সারা বিশ্ব বাস্তচ্যুত রোহিঙ্গাদের পাশে রয়েছে: রাষ্ট্রপতি
উখিয়া প্রতিনিধি:
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, রোহিঙ্গাদের সব ধরণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেই মিয়ানমারে ফেরার ব্যবস্থা করা হবে। রবিবার(২৬ নভেম্বর) বিকেলে উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন কালে তিনি আরো বলেন, কেবল বাংলাদেশ নয়, সমগ্র বিশ্ব রোহিঙ্গাদের পাশে আছে। রোহিঙ্গারা জাতে সম্মানের সঙ্গে ফেরত যেতে পারেন এবং নিরাপত্তার সঙ্গে নিজ দেশে বসবাস করতে পারেন তা নিশ্চিত করে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে ফেরত পাঠানো হবে।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ পরিদর্শন কালে বিপন্ন রোহিঙ্গাদের সাথে কথা বলেন এবং তাদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন। এর আগে তিনি সেনাবাহিনী পরিচালিত বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধন কার্যক্রম ও মেডিকেল সেন্টার পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শন শেষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশের জন্য এই রোহিঙ্গা সমস্যা বড় ধরণের বোঝা। কিন্তু মানবিক দিক বিবেচনায় সরকার রোহিঙ্গাদেরকে আশ্রয় দিয়েছে। সাধ্যমত সাহায্য সহযোগিতা করা হচ্ছে। তিনি অপর এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যবাসনের চুক্তি হয়েছে। এখন রোহিঙ্গাদেরকে নাগরিকত্ব দিয়ে মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিতে হবে। কারণ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কঠোর চাপ রয়েছে।
রাষ্ট্রপতির রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন কালে উপস্থিত ছিলেন, দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, নৌ-বাহিনীর প্রধান, রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ের সচিব, জাতীয় সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক ও সরকারের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা গণ। এর আগে রাষ্ট্রপতিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বেলা ২টা ৫৫ মিনিটে উখিয়ার ইনানী সৈকত এলাকায় সেনাবাহিনীর হেলিপ্যাডে অবতরণ করে। বেলা ১টায় ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারটি কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়।
উখিয়ার ইনানীর হেলিপ্যাডে অবতরণের পর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। দুইদিনের সফরে (রোববার) রাষ্ট্রপতি কক্সবাজার এসেছেন। এদিকে আজ সন্ধ্যায় বাংলাদেশ নেভির আয়োজনে আইওএনস মাল্টিলাটেরাল মেরিটাইম সার্চ অ্যান্ড রিসার্চ এক্সারসাইজ (আইএমএমএসএআরইএক্স) অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ উদ্বোধন করেছেন।
এদিকে আগামীকাল সোমবার উখিয়ার ইনানী একটি তারকামানের হোটেলে আন্তর্জাতিক সমুদ্র মহড়া ও নৌ-প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসাবে এর উদ্বোধন করবেন। ওই আন্তর্জাতিক সমুদ্র মহড়ায় ৩২টি দেশ ও ৪টি পর্যবেক্ষক দেশসহ ৩৬ দেশের নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ, নৌপ্রধান, সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও মেরিটাইম বিশেষজ্ঞগণ এ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবেন। সোমবার বিকেল ৪টায় ইনানী থেকে আবারও হেলিকপ্টারযোগে ঢাকা ফিরে যাবেন তিনি।
ইন্ডিয়ান ওশান নেভাল সিম্পোজিয়াম (আইওএনএস)-এর ২৩টি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া, বাংলাদেশ, ফ্রান্স, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, কেনিয়া, মালদ্বীপ, মরিশাস, মোজাম্বিক, মিয়ানমার, ওমান, পাকিস্তান, সৌদি আরব, সিসিলিস, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা, তাঞ্জানিয়া, থাইল্যান্ড, তিমুর লেসেথ, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং যুক্তরাজ্য।
৯টি পর্যবেক্ষক দেশ হিসেবে রয়েছে চীন, জার্মানি, ইতালি, জাপান, মাদাগাস্কার, মালয়েশিয়া, নেদারল্যান্ডস, রাশিয়া এবং স্পেন। ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশসমূহের মধ্যকার মেরিটাইম সিকিউরিটি নিশ্চিতকরণ, পারস্পরিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কোন্নয়ন, সন্ত্রাস ও চোরাচালান দমনসহ বিভিন্ন পেশাগত সহযোগিতা গড়ে তোলার লক্ষ্যে ২০০৮ সালে ইন্ডিয়ান ওশান নেভাল সিম্পোজিয়াম (আইওএনএস) প্রতিষ্ঠিত হয়।