কুতুবদিয়ায় ধাতব মুদ্রা কার্যত অচল
কুতুবদিয়া প্রতিনিধি:
পাঁচ টাকা, দুই ও এক টাকার ধাতব মুদ্রা(কয়েন) কার্যত অচল হয়ে পড়েছে । খুচরা ব্যবসায়িরা, হোটেল, চা দোকানীরা এসব ধাতব মুদ্রা নিতে চাচ্ছেনা। এমনকি দু’তিন টাকার বেশি হলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষও নিতে অনিহা প্রকাশ করছেন। মুদ্রা অচল নয়, তবু বহনের অসুবিধার দরুণ এ ধাতব পয়সাগুলো বিক্রেতা-ক্রেতা কেউই এখন পছন্দ করছেনা। ২৫ পয়সা ও ৫০ পয়সার ধাতব মুদ্রা অনেক আগেই অচল হয়ে গেছে। এক টাকার মুদ্রাও খুব একটা নেই। এখন ভিক্ষুকরা পর্যন্ত এসব ধাতব মুদ্রা ভিক্ষা নিতে অনিহা প্রকাশ করে।
যাত্রীবাহী জীপের চালক আবু মুছা, মোহাম্মদ রিপন বলেন, বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা হাফ ভাড়া দিতে গিয়ে সবাই ২ টাকা বা ৫টাকা দিয়ে থাকে। যানবাহনে ভাড়া নিতে হয় তাদের বাধ্য হয়েই। অথচ এসব ধাতব মুদ্রা দিন শেষে দোকানে দিতে গেলে দোকানীরা নেননা। ধূরুং বাজারের হোটেল ব্যবসায়ি মেম্বার নুর মোহাম্মদ বলেন, খুচরা পয়সা কয়েক কেজি জমা হয়েছে। ভাংতি পয়সা ক্রেতাদের দিতে গেলে অনিহা দেখায়। কাগজের নোট খুঁজে নেয় তারা। বেশি পরিমাণ কোথাও দিতে পারেননা এমনকি ব্যাংকেও নিচ্ছেনা বলে তিনি জানান।
পান দোকানদার নুরুল ইসলাম বলেন, তারা খচুঁরা ব্যবসায়ি হিসেবে খুচরা কয়েন (পয়সা) নিতে হয়। এসব ধাতব পয়সা এক সময় জমা হয়ে কয়েক হাজার হয়। সেক্ষেত্রে কোন ডিস্ট্রিবিউটার মালামাল দিয়ে ধাতব মুদ্রা নিচ্ছেনা। পাঁচ হাজার টাকার মধ্যে এক’শ টাকার কয়েন দিলেও তারা নেয়না। ফলে দিন দিন ক্ষতির সম্মুখীন হয়েই যাচ্ছেন তারা।
অপর দিকে ধাতব কয়েন প্রচলনে বাংলাদেশ ব্যাংক না ভেবেই শুধু মুদ্রা বাজারে ছেড়ে থাকেন। দুই টাকা ও পাঁচ টাকা কাগজের নোট বাজারে ছেড়ে একই মূল্যমানের ধাতব মুদ্রা বা কয়েন বাজারে ছাড়া কতটুকু যুক্তিগত হতে পারে।
জনতা ব্যাংক কুতুবদিয়া শাখা ব্যবস্থাপক ধীমান কান্তি শীল বলেন, ব্যাংক হচ্ছে লেন-দেনের জায়গা। ধাতব মুদ্রা গ্রাহকরা দিলে তা আবার গ্রাহকরাই নিতে চাননা। কাজেই শুধু ব্যাংক নেবে, গ্রাহকরা নেবেননা তা হয়না। এ ছাড়া ধাতব মুদ্রা বেশি পরিমাণ জমা হলে তা ভাঙ্গাতে দ্বীপাঞ্চল থেকে চট্টগ্রাম বা ঢাকায় পরিবহণ ভোগান্তি অনেক। সময়, আর্থিক ও সংরক্ষণ নানান সমস্যার শেষ নেই। জমা রাখারও সুযোগ নেই। তিনিও মনে করেন পাঁচ টাকা ও দুই টাকার কাগজের নোট ও একই মানের ধাতব মুদ্রা বাজারে দেয়ায় স্বভাবতই সাধারণ মানুষ কাগজের মুদ্রাই নিতে চাইবে। এ দু’টি কাগজের মুদ্রা বাজারে না থাকলে ধাতব কয়েন আদান-প্রদান হবে বাধ্যতামূলক ভাবেই।