সম্ভবনাময় পার্বত্য চট্টগ্রাম এখনো অনেক সূচকে পিছিয়ে আছে- বীর বাহাদুর

স্টাফ রিপোর্টার:

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পার্বত্যবাসীর কল্যাণে সর্বপ্রথম অগ্রাধিকারমূলক উন্নয়ন পরিকল্পনার উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু ১৯৭৫ এর নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর সেই উদ্যোগ কার্যকর হতে অনেক সময় লেগে যায়।
পার্বত্য এলাকায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর স্বাক্ষরিত শান্তি চুক্তির ৭২টি ধারার মধ্যে ইতোমধ্যে ৪৮টি সম্পূর্ণ, ১৫টি আংশিক এবং ৯টি ধারার বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় চলমান রয়েছে এবং মোট ৫৫২টি ক্যাম্পের মধ্যে ২৩৮টি ক্যাম্প প্রত্যাহার করা হয়েছে।

রবিবার এই চুক্তির ২১ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে সকালে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

আলোচনা অনুষ্ঠানে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নূরুল আমিনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশেসিং, এমপি।

সভায় বীর বাহাদুর বলেন, সম্ভবনাময় পার্বত্য চট্টগ্রাম এখনো অনেক সূচকে পিছিয়ে আছে। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার এসে শুরুতেই পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি ফেরানোর কাজ করেন। চুক্তির প্রায় সব বিষয়ে ইতোমধ্যেই বাস্তবায়ন হয়েছেন। ভূমি বন্দোবস্তের যে সমস্যা রয়েছে সেটিও এই সরকারের ধারাবিহকতা বজায় থাকলে সমাধান হয়ে যাবে।

বীর বাহাদুর বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের উন্নয়নের ধারা বজায় থাকার জন্য বর্তমান সরকারকে আবারো ক্ষমতায় আনতে হবে। শান্তি চুক্তির সময় একটি পক্ষ বাধা প্রধান করেছিল। তারা বলেছিল এই চুক্তি হলে পার্বত্য চট্টগ্রামে নাকি পাসপোর্ট নিয়ে ঢুকতে হবে, সরকার ভারতের কাছে দেশ বিক্রি করে দিচ্ছে। এসব ভূল প্রচারণ চালিয়ে কালো পতাকা মিছিলও করেছে। তাদের এসব কথা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিক প্রচেষ্টায় এই চুক্তি করা সম্ভব হয়েছে। আস্থা থাকলে যেকোনো অশান্ত পরিবেশ শান্ত করা সম্ভব। তিনি তা প্রমাণ করেছেন। পাবর্ত্য চট্টগ্রাম এখন শান্তির যায়গা।

এ সময় বীর বাহাদুর উশেসিং বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে উন্নয়নের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে জানানোর কথা থাকলেও তা করা হয় না। তাই এই অঞ্চলের অধিকতর উন্নয়নের জন্য, যেকোনো কাজ নিজস্ব মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা জরুরি।

পার্বত্য অঞ্চলের উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাস্তা, বিদ্যুৎ, স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল এই এলাকার মানুষ কখনো দেখেনি। চুক্তির মাধ্যমে এখন ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ। প্রতিটি উপজেলায় কলেজ, হাসপতাল হয়ে গিয়েছে। নতুন প্রজন্মের কাছে শান্তি চুক্তির শান্তি পৌঁছে দেওয়া আমাদের সবার দায়িত্ব। নিজেদের মধ্যে বিভক্তি থাকলে সামনে আগানো যাবে না। শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন হতে থাকবে, সেই সাথে নিজেদেরও চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। চুক্তির দিকে তাকিয়ে থাকলে হবে না।

আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব কাজী গোলাম রহমান, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারম্যান বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: শান্তি চুক্তি
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন