিশ প্রধান একেএম শহিদুল হকের পক্ষে কমিউনিটি পুলিশিং উপজেলা সভাপতি নুরুল হুদা ও পুলিশের এসআই মাহির উদ্দিন খান শ্রেষ্ঠ নির্বাচিত হওয়ায় পুরুস্কার হাতে তুলে দেন থানার ওসি।

এসময় আরো বক্তব্য রাখেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাবেক সাংসদ, কমিউনিটি পুলিশিংয়ের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মো. আলী, টেকনাফ পৌরসভার মেয়র হাজী মোহাম্মদ ইসলাম, উপজেলা কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সভাপতি আলহাজ্ব নুরুল হুদা, ওসি তদন্ত শেখ আশরাফুজ্জামান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব নুরুল বশর, উপজেলা কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম, শাহপরীরদ্বীপের কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সভাপতি সোনা আলী, পৌর কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সভাপতি মোহাম্মদ আলম বাহাদুর, হোয়াইক্যংমের সভাপতি হারুন রশিদ সিকদার, সাংবাদিক জাবেদ ইকবাল চৌধুরী, ও টেকনাফ সাংবাদিক ইউনিটির সভাপতি সাইফুল ইসলাম সাইফী প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন- ওসি অপারেশন শফিউল আজম। সভা শুরুর আগে একটি র‌্যালি পৌর শহর প্রদক্ষিন করে।

সভার শেষে টেকনাফ উপজেলায় কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সভাপতি, টেকনাফ মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের আজীবন দাতা সদস্য, টেকনাফ উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নুরুল হুদাকে শ্রেষ্ঠ সভাপতি নির্বাচিত করে সম্মাননা হাতে তুলে দেন মডেল থানার ওসি। আরো একটি সম্মাননা পেয়েছেন কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সিপিও ও এসআই মাহির উদ্দীন খান।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন