ঈদ ঘিরে জাল টাকা ও হুন্ডি চক্র সক্রিয়
কক্সবাজার জেলায় পবিত্র ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে জাল টাকা ও হুন্ডি চক্র বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। বাজারে নতুন নোটকে টার্গেট করেই জাল টাকা ও ঈদকে সামনে রেখে বিদেশ থেকে প্রবাসীরা হুন্ডির মাধ্যমে প্রচুর পরিমান টাকা আদান প্রদান করছে বলে অহরহ অভিযোগ উঠেছে।
বিশেষ করে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ভিত্তিক চক্র গোপনে বিভিন্ন ছদ্দবেশে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তারা রোহিঙ্গাদের মাঝে অবৈধভাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে কোরবানীর অজুহাতে টাকা ও মাংস বিতরণের সরব প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে গোয়েন্দা সুত্রে জানা গেছে।
যেহেতু রোহিঙ্গাদের অধিকাংশ আত্বীয় বিদেশে রয়েছে। তারা ক্যাম্পে কোরবানী করার কু-মানসে হুন্ডি চক্রের মাধ্যমে টাকা পাঠিয়ে সরকারের রাজস্বখাতকে ফাঁকি দেয় বলে প্রশ্ন উঠে বারবার।
সুত্রে জানা যায়, জেলা ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জাল টাকার বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জনসাধারনের ধারনা না থাকায় টাকা তৈরীর কারিগররা সীমান্ত উপজেলা ও শহরের বেশীরভাগ এলাকায় সিন্ডিকেটগুলো বেপরোয়া হয়ে ওঠে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নতুন নোট বাজারে আসার আগেই তা জাল করে বাজারে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। দেশে জাল নোট তৈরীর কারিগররা ইতিপূর্বে বড়-বড় নোট জাল করলে ও তারা এখন ছোট গুলো জাল করছে ছোট নোটে জনগণ সতর্ক কম থাকায় এই পথ অবলম্বন করছেন প্রতারক চক্র। তারা কক্সবাজার শহর ও সীমান্ত উপজেলাগুলোতে প্রতিনিয়ত এই জাল টাকা পাচার করছে।
ওয়ান ব্যাংক কক্সবাজার শাখার এক কর্মকতা জানান, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন নোটের ডিজাইন বাজারে ছাড়ার আগেই জালিয়াতি চক্রের কাছে সে ডিজাইন চলে যায়। সে কারণে এবারেও ঈদের ঝামেলায় যেন জালনোট আদান প্রদান করতে না পারে সেই জন্য দুইজন অফিসার নিয়মিত দায়িত্বপালন করবেন।
আরো জানা গেছে, বর্তমানে কক্সবাজার শহরসহ বিভিন্ন উপজেলার বাজার ও গরুর হাটবাজারে অহরহ জাল টাকা পাওয়া যাচ্ছে। একশ, পাঁচশত টাকার জাল নোটের পাশাপাশি বিশ থেকে পঞ্চাশ টাকার নোট ও জাল পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষ করে ঈদ উপলক্ষে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সম্প্রতি ছাড় করা নতুন নোট গুলোর কাগজের মান খারাপ হওয়ায় আসল ও নকলের মধ্যে পার্থক্য খুবই সামান্য। এতে গ্রহিতা ও প্রাপক উভয়কেই দ্বিধা-দ্বন্দ্বে পড়তে হচ্ছে। নতুন নোট গুলো এমন ভাবে তৈরি করা যাতে সহজেই জালিয়াত চক্র এই নোট গুলো জাল করছে।
কক্সবাজার শহরে অবস্থিত ইসলামী ব্যাংক, অগ্রণী, কৃষি, এবি, ইউনিয়ন, জনতা, সোনালী, ন্যাশনাল ব্যাংক লি: গুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তাদের কাছে মাঝে মধ্যে ৫০০ ও ১০০ টাকার নোট ধরা পড়ছে।
অপরদিকে গরুর বাজারে বেচাবিক্রির সময় ঝামেলায় জাল টাকা দিয়ে দ্রুত স্থান করারও অভিযোগ উঠেছে। কক্সবাজার শহরের বড় বাজারের একাধিক ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আসল ও নকল নোট এখন চেনা বড় দায়। প্রতিদিন তাদের বেচাকেনায় জাল নোট পাওয়া যাচ্ছে। আবার দোকানের কেনাকাটার ভিড়ে ক্রেতারা জাল নোট দিয়ে চলে যায়। কেনাকাটার ভিড়ে এ সময় আসল না জাল নোট দেখার সুযোগ থাকেনা।
ইসলামী ব্যাংক কক্সবাজার শাখার ব্যবস্থাপক জামাল উদ্দিন জানান, জাল টাকা সনাক্ত করা ও গ্রাহকদের যাবতীয় তথ্য উপাত্ত বের করতে সার্বক্ষনিক আমরা কাজ করি। ঈদের আগে অতিরিক্ত অফিসার দিয়ে সাদা পোষাকে এ চক্রের বিরুদ্ধে মনিটরিংও করা হচ্ছে। আর গরু বাজারে ব্যাংকের পক্ষ থেকে জাল টাকা সনাক্তকরন মেশিন নিয়ে বুথ করা হয়েছে। যাতে বাজারের মধ্যেই সহজে জাল টাকা সনাক্ত করা যায়।
কক্সবাজার পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বলেন, জাল টাকা ব্যবসায়ীদের ধরতে ও কোরবানীর পশুরহাটে আলাদা পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এছাড়া শহর ও বিভিন্ন বাজারে সাদাপোষাকধারী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছে।