কুতুবদিয়া উপজেলা জাতীয় পার্টির ২ কমিটি

 

কুতুবদিয়া প্রতিনিধি:

কুতুবদিয়া উপজেলা জাতীয় পার্টির দুই কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বে পড়েছে নেতা-কর্মীরা। সরকারি দলের প্রধান শরীক দলটি কিছুটা চাঙা ভাব দেখার মূহুর্তে গ্রুপিং আলোচনা- সমালোচনা এখন তুঙ্গে। অতি নিকটে আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এ দ্বন্দ্ব ভাল লক্ষণ নয় বলে মনে করে তৃণমূল কর্মীরা। জেলা থেকে দেয়া উপজেলা কমিটির সভাপতি শহীদ উদ্দীন ছোটন ও সদস্য সচিব হাজী আব্দুল মোনাফ। এটি নিষ্ক্রীয় দাবি করে মোর্শেদ আলম সিকদারকে আহ্বায়ক ও এড. আইয়ুব হোছাইনকে সদস্য সচিব করে নির্বাচনের স্বার্থে ৪১ সদস্য বিশিষ্ট একটি আহ্বায়ক কমিটির কপি গত ২৪ এপ্রিল থানায় জমা দেন।

এর আগে এ আহ্বায়ক কমিটি জাপার চেয়ারম্যান বরাবর অনুমোদনের জন্য প্রেরণ করা হয়। এটি বিবেচনার জন্য সুপারিশ করেন কেন্দ্রীয় জাপার মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার। আবেদনে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কুতুবদিয়া-মহেশখালী আসনে জাপার সম্ভাব্য প্রার্থী আলহাজ্ব মোহাম্মদ মোহিবুল্লাহ “ নির্বাচন পরিচালনার স্বার্থে এই কমিটি অনুমোদন করা হইল ” বলে স্বাক্ষর করেন গত  ২৮ ফেব্রুয়ারি। এ কমিটি উপজেলা সদরে হাসপাতাল গেইটে একটি অফিসও নিয়েছেন। অফিসটি কেন্দ্রীয় নেতা মো. মহিবুল্লাহ উদ্বোধন করলেও সেখানে আগের কমিটির কেউ উপস্থিত ছিলেননা বলে এক নেতা জানান। আহ্বায়ক কমিটি প্রকাশ করার পর থেকেই বিষয়টি “টক অব দা কুতুবদিয়ায় পরিণত হয়েছে। ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জাপার অনেক তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। জাপার অংগ সংগঠনের অনেকেই দ্বিধাদ্বন্দ্বের কথা জানান। ছাত্র সমাজ উপজেলা শাখার সভাপতি মনিরুল ইসলাম বলেন, মূল দলে হঠাৎ’ করে ২টি কমিটি আত্মপ্রকাশ করায় তারা বেশ দ্বন্দ্বে পড়েছেন। আহ্বায়ক কমিটি করে অংগ সংগঠনের অনেক নেতা-কর্মীকে অবহিত করা হয়নি। পত্র-পত্রিকায় উভয় কমিটি বিবৃত্তি দিচ্ছে। কোনটা সঠিক তা নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হচ্ছে। এক কমিটি অপর কমিটিকে ভুয়া, বিলুপ্ত বলে পাল্টা বক্তব্য দিচ্ছেন।

গঠিত আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক মোর্শেদ আলম সিকদার (ইউপি সদস্য) ও সদস্য সচিব এডভোকেট আইয়ুব হোছাইন বলেন, নির্বাচন পরিচালনার স্বার্থে কেন্দ্র থেকে তারা কমিটি অনুমোদন নিয়ে এসেছেন। কাজেই আগের কমিটি অটোমেটিক বিলুপ্ত হয়ে গেছে। কেন্দ্রীয় সদস্য আলহাজ্ব মোহিবুল্লাহ এটি অনুমোদন দেন। জেলা কমিটির সুপারিশ  ছাড়া এ ভাবে কেন্দ্রীয় সদস্য অনুমোদন দিতে পারেন কিনা জানতে চাইলে তারা বলেন সংগঠনের নীতি অনুযায়ীই আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদিত হয়েছে।

অপর দিকে আগের কমিটির সদস্য সচিব হাজী আব্দুল মোনাফ বলেন, জেলা কমিটির অনুমোদিত একটি কমিটি থাকা সত্বে এটি ভেঙে না দিয়ে নিয়ম বহির্ভুত জেলা কমিটিকে পাশ কাটিয়ে আহ্বায়ক কমিটি গঠন ও প্রচার করাও অন্যায়। এটিকে তারা “মোহিবুল্লাহ” কমিটি নামে অভিহিত করেন। নির্বাচনে অন্তত ৫জন সম্ভাব্য প্রার্থী রয়েছে। তাদের মধ্যে আলহাজ্ব মো. মহিবুল্লাহ, মাহমুদুল করিম, কবির কোম্পানী, শহিদুল ইসলাম, শহীদ উদ্দীন ছোটন এর নাম বলেন তিনি। তবে দলের স্বার্থে যেই প্রার্থী হোক তারই হয়ে কাজ করবেন বলে জানান তিনি।

একই কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি জাফর আলম বলেন, আহ্বায়ক কমিটি এটি ভুয়া। জেলা কমিটির সুপারিশ ছাড়া কিংবা তাদের অনুমোদন ছাড়া কোন কমিটিই বৈধ হতে পারেনা বলে তিনি জানান।

জাতীয় পার্টির জেলা শাখার সেক্রেটারি মফিজুল আলম বলেন, জাতীয় পার্টি এখন বড়দল। সেখানে গ্রুপিং থাকতেই পারে। তবে জেলা কমিটির সুপারিশ বা অনুমোদন বিহীন কোন আহ্বায়ক কমিটি গ্রহণ যোগ্য নয়। মূলত কেন্দ্রীয় সদস্য আলহাজ্ব মোহাম্মদ মোহিবুল্লাহ জেলা কমিটির পরামর্শ ছাড়া নিজেই নির্বাচনের স্বার্থে দাবি করে আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দিয়ে শুধু প্রতারণা করছেন নেতা-কর্মীদের সাথে। এ ছাড়া এখন পর্যন্ত জাতীয় পার্টির কোন আসনেই প্রার্থী সিলেক্ট করেনি বলে জানান।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন