ইতিহাসে ভয়াবহ ভাঙ্গন ও জলোচ্ছ্বাসের কবলে সেন্টমার্টিন দ্বীপ

27052013227

মুহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান:

দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্র্টিনের ভয়াবহ ভাঙ্গন ধরেছে। গত ২৭ মে দুপুরের জোয়ারে সেন্টমার্টিনদ্বীপে স্মরণকালের ভয়াবহ ভাঙ্গন এবং জলোচ্ছ্বাসের ঘটনা ঘটেছে। ভাঙ্গনে ২১টি বসতবাড়ি সাগরে বিলীন হয়ে গিয়েছে। তাছাড়া সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাজারে ও জলোচ্ছাসে ৬টি দোকান বিধ্বস্ত হয়েছে।

সেন্টমার্টিন দ্বীপের চর্তুরদিকে ভাঙ্গন ধরলেও সবচেয়ে বেশি মারাত্বক ভাঙ্গন ধরেছে উত্তর ও পশ্চিম অংশে বিশেষতঃ কবরস্থানের বেশিভাগই ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে গিয়েছে। অনেক কবরে মৃতদেহ উম্মুক্ত হয়ে পড়েছে। পুলিশ ফাড়ির বাউন্ডারী বিধ্বস্ত হয়েছে। তাছাড়া ৬ জন মাঝি-মাল্লাসহ একটি ফিশিং ট্রলার সাগরে ডুবে গিয়েছে। মাঝিমাল্লারা সাতঁরে তীরে ফিরলেও ফিশিং ট্রলারটি এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

সেন্টমার্টিন ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান-১ আবদুর রহমান মেম্বার ও আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি ও মেম্বার আলহাজ্ব নুর আহমদ উক্ত তথ্য নিশ্চিত করে জানান, সেন্টমার্টিন দ্বীপের ইতিহাসে এত অল্প সময়ের মধ্যে এধরণের ভয়াবহ ভাঙ্গন এবং জলোচ্ছ্বাস ইতিপূর্বে আর হয়নি। এমনকি ইতিহাস বিখ্যাত একাধিক ঘূণিঝড়ের সময়ও এ ধরণের ঘটনা ঘটেনি।

সেন্টমার্টিন দ্বীপের পুলিশ ফাঁড়ির আইসি হারুনুর রশিদ ভাঙ্গন ও জলোচ্ছ্বাসের সত্যতা স্বীকার করেছেন। সেন্টমার্টিন দ্বীপের ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নুরুল আমিন পারিবারিক সমস্যায় মোবাইল ফোন বন্ধ রেখেছেন। প্যানেল চেয়ারম্যান আবদুর রহমান ও আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক মেম্বার আলহাজ্ব নুর আহমদ জানান, ২৭মে দুপুরে জোয়ারের পানি ৮ থেকে ১০ ফুট বৃদ্ধি পেয়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। সাগরের ঢেউ জনবসতিতে এসে পড়ে। এতে দ্বীপের চর্তুদিকে ভাঙ্গন ধরে। বেশি ভাঙ্গন ধরেছে উত্তর ও পশ্চিম অংশে এতে উত্তর পাড়ার আবদুস সালামের পুত্র হাফেজ আহম্মদ, ফজল আহমদের পুত্র শামসুল আলম, ফজল আহমদের পুত্র রবিউল আলম ,ফয়জুর রহমানের পুত্র ছদু মিয়া, সিরাজুল ইসলামের পুত্র শামসুল আলম, আবদুর রাজ্জাকের পুত্র মোঃ ছিদ্দিক, নজির আহমদের মেয়ে ফাতেমা খাতুন, হাবিবুর রহমানের পুত্র আবদুল কুদ্দুস, নজির আহমদের মেয়ে মরিয়ম খাতুন, কবির আহমদের পুত্র সাবের এবং মছিউল্লাহ, ছৈয়দ উল্লাহ, আমিন উল্লাহ, মছিউল্লাহ, ৯নং ওয়ার্ড দক্ষিণ পাড়া দুদুমিয়ার পুত্র ফজল আহমদ এবং ডেইল পাড়ার আমিন উল্লাহ, শামসুল আলম, মোঃ রফিক, ফিরুজা বেগমের বসতবাড়ি বিধ্বস্ত হয়ে বসতভিটা সাগরে বিলীন হয়ে গিয়েছে। জলোচ্ছ্বাসে সেন্টমার্টিন দ্বীপ বাজারের মোঃ আমিন, মনির উল্লাহ, আলী আহমদ, হাবিব উল্লাহসহ ৬টি দোকান বিধ্বস্ত হয়েছে।

তাঁরা আরো জানান, দ্বীপের উত্তর ও পশ্চিম অংশে অর্ধ কিলোমিটার,শীলবনিয়া পাড়া থেকে দক্ষিণ পাড়া মসজিদ পর্যন্ত, নেভী গেইট থেকে জাদিবিল কবির মেম্বারের বাড়ি পর্যন্ত, হোটেল সীমানা পেরিয়ে থেকে গলাচিপা পর্যন্ত ভাঙ্গন ধরেছে। এদিকে শাহপরীরদ্বীপ থেকে প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ ইসমাইল মেম্বার জানান- গত ২দিন ধরে শাহপরীরদ্বীপের ৩০হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে রয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন