কুতুবদিয়ায় ৩ কন্যার জন্ম দেয়ায় স্ত্রীকে ঘর ছাড়া

কুতুবদিয়া প্রতিনিধি:

পর পর ৩টি কন্যা সন্তান জন্ম দেয়ায় স্ত্রীকে ঘর ছাড়া করেছে পাষণ্ড স্বামী। ন্যায় বিচারের আশায় আদালতে মামলা করলেও ফেরারী স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করে এখন লাপাত্তা। ফলে ৩টি মেয়ে নিয়ে কষ্টে ভাইয়ের বাড়িতে দিন কাটছে মঞ্জুরা বেগমের। উপজেলার আলী আকবর ডেইল পুতুইন্যার পাড়ার মৃত কবীর আহমদের পুত্র রেজাউল করিমের সাথে একই ইউনিয়নের ঘাটকুল পাড়ার ওবাইদুল হোসেনের মেয়ে মঞ্জুরার বিয়ে হয় এক যুগ আগে। বিয়ের পর প্রথম মেয়ে পপী আক্তার(১২)।

এর পরেও মেয়ে জন্ম দেন মঞ্জুরা। নাম কাকুলী(১০) ৫ম শ্রেণিতে পড়ে। স্বামী রেজাউলের কড়া নির্দেশ ছিল এর পরে মেয়ে হলে স্ত্রীকে তাড়িয়ে দেবে। বিধাতার ইচ্ছা, তৃতীয় সন্তানটিও কন্যা। কথা মতো কাজ অশিক্ষিত রেজাউলের। ৩ সন্তানসহ স্ত্রীকে বাপের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় ২০১২ সালে।

স্বামী, সন্তানের অধিকার ফিরে পেতে মঞ্জুরা ২০১৩ সালে আদালতে স্বামী রেজাউল (৩৫), শ্বাশুড়ি, চৌকিদার কালাবাশীসহ ৪জনের বিরুদ্ধে মামলা করে। পরবর্তীতে মামলায় সাজা হলেও লাপাত্তা রেজাউল করিম।

অসহায় মঞ্জুরা জানান, মামলা করেও তার দেখা নেই। বাড়ি-ঘর ছেড়ে শ্বাশুড়িসহ তারা অন্যত্র বসবাস করেন। কখনও আসেন বাড়িতে। তবে স্বামী রেজাউল দ্বিতীয় বিয়ে করে কক্সবাজারের মধ্যম কলাতলী এলাকায় শ্বশুর বাড়িতেই ঘরজামাই হয়ে বসব্সা করছে বলে তিনি শুনেছেন।

সঠিক ঠিকানা না পাওয়ায় খোঁজ নিতেও পারছেননা। সাজাপ্রাপ্ত আসামি হয়ে ঘুরে বেড়ালেও তাকে পুলিশে ধরিয়ে দেয়ার মতো তথ্য তার কাছে নেই। সন্তানদের পড়া-লেখা করাতে পারছেন না আর্থিক অভাবে। ভাইয়ের বাড়িতে ৬ বছর ধরে পরের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ, কখনো ক্ষেতে-খামারে কাজ করে দিন কাটান।

সন্তানদের খোরপোষ দূরের কথা, সাজা হলেও আটক না হওয়ায় দুঃচিন্তায় আছেন দিরে পর দিন। আইনের আওতায় তাকে আনা গেলে হয়তো তার অধিকারটুকু ফিরে পেতেন। সরকারি সহায়তা বলতে ভিজিডির চাল পান মাসে ১৫ কেজি। এক নামের চাল দু’জনকে ভাগ করে দিয়েছেন স্থানীয় মেম্বার।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা নুরুচ্ছাফা বলেন, অসহায় মঞ্জুরার বিষয়টি অমানবিক। শুধু মেয়ে সন্তান জন্ম দেয়ায় স্ত্রীকে তাড়িয়ে দেয়া অন্যায়। আদালতে যেহেতু বিষয়টি বিচারাধীন। অসহায় নারীর পাশে দাঁড়াতে পলাতক স্বামীকে আটকে পুলিশের সহযোগিতা চান তিনি। এ ছাড়া সরকারি সহায়তা বাড়াতে তিনি ইউপি সদস্যকে বলবেন বলেও জানান।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন