উখিয়ার রত্মাপালং বহুমুখী আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ

উখিয়া প্রতিনিধি:

উখিয়ার রত্মা পালং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম বহুমুখী দূর্যোগ আশ্রয় কেন্দ্রের নির্মাণে ঠিকাদারের ব্যাপক অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও তদারকি না করার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।

দায়িত্ব পালনে অবহেলার কারণে প্রায় ৩ মাস ধরে নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে। বড় বড় ফাইলিং খনন করে লোহার রড স্থাপন করে কাজ না করায় বিদ্যালয়ের সম্মুখে পুকুর আকার ধারণ করেছে। ফলে ৪ শতাধিক কচিকাঁচা শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান করছে। দুর্ঘটনায় অনেক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু নোমান চেীধুরী।

উখিয়া উপজেলা প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম  বহুমুখী দুর্যোগ আশ্রয় কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ ধীর গতির কথা স্বীকার করে বলেন, মূল ঠিকাদার কাজ না করে সাব ঠিকাদারকে নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব দেওয়ায় এ সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।

উপজেলা প্রকৌশলী অফিস সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ সরকারের বহুমুখী দূর্যোগ আশ্রয় কেন্দ্র প্রকল্পের আওতায় বিশ্ব ব্যাংকের প্রায় ৫ কোটি টাকা অর্থায়নে রত্মাপালং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম বহুমুখী দূর্যোগ আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। যার স্মারক নং- এলজিইডি/ এমডিএসপি/কক্স/ ১৪-১৫/ এনডব্লিউ-০৪। নির্মাণ কাজটি বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব পান ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ওয়াহিদ কন্সট্রাকশন লিমিডেট, করিম গ্রুপ।

গত ১০ মার্চ ২০১৮ ইং তারিখ উক্ত আশ্রয় কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনের পর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করলেও বর্তমানে কাজ বন্ধ রয়েছে। খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, দায়িত্ব পাওয়া মূল ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ওয়াহিদ কন্সট্রাশন নিজেরা কাজ না করে অন্য ঠিকাদারকে সাব কন্টাকে চুক্তি ভিত্তিক আশ্রয় কেন্দ্রটি নির্মাণ করার দায়িত্ব দিয়ে দেয়। সচেতন অভিভাবক মহলের মতে ঠিকাদারের দায়িত্ব পালনে অবহেলা ও এলজিইডি অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঠিক তদারকির অভাবে নির্মাণ কাজটি বন্ধ রয়েছে।

বিদ্যালয়ের সভাপতি জহির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, বিদ্যালয় কাম আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণে পাইলিং করার জন্য বড় বড় বেইজ খনন করা হয়ছে। স্থাপন করা হয়েছে অসংখ্য রড। বেইজ ঢালায় না হওয়ায় এলোমেলো লোহার রড মারাত্মক ঝুঁকি হয়ে পড়েছে। বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টি হওয়ার সাথে সাথে পানি ভরপুর হয়ে উঠে।

তিনি আভিযোগ করে বলেন, এধরনের ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় নির্মাণ কাজ ফেলে রেখে ঠিকাদারের লোকজন চলে গেছে। বর্তমানে প্রায় ৩ মাস ধরে কাজ বন্ধ রয়েছে। শিক্ষার্থীরা চরম ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যালয়ে আসা যাওয়া করছে।

প্রধান শিক্ষক আবু নোমান চৌধুরী জানান, ঠিকাদার বেইজ ঢালায় না করে দীর্ঘদিন  কাজ বন্ধ রাখায় অনেক শিক্ষার্থী পাইলিং গর্তে পড়ে রডে আঘাত প্রাপ্ত হয়ে আহত হয়েছে। গত সোমবার আশ্রয় কেন্দ্রের নির্মাণ কাজে অব্যবস্থাপনা ও অনিয়মের অভিযোগ এনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ করেছেন বিদ্যালয় কতৃপক্ষ। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের তদারকীর দায়িত্ব নিয়োজিত ইঞ্জিনিয়ার মোবাইল নংম্বারে সংযোগ পাওয়ার পরও রিসিব না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এব্যপারে জানতে চাইলে উখিয়া উপজেলা প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, রত্মাপালং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ কাজটি ধীরগতিতে বাস্তবায়ন হচ্ছে। এর কারণ দায়িত্ব প্রাপ্ত মূল ঠিকাদার কাজ না করে সাব ঠিকাদারকে নির্মাণ কাজে দায়িত্ব দেওয়ায় এ সমস্যাটি সৃষ্টি হয়েছে। বেইজ ঢালায় না করায় শিক্ষার্থীদের চরম দূর্ভোগ হচ্ছে বলে স্বীকার করেন।  বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করছেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রকৌশলী।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন