সীমান্ত সড়ক বিচ্ছিন্ন: লক্ষাধিক  মানুষের যোগাযোগ বন্ধ এক সপ্তাহ

fec-image

কক্সবাজারের রামু উপজেলার কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের গর্জনিয়া বাজার-বালুবাসা-ডাক্তারকাটা-নাইক্ষ্যংছড়ির ফুলতলী সীমান্ত সড়কটি পাহাড়ি ঢলে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এ মাসের শুরু থেকে বৃষ্টিময় পাহাড়ি ঢল সড়কটির সূইচ গেইট এলাকায় ভেঙ্গে গেলে এ অবস্থার সৃষ্টি করে।

বিশেষ করে ছোটজাংছড়ি খালের এ অংশে পরিত্যক্ত সূইচ গেইটের দরজা বন্ধ থাকায় এ খালে গতি পরির্বতন হয়। অর্থাৎ খালের মাঝখানে নির্মিত ৮টি দরজা সমেত সুইচ গেইটটির দরজা খোলা থাকলে পানি স্বাভাবিক চলাচল করতে পারতো। এখন দরজা গুলো বন্ধ। অব্যবহৃত-পরিত্যক্ত। সুতারাং পানি খাল দিয়ে যেতে না পেরে গ্রামের উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় এ পরিস্থিত সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান ভুক্তভোগিরা।

তারা বলেন, এ গ্রামের ৩ শত বছরের সড়কটি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় শুধু অবহেলার কারণে। ফলে এ সড়কে চলাচলকারী অর্ধলক্ষাধিক মানুষের দূর্ভোগ ও ক্ষোভ দিনদিন বাড়ছে সংশ্লিষ্টদের উপর।
স্থানীয় কৃষক শব্বির আহমদ জানান, সড়কটি দিয়ে শুধু কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের ১০ গ্রামের মানুষ চলাচল করে তা নয়। এর বাইরেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ লোকজনের চলাচল রয়েছে নিয়মিত। বিশেষ করে বাংলাদেশ-মিয়ানমার ফুলতলী, বামহাতিছড়া-লম্বাশিয়া-ভালুকখাইয়া সীমান্ত পয়েন্ট গুলোর যাতায়াত এ সড়ক দিয়েই করতে হয়।

এ ছাড়া হাজার হাজার একর কৃষি জমির চাষ, পাহাড়ি বনজ সম্পদ বেচা-বিক্রি-পরিবহন, স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সবজির বাজারজাতকরণ, স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম এ সড়কটি এখন বিচ্ছিন্ন। বিশেষ করে লোকজনের যাতায়াত ও রোগিদের হাসপাতালে নেয়ার বিষয়টি এখন অমানবিক।

স্থানীয় গ্রামের বাসিন্দা মালেকুজ্জামান, শতবর্ষী বৃদ্ধ কালাম বক্স পঁচাত্তরোর্ধ আবদুল আজিজ প্রমূখ এ জানান, তাদের দাদা, পরদারা সকলে এ সড়কের যাত্রী। মিয়ানমার সীমাান্তে বিজিবি’র সদস্যরা যায় এ রাস্তা দিয়ে। সকলে যায়। কিন্তু তাদের এ সড়কে কাটা হয় পরিত্যক্ত সুইচ গেইট। এটি ছোটজাংছড়ি খালের মাঝখানে র্নির্মিত। পানি যাওয়ার কোন ব্যবস্থা নেই। শুষ্ক মৌসূমে গেইটের পাশে ভেঙ্গে যাওয়া অংশ বাঁধ দেয়া হয় জিও ব্যাগ দিয়ে। কিন্তু অপরিকল্পিতভাবে বসানো এ ব্যাগ বর্ষা মৌসূমের শুরুতেই নড়বড়ে হয়ে এক পর্যায়ে ছিড়ে যায়। কেননা একদিকে সুইচ গেইটের দরজা বন্ধ অপর দিকে জিও ব্যাগ দিয়ে বাঁধ। যেন ঢলের পানি বন্ধ করার জন্যে কল বসানো হয়। যা এলাকাবাসীর গলা কাটায় পরিনত হয় এক পর্যায়ে। শেষাবধি গত সপ্তাহ দেড়েকের টানা বৃষ্টিতে জিও ব্যাগ গুলো ভেসে গিয়ে পাশের গ্রামের ভাঙ্গন শুরু হয়। যাতে করে পাহাড়ি ঢলের প্রথম ধাক্কাতেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে বালুবাসার এ সড়কটি।

এ বিষয়ে রামু উপজেলা নির্বার্হী অফিসার প্রনয় চাকমা  জানান,বিষয়টি সবে মাত্র তিনি শুনলেন। রোববার উপজেলায় মিটিং আছে। সোমবার তিনি এলজিইডি’র উপজেলা প্রকৌশলীকে সাথে নিয়ে বালুবাসার এ ভাঙ্গন দেখেই ব্যবস্থা নেবেন। যেন এলাকার মানুষ কষ্ট না পান।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: নাইক্ষ্যংছড়ি, সীমান্ত সড়ক
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন