কুতুবদিয়ায় আবারো স’মিল স্থাপন, পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা

 

পেকুয়া প্রতিনিধি:

কক্সবাজার জেলার কুতুবদিয়া উপজেলায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা পর আবারো গাছ চিরাইয়ের জন্য স’মিল স্থাপন করা হয়েছে। যার কারণে মারাত্মক দূর্যোগপূর্ণ এই এলাকাটিতে পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, প্রাকৃতিক দূর্যোগ হলেই ভয়াবহ বিপর্যয়ে পড়ে কুতুবদিয়াবাসী। অরক্ষিত বেড়িবাঁধের পাশাপাশি এক শ্রেণির অসাধু গাছ খেকো সংরক্ষিত এলাকায় রোপিত গাছ ও বসতবাড়ির গাছ কাটা শুরু করে। যার কারণে উজাড় হতে চলছিল কুতুবদিয়ার গাছপালা। আর ওই গাছগুলো দেধারসে চিরাই হচ্ছিল স’মিলে। স’মিল বন্ধের জন্য স্থানীয় এক ব্যক্তি বাদি হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালতের নিষেধাজ্ঞায় দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল কুতুবদিয়ায় গাছ চিরাইয়ের স-মিল। নিরাপদে ছিল দ্বীপের বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য বেড়ে গিয়েছিল অনেকাংশে। গাছপালার অপরূপ সৌন্দর্য্য এর কারণে কুতুবদিয়াকে পর্যটন নগরী হিসাবে গড়ে তোলার প্রয়াস চালাচ্ছিল কুতুবদিয়া বাঁচাও আন্দোলন সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু সম্প্রতি আবারো স’মিল স্থাপনের মাধ্যমে গাছ চিরাইয়ের কারণে তাদের প্রয়াসও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এছাড়াও অব্যাহত গাছ কাটার কারণে উপজেলার ৩টি ইউনিয়ন মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে।

তারা আরো জানান, আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে গত ২০দিন আগে কুতুবদিয়ার বড়ঘোপ এলাকায় দুটি বিশাল আকারের স’মিল স্থাপন করা হয়েছে। যার মধ্যে মঞ্জুর আলমের মালিকনাধীন একটি, শাহ আমিন, শাহাব উদ্দিন ও রুহুল আমিনের যৌথ মালিকনাধীন একটি।

আদালতের নিষেধাজ্ঞার থাকায় কুতুবদিয়ায় কোন ধরণের স’মিল বসাতে না পারলেও বর্তমানে তা অমান্য করে এখন প্রকাশ্যে গাছ কাটা শুরু করেছেন তারা। উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে গাছগুলো স’মিলে পাহাড়সম স্তুপ করে রেখেছেন। সেখান থেকে চিরাই করে কুতুবদিয়াসহ আশেপাশের এলাকায় পাচার করছেন এসব গাছ। যার কারণে মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা করেছেন পরিবেশ নিয়ে কাজ করা সেভ দ্যা নেচ্যার অব বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম রিয়াদ।

তিনি বলেন, স’মিল পরিবেশের ভারসাম্য নষ্টের মারাত্মক মাধ্যম। কুতুবদিয়ায় তা দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় অনেক গাছপালা রক্ষা পেয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি তা আবারো চালু হওয়ায় কুতুবদিয়ার মানুষ অনেক ঝুঁকিতে পড়েছেন। এবিষয়ে আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

এবিষয়ে জানতে চাইলে স’মিলের মালিক শাহাব উদ্দীন সংবাদ মাধ্যমে বক্তব্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

কুতুবদিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা অজিত কুমার বলেন, আদালতে নিষেধাজ্ঞায় কুতুবদিয়ায় এতদিন স’মিল বন্ধ ছিল। বর্তমানে দুটি মিল আবার চালু করায় তাদের কাছে এর ব্যাখ্যা চেয়েছি। তারা বলছে আদালত থেকে অনুমিত নিয়েছেন। তবে আদালতের অনুমতির কাগজ এখনো হাতে পাননি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন