উপজেলা পরিষদ নির্বাচন: আলীকদমে আওয়ামী লীগ সরব, বিএনপি নীরব

আলীকদম প্রতিনিধি:

আসন্ন ২০১৯ উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগে সম্ভাব্য প্রার্থীর দৌড়ঝাঁপ লক্ষ্য করা গেলেও বিএনপিসহ অন্য দলীয় প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছে নীরবতা।

চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগে ২২ জন প্রার্থীর নাম পাওয়া গেছে। ব্যক্তি জনপ্রিয়তার চেয়েও দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে এসব প্রার্থীরা মরিয়া হয়ে উঠেছে। যে যার মতো তদবির চালাচ্ছেন দলীয় ফোরামে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ১৯৮২ সালে প্রশাসন বিকেন্দ্রীকরণের ফলে আলীকদম মানোন্নীত থানা হয়। ১৯৮৫ সালে দেশের প্রথম অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচনে মাস্টার আবু জাফর চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৮৯ সালের নির্বাচনেও তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন।

২০০৮ ও ২০১৭ সালে অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন উপজেলা বিএনপি’র তৎকালীন সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম। একসময় এ উপজেলায় বিএনপির জনসমর্থন বেশি থাকলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দলীয় অন্তঃকোন্দলে জর্জরিত দলটি। অপরদিকে, আওয়ামী লীগ টানা সরকারের থাকার কারণে মূল দল ও অঙ্গ সংগঠনে নেতাকর্মীর সংখ্যা বেড়েছে।

গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের  পর আগামী মার্চের দিকে সারাদেশে উপজেলা নির্বাচনের ঘোষণা আসায় উপজেলা আওয়ামী লীগের নানাস্তরের নেতাকর্মীদের মাঝে শুরু হয়েছে প্রার্থী মনোনয়ন ও বাছাই নিয়ে নানা হিসেবে নিকেশ।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দুংড়ি মং মার্মা জানান, এ পর্যন্ত চেয়ারম্যান পদে ৫ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১১ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকা তারা পেয়েছেন।

চেয়ারম্যান পদে যাদের নাম পাওয়া গেছে তারা হলেন, বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মোজাম্মেল হক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মংব্রাচিং মার্মা, আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও ১নং আলীকদম ইউপি চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন, ৪নং কুরুপপাতা ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ক্রাতপুং ম্রো, আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নাছির উদ্দিন, ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আনোয়ার জিহাদ।

ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সহ-সভাপতি উইলিয়াম মার্মা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রাংক্লাং মুরুং, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও যুবলীগের সাবেক সভাপতি কফিল উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কফিল উদ্দিন বিএসসি, কার্যকরী সদস্য রেংকই মুরুং, চৈক্ষ্যং ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি সজিব কামাল, সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক ফিলিপ ত্রিপুরা, উপজেলা কৃষক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজিম মাহমুদ এনামুল, চৈক্ষ্যং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম ও চৈক্ষ্যং ইউনিয়ন কৃষকলীগের সভাপতি শামসুল আলম।

মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এনুচা মার্মা, সাধারণ সম্পাদক রোজিনা আক্তার, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ব্যরী মার্মা, কার্যকরী সদস্য ইয়াছমিন আক্তার ও ৬নং ওয়ার্ড মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রিনা ত্রিপুরা মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন বলে দলীয় সূত্র নিশ্চিত করেছে।

২০১৪ সালের চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপির মোহাম্মদ আবুল কালাম জয়ী হয়েছিলেন। অল্পভোটের ব্যবধানে হেরে যান আওয়ামী লীগের প্রার্থী জামাল উদ্দিন। তবে এখন পরিস্থিতি পাল্টেছে। বিএনপির দলীয় কোন্দলে নিজ দলের আস্থা হারিয়েছে মো. আবুল কালাম। বাদ পড়েছেন উপজেলা বিএনিপর সভাপতি থেকেও। জেলা বিএনপি’র বর্তমান কমিটিরও বিরাগভাজন তিনি। তাছাড়া বর্তমান উপজেলা বিএনপির কমিটি তার অনুকূলে নয়।

অন্যদিকে, আওয়ামী লীগে মনোনয়ন ভাগিয়ে নিতে প্রার্থীরা যে যার মতো লবিং চালালেও হাই কমান্ড যাকে মনোনয়ন দেন তার পক্ষেই নির্বাচন করতে নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ কাজ করবে বলে জানা গেছে।

বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবুল কালামের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, তিনি এবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন না। তবে বিএনপি নেত্রী ও বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শিরিনা আক্তার জানান, তিনি নির্বাচনে অংশ নিবেন।

বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা জেএসএস এর সভাপতি কাইনথপ ম্রো জানান, তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: আলীকদম, উপজেলা নির্বাচন, প্রার্থী
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন