Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

আলীকদমে এক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে জেলা পরিষদের নির্দেশ অমান্য করার অভিযোগ

01_760696

আলীকদম প্রতিনিধি :
পার্বত্য জেলা পরিষদ, জেলা ও উপজেলা শিক্ষা অফিসারের নির্দেশ অমান্য করেও বহাল তবিয়তে রয়েছেন বহুলালোচিত প্রধান শিক্ষিকা। উল্টো কথিত ‘বদলি আদেশ’ ঠেকাতে বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের রাস্তায় নামিয়ে নিজের পক্ষে ‘মানববন্ধন’ও করিয়েছেন তিনি। একাজে একাট্টা হয়েছেন অন্যান্য সহকারি শিক্ষকরাও। অথচ সাম্প্রতিক আলীকদমের আলোচিত এ ঘটনা নিয়ে ‘রহস্যজনক নীরতবতা’ পালন করছেন পার্বত্য জেলা পরিষদ ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ। কোন অদৃশ্য খুুঁটির জোরে কর্তৃপক্ষ ঠুঁটু জগন্নাথের ভূমিকায় রয়েছে তা নিয়ে সচেতন মহলে প্রশ্ন উঠেছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত ২১-২৩ ফেব্রুয়ারি বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের (পাজেপ) আয়োজনে ক্ষুদ্র নৃ-জনগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটে ‘বইমেলা’র আয়োজন করা হয়। সেখানে আমন্ত্রিত ছিলেন আলীকদম উপজেলার চম্পট পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক ও কবি জয়নব আরা বেগম। ২১ ফেব্রুয়ারি তাঁর কবিতার বই ‘সমর্পিত শব্দাবলী’র মোড়ক উন্মোচন করেন পাজেপ চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা। বইমেলার আহ্বায়ক চিংইয়ং ম্রো’র পরামর্শে ওইদিন সহকারি শিক্ষক জয়নবের ২ দিন (২২ ও ২৩ ফেব্রুয়ারি) ছুটি মঞ্জুরির নির্দেশ দেন পাজেপ চেয়ারম্যান।

এদিকে, পাজেপ চেয়ারম্যানের নির্দেশের দু’দিন ছুটি মঞ্জুরির আদেশ পালনে গড়িমসি শুরু করেন সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা হুমায়রা। এ ছুটি নামঞ্জুর করতে প্রধান শিক্ষিকার সাথে গাঁটছড়া বাধেন এসএমসি সভাপতি নুরুল আলমও।

এ দু’দিন ছুটি নিয়ে সংশ্লিষ্ট সহকারি শিক্ষিকাকে প্রধান শিক্ষিকা দম্ভের সাথে বলেন, ‘পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছুটির কথা বললে তার কাছ থেকে চিঠি নিয়ে আসো। চেয়ারম্যানের মৌখিক নির্দেশ আমি শুনতে বাধ্য নই। আমি এই ছুটি মঞ্জুরও করবো না’। এ দম্ভোক্তিকে মেনে নিয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার জানান, ‘জেলা পরিষদ ছুটি মঞ্জুর করলেও যখন প্রধান শিক্ষিকা মানছেন না, আমার করার কিছু নেই। জেলা পরিষদে গিয়ে ছুটি মঞ্জুর সংক্রান্ত চিঠি নিয়ে আসুন’। এ প্রতিবেদককেও তাঁর অসহায়ত্বের কথা জানান খোদ উপজেলা শিক্ষা অফিসার বাসুদেব কুমার সানা।

এদিকে, গত ২০ মার্চ সংশ্লিষ্ট সহকারি শিক্ষিকা এ ঘটনার বিষয়ে পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বরাবর একটি আবেদন করেন। ওইদিন পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুল আফসার, জেলা পরিষদ সদস্য লক্ষ্মীপদ দাশ ও চিংইয়ং ম্রো’র উপস্থিতিতে ওই প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আলোচনা হয়।

২১ মার্চ অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষিকা হুমায়রা, এসএমসি সভাপতি নুরুল আলম, সহকারি শিক্ষিকা জাহানারা পারভীন লাকী ও জেসমিন আক্তারের ইন্ধনে বিদ্যালয় চলাকালীন সকাল সাড়ে দশটার দিকে ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাসরুম থেকে বের করে পানবাজারস্থ রাস্তায় নিয়ে আসা হয়। এ সময় প্রধান শিক্ষিকা হুমায়রার কথিত বদলী আদেশের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের দিয়ে নোংরা শ্লোগান এবং হাতে প্লেকার্ড তুলে দেওয়া হয়। এ সময় বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা শিক্ষা অফিসার ব্যক্তিস্বার্থে এ ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে প্রধান শিক্ষিকাকে নিষেধ করেন। কিন্তু নিষেধ মানা হয়নি। পরেরদিনও একইভাবে ছাত্র-ছাত্রীদের রাস্তায় নামানো হয়। এ ঘটনা নিয়ে এ দু’শিক্ষিকাসহ ডিপিএড-এ অবস্থারত শিক্ষিকা ডানা ফেসবুকে উস্কানীমূলক স্ট্যাটাস দিয়ে পরিস্থিতিকে আরো সংকটময় করে তুলেন। এ ঘটনার বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসারকেও রহস্যজনক নীরবতা পালন করতে দেখা যায়।

কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অমান্য করে কেন মানববন্ধন এই বিষয়ে প্রধান শিক্ষিকা হুমায়রা সাংবাদিকদের বলেন,  ‘আমার বদলী আদেশ মানতে না পেরে সহকারি শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী ও কমিটির লোকেরা মানববন্ধন করেছে। বিদ্যালয় চলাকালীন কেন ছাত্র-ছাত্রীদের দিয়ে মানববন্ধন করিয়েছেন এ প্রশ্নের কোন সদুত্তর দিতে পারেন নি তিনি।

জানতে চাইলে পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য চিংইয়ং ম্রো বলেন, সহকারি শিক্ষিকা জয়নবকে পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত বইমেলায় থাকতে ২২ ও ২৩ ফেব্রুয়ারি ছুটি মঞ্জুরের নির্দেশ দেন পরিষদের চেয়ারম্যান। কিন্তু তা না মেনে দৃষ্টতার পরিচয় দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট প্রধান শিক্ষিকা। এ ব্যাপারে পরিষদ তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক বদলির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

অপরদিকে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার রিটন বড়ুয়া বলেন, সংশ্লিষ্ট প্রধান শিক্ষিকার বিষয়ে পার্বত্য জেলা পরিষদ বদলির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা জানি। তবে আমার হাতে এ সংক্রান্ত চিঠি এখনো আসেনি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন