রোহিঙ্গা নির্যাতনের সাথে সূ চি জড়িত: জাতিসংঘ মানবাধিকার দূত
পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:
মিয়ানমারের মানবাধিকার বিষয়ে জাতিসংঘের বিশেষ দূত দাবি করেছেন যে, রোহিঙ্গা মুসলিমদের বেছে বেছে নির্যাতন করার পেছনে স্টেট কাউন্সিলর অং সান সূ চি জড়িত থাকতে পারেন।
ব্রিটিশ সম্প্রচার ওয়েবসাইটে প্রচারিত চ্যানেল ৪ এর সাথে এক সাক্ষাতকারে জাতিসংঘের বিশেষ দূত ইয়াঙ্গি লি বলেন, গত অগাস্টে এআরএসএ’র গেরিলাদের হামলায় ১১ সেনা নিহত হওয়ার পর রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনী যে নির্মূল অভিযান চালায়, সেখানে হস্তক্ষেপ করতে ব্যর্থতার দায়ে মিয়ানমারের নেত্রীকে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের সামনে হাজির করা যায়।
তিনি আরও বলেন যে, তাকে ব্যক্তিগতভাবে জানানো হয়েছে যে মিয়ানমারে আরও গণকবর খুঁজে পাওয়া যেতে পারে। যদিও এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু বলেননি তিনি।
লি বলেন, যে অভিযানের ফলে প্রাণ বাঁচাতে সাড়ে ৬ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা প্রতিবেশী বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে, সামরিক বাহিনীর সেই অভিযানে গণহত্যার সমস্ত বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান।
অং সান সূ চির ভূমিকা সম্পর্কে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমি মনে করি তিনি হয় অস্বীকার করছেন (যা ঘটছে), অথবা সব ঘটনার ব্যাপারে তিনি অন্ধকারে রয়েছেন।” তিনি বলেন, এটা হতে পারে না যে, স্টেট কাউন্সিলরের কোন দায় নেই। তিনি বলেন, তার বিশ্বাস, এই অভিযানে জড়িত থাকা অথবা এটাকে থামানোর চেষ্টা না করার দায়ে অং সান সূ চি দোষী।
তিনি আরও বলেন, অং সান সূ চি’র কোন ধরনের ট্রাইব্যুনালের সামনে হাজির হওয়ার সম্ভাবনা খুবই সামান্য। ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্টের অংশ নয় মিয়ানমার। লি বলেন, তাছাড়া চীন জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হওয়ায় এ সম্ভাবনাও কম যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর অভিযানকে গণহত্যা ঘোষণা দেয়া হবে।
গত ডিসেম্বরে, মিয়ানমার সরকার লি’কে জানান যে, তাকে দেশে ফিরতে দেয়া হচ্ছে না এবং তার সময়কালে সব ধরনের সহযোগিতা তুলে নেয়া হচ্ছে। সরকার এবং সামরিক বাহিনী অভিযোগ করেছে যে মিয়ানমার পরিস্থিতি নিয়ে লি’র রিপোর্ট পক্ষপাতদুষ্ট।
চ্যানেল ৪-কে লি এটাও জানান যে, তিনি অনেক মৃত্যু হুমকি পেয়েছেন এবং এমনকি একটি পরিকল্পিত হত্যা পরিকল্পনার ব্যাপারেও তাকে সতর্ক করা হয়।
অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের অধীনে রয়টার্সের দুজন সাংবাদিককে বন্দী করে রাখার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে লি বলেন, রাখাইনের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে রিপোর্ট তৈরির ক্ষেত্রে সত্যের খুব কাছাকাছি চলে গিয়েছিল তারা। তিনি আরও বলেন, সামরিক বাহিনী সফলভাবে এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি করেছে যে সাধারণ মানুষরা এখন কথা বলতেই ভয় পাচ্ছে।
সূত্র: সাউথ এশিয়ান মনিটর