ঈদগাঁওতে গৃহবধুকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ

বিশেষ প্রতিনিধি, কক্সবাজার:

কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁওতে গায়ে কেরোসিন ঢেলে রুমা আক্তার নামের এক গৃহবধুকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় পলাতক রয়েছে স্বামী ও তার স্বজনরা।

লোমহর্ষক এ ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে এলাকায়। মৃতদেহের সুরহতাল রিপোর্ট তৈরি করে সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।

নিহত গৃহবধু ওই ইউনিয়নের দক্ষিণ মাইজ পাড়া এলাকার মৃত ওবাইদুল্লাহর ছেলে ওয়াহিদ উল্লাহর স্ত্রী রুমা আক্তার।

সে পার্শ্ববর্তী চৌফলদন্ডী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড দক্ষিণ পাড়া এলাকার গিয়াস উদ্দীনের কন্যা এবং এক সন্তানের জননী। নিহত রুমা আক্তারের মামা আবদুল হক অভিযোগ করে বলেন, স্বামী ওয়াহিদুল্লাহর সাথে রুমা আক্তারের বিয়ে হয়েছিল বছর দুয়েক আগে। বিয়েটি প্রেম গঠিত হওয়ায় মেনে নেয়নি তার পরিবার। অনেক নির্যাতন অপমান সহ্য করে সুখের আসায় সংসার করে আসছিল সে। শুরু থেকেই যৌতুকের দাবিতে রুমাকে নির্যাতন করে আসছিল শ্বশুর পক্ষের লোকজন।

গত ২৮ জানুয়ারি ওয়াহিদুল্লাহ’র যোগসাজসে ভাই মামুন, মোর্শেদ মা তফুরা বেগম রুমা আক্তারকে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। তার শোর চিৎকারে এলাকার লোকজন ও প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে দ্রুত উদ্ধার করে ঈদগাঁওস্থ একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। সেখানে অবস্থা বেগতিক হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে। সেখানে ২/৩ দিন চিকিৎসা নেওয়ার পর আশঙ্কাজনক হওয়ায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

এভাবে প্রায় ৭ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ৫ জানুয়ারি ভোর ৪টার দিকে রুমার মৃত্যু হয়ে বলে নিশ্চিত করেন আবদুল হক। তিনি আরো জানান, স্বামী পক্ষের লোকজন মৃত্যুর পর রুমাকে ঘরে নিয়ে এসে দাপন কাঁপনের ব্যবস্থা করছিল। এমন সময়ে স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধিকে জানানো হলে তিনি তাৎক্ষণিক ঈদগাঁও পুলিশকে মোবাইলে অবহিত করেন। ইনচার্জ মো. আসাদুজ্জামানের নির্দেশে তদন্ত কেন্দ্রের এসআই শাহাজ উদ্দীন ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতদেহের সুরহাতাল রিপোর্ট তৈরি করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

ঘটনার বিষয়ে অভিযুক্তদের সাথে মোবাইল ও বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

অপরদিকে স্থানীয়দের মধ্যে ঘটনা নিয়ে রহস্যের ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। পার্শ্ববর্তী এলাকার লোকজন বলছে স্বামী ও তার স্বজনদের নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে রুমা আক্তার নিজেই শরীরের কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে আত্নহত্যার চেষ্টা করে। মুল ঘটনার রহস্য উদঘাটনের জন্য পুলিশ প্রশাসনের প্রতি হস্তক্ষেপ কামনা করেন এলাকাবাসী।

এ বিষয়ে ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মো. আসাদুজ্জামান  বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে মৃতদেহের সুরহতাল রিপোর্ট তৈরি করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

নিহত রুমা আক্তারের স্বজনদেরকে মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তদের ধরতে পুলিশ তৎপর রয়েছে বলেও জানান তিনি। এদিকে ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রভাবিত করতে স্বামীসহ শশুর পক্ষের লোকজন দৌড়ঝাপ শুরু করেছে বলে জানা গেছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন