কাপ্তাই লেকের পানির স্তর নেমে যাওয়ায় নৌ-যোগাযোগ ব্যাহত

Kaptai Pic- 02 (Kata-Khal)

মো. রেজাউল করিম, কাপ্তাই:
ভরা বর্ষ মৌসূমেও পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় কাপ্তাই লেকের বিভিন্নস্থানে পানি শুকিয়ে তলদেশ ছুঁই ছুঁই করছে। কাপ্তাই থেকে রাঙ্গামাটি নৌ-যোগাযোগ সহজতর ও দ্রুততর করতে সেনাবাহিনীর তৈরি করা কাটা-খালের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় এই খালটি মরাখালে পরিণত হয়েছে। খালে পানি না থাকায় এই খালের নৌ-পথে নৌ-যান চলাচল করতে পারছে না। ফলে প্রায় ১০/১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পথ ঘুরে নৌ-যানগুলো ভিন্ন পথে রাঙ্গামাটির পথে চলাচল করছে।

সরেজমিন কাপ্তাই লেকের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে চলতি বর্ষা মৌসুমে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় কাপ্তাই লেকে পানির স্তর ক্রমান্বয়ে নিচে নেমে যাচ্ছে। এ ছাড়া কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুত উৎপাদনের লক্ষ্যে প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণ পানি লেক থেকে কর্ণফুলী নদীতে অপসারন করা হচ্ছে। এই অবস্থায় কাপ্তাই লেক প্রায় পানি শুণ্য হয়ে পড়ছে। লেকে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় কাপ্তাইয়ের সাথে রাঙ্গামাটি, শুভলং, বিলাইছড়ি, নানিয়ারচর, জুরাছড়ি প্রভৃতি এলাকায় নৌ-যোগাযোগ ব্যাহত হচ্ছে।

সবচেয়ে বেশি সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে কাপ্তাইয়ের জীবতলী এলাকায় সেনাবাহিনী কর্তৃক কর্তিত কৃত্রিম কাটাখালটি শুকিয়ে যাওয়ায়। এই খালটি সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার্স ব্যাটেলিয়ন ২০০৫ সালে তৈরি করে। এই কাটাখালটি তৈরির ফলে কাপ্তাই থেকে রাঙ্গামাটির নৌপথে প্রায় ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার দুরত্ব কমিয়ে আনা সম্ভব হয় এবং সকল নৌযান এই কাটাখাল হয়ে চলাচল করতো।

কিন্তু বর্তমানে কাটাখালের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় এই খাল দিয়ে কোন নৌ-যান চলাচল করতে পারছে না। ফলে প্রায় ১৫-২০ কিলোমিটার দুর ঘুরে ভিন্ন পথে নৌ-যানগুলোকে চলাচল করতে হচ্ছে। এতে নৌ-যানের জ্বালানী খরচ বৃদ্ধি, যাতায়তের অতিরিক্ত সময় ব্যয় এবং যাত্রীদের অতিরিক্ত ভাড়া পরিশোধ করতে হচ্ছে।
কাপ্তাই লেকের নৌ-যান চালকরা জানান, কাপ্তাই লেকের কাটাখালসহ বিভিন্ন এলাকায় নৌ-পথে পানি শুকিয়ে যাওয়ায় নৌ-যান চলাচলে ব্যাঘাত সৃষ্টির পাশাপাশি সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে।

কাপ্তাই পানি বিদ্যুত কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ জানায়, কাপ্তাই লেকে পানি সঞ্চিত রাখতে শুধুমাত্র নুন্যতম পানি খরচ করে শুধুমাত্র রাতের বেলা পিক আওয়ারে কাপ্তাই পানি বিদ্যুত কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। লেকের পানি শুকিয়ে গেলে এই কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করাও সম্ভব হবে না।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন