কক্সবাজারে যানজট নিরসনে উদ্যোগ নেই

কক্সবাজার প্রতিনিধি:

একজন মানুষের কেবল সময় অপচয় নয়, আর্থিক ও স্বাস্থ্যগত ক্ষতির পরিমাণও বাড়িয়ে দিচ্ছে পর্যটন শহর কক্সবাজারের যানজট। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে লোক দেখানো সিদ্ধান্তেই মনযোগী দায়িত্বপ্রাপ্তরা।

তাদের কাছে রাস্তা, ফুটপাত সংস্কারসহ কার্যকর সব পরিকল্পনাই উপেক্ষিত। তাই সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ ঠেকাতে কোনো আগ্রই নেই। এর বাস্তব উদাহারণ কক্সবাজার শহর।

কোনমতেই যানজট পিছু ছাড়ছে না শহরবাসীর। বারবার সিদ্ধান্ত হয় বাসকাউন্টার সরানো ও ফুটপাতমুক্ত করা এবং অবৈধ টমটম গাড়ি জব্ধ করা।

কিন্তু যতক্ষন সিদ্ধান্ত ততক্ষন আলোচনা। বের হলেই শেষ কার্যকর পদক্ষেপ। এভাবেই চলছে কক্সবাজার শহর। সাধারণ মানুষ কেবল ক্ষোভ-চাপা আর সমালোচনা করছে।

কক্সবাজার পৌর টমটম মালিক ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এইচএম নজরুল ইসলাম বলেন, আসলে যানজট নিরসনে পরিকল্পিত উদ্যোগ নেই। মাঝে মধ্যে উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসন বৈঠকে বসে সিদ্ধান্তের কথা জানান।

কিন্তু বাস্তবায়ন করে না। আমরা চাই অবৈধ টমটম আর শহরের ভেতর বড় বড় কাউন্টার তুলে দেয়া হউক। তাহলে যানজট অনেকটা কমে যাবে বলে আশা করছি। আবার শহরের বিভিন্ন জায়গায় রাস্তার সমস্যাও রয়েছে। সেক্ষেত্রে রাস্তা মেরামত বা নির্মাণে নজর কম কর্তৃপক্ষের। এ ছাড়া দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের দেখা মিলেনা।

এরকম নানাবিধ সমস্যা আছে কক্সবাজার শহরের সড়ক ব্যবস্থাপনায়। যানজটে ক্ষতির বিষয়ে তিনি বলেন, এর পুরোপুরি হিসাব কারো কাছেই নেই। কারণ প্রতিটি জ্যামে কতক্ষণ অপেক্ষা বা দেরি হচ্ছে, সে হিসাবসহ নানা তথ্য জোগাড় করতে হবে। এসব বিশ্লেষণ করে যানজটের যে ক্ষতি পাওয়া যাবে, তা যে কোনো গবেষণার চেয়েই বেশি হবে।

ইসমাঈল হোসেন এবারের মাস্টার্স পরীক্ষার্থী। ২২ মার্চ পরীক্ষা কেন্দ্র কক্সবাজার মহিলা কলেজ থেকে পরীক্ষা শেষে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছে ৬নং রোডের মাথায়। দাঁড়ানোর কিছুক্ষনের মধ্যেই একটি লক্করঝক্কর টমটম অপ্রাপ্ত বয়স্ক চালক এসে ধাক্কা দেয় ইসমাঈলকে। এতে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।

পরে লোকজন তাকে উদ্ধার কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। দ্রুত হাসপাতালে চিকিৎসকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে রিপোর্ট দেয় একটি হাতের হাড় ভেঙ্গে গেছে। তাই তাকে বিশ্রামের সাথে চিকিৎসা নিতে হবে।

এভাবেই কক্সবাজারে বেপরোয়া টমটমের গতির কাছে নিভে গেছে কত জীবন প্রদীপ। এছাড়া প্রতিনিয়ত আহত হচ্ছে শতশত। কক্সবাজার জেলায় অহরহ টমটম দূর্ঘটনার কারন খুজতে গিয়ে পাওয়া যায় গুরুতর অনিয়মের তথ্য।

জেলার সচেতনমহল বলছেন অদক্ষ, অপ্রাপ্ত বয়স চালক ও বেপরোয়া গতি এবং আধিক্য’র কারণে ঘাতক পরিবহনে পরিণত হয়েছে টমটম। কক্সবাজার পৌরসভার যানবাহনের লাইসেন্স শাখা সূত্র জানায়, বর্তমানে শহরে বৈধ টমটম চলছে ৩ হাজার। এর বিপরীতে শহর ও আশেপাশের এলাকায় অবৈধ টমটমের সংখ্যা প্রায় ৬ হাজার।

এছাড়া জেলার বিভিন্ন উপজেলার বৈধ ও অবৈধভাবে প্রায় আরো ৮ হাজার টমটম চলছে। তবে বৈধ ও অবৈধ ১৫ হাজার টমটম চালকের কারও কাছেই ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। কিন্তু কক্সবাজার পৌরসভায় চলাচলকারী অনেকের কাছে রিকশা চালানোর লাইসেন্স রয়েছে। অধিকাংশ টমটম চালকের লাইসেন্স নেই।

তারা অদক্ষ ও অপ্রাপ্ত বয়স্ক। এদিকে গতকাল কালুরদোকানে কথা হয়। টমটম চালক আরিফ জানায়, আলিরজাহারেল জনৈক এমদাদের কাছ থেকে ৮শত টাকা ভাড়ায় টমটম নিয়েছেন। পথে ট্রাফিক তাকে আটকায় কিনা জানতে চাইলে প্রতিত্তুরে বলেন, মাঝে মাঝে আটকায়। তখন টাকা দিয়ে ম্যানেজ করতে হয়। আর বিভিন্ন জনকে হাদিয়াস্বরুপ টাকা দিতে হয়।

 

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন