Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

কে হচ্ছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য

এইচ এম প্রফুল্ল, মইনুদ্দীন বাপ্পী:

নির্বাচন কমিশন আগামী ১৭ ফ্রেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদের ৫০ সংরক্ষিত মহিলা আসনে নির্বাচেনের জন্য তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছে। মঙ্গলবার থেকে আওয়ামী লীগ সংরক্ষিত আসনের জন্য দলীয় মনোনয়ন বিক্রি শুরু করেছে। ১৮ জানুয়ারি মনোনয়ন জমা দেয়ার শেষ তারিখ। ইতোমধ্যেই এ আসনগুলোতে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার জন্য জোর তদ্বির, লবিং চালিয়ে যাচ্ছে। সারাদেশের মতো পার্বত্য চট্টগ্রামেও আওয়ামী লীগের মহিলা নেত্রীরা সংরক্ষিত মহিলা আসনে প্রার্থি হওয়ার জন্য লবিং শুরু করেছে।

তিন পার্বত্য জেলা থেকে মনোনীত বর্তমান মহিলা সংসদ সদস্য ফিরোজা আক্তার চিনু। এবারও তিনি মনোনয়ন দৌড়ে আলোচিত প্রার্থি। তবে চিনুই কি আবারো নির্বাচিত হচ্ছেন, নাকি নতুন কেউ হবেন- এ নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনৈতিক অঙ্গনে তুমুল আলোচনা চলছে।

খাগড়াছড়িতে মনোনয়ন দৌড়ে ৫ নেত্রী

পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, বান্দরবন নিয়ে মহিলা সংরক্ষিত আসন নিয়ে আলোচনায় রয়েছে খাগড়াছড়িতে ৫ মহিলা আওয়ামীলীগের পদ প্রত্যাশী।

খাগড়াছড়ি জেলা জুড়ে সংরক্ষিত আসনে এমপি প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন. খাগড়াছড়ি জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সভানেত্রী ক্রইসাউ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও খাগড়াছড়ি জেলা মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদিকা শাহিনা আক্তার, কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের সদস্য বাসন্তি চাকমা, খাগড়াছড়ি জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি নিগার সুলতানা, খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা শতরূপা চাকমা।

প্রার্থীরা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে বিজয়ী হলে পার্বত্য জেলায় নারী উন্নয়ন, শিক্ষার প্রসার, আর্থ সামাজিক উন্নয়ন থেকে শুরু করে সকল ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রেখে পাহাড়ে আওয়ামীলীগের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন মনোনয়নের জন্য।

আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী শাহিনা আক্তার পার্বত্যনিউজকে বলেন, আমি চাই পুরুষদের পাশাপাশি নারীদের অংশগ্রহণে পাহাড়ে পাল্টে যাবে নারীদের ভাগ্য ও জীবনমান। শিক্ষা-কর্মসংস্থান সৃষ্টি,সামাজিক অধিকার,নেতৃত্বের যোগ্যতা সৃষ্টিসহ সকল জনগোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের নারীদের সমান সুযোগ সৃষ্টি এবং সহাবস্থান নিশ্চিতের কাজ করবেন বলে জানান তিনি।

অপর মনোনয়ন প্রত্যাশী বাসন্তি চাকমা নিজের মনোনয়নের ব্যাপারে শত ভাগ আশাবাদী দাবী করে পার্বত্যনিউজকে বলেন, বিগত দিনে খাগড়াছড়িকে নারী আসন থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এ কারণে খাগড়াছড়ির নারীরা অনেক পিছিয়ে রয়েছে। সংরক্ষিত নির্বাচিত হলে পাহাড়ে নারী শিক্ষায়নে বিশেষ ভূমিকা পালনের পাশাপাশি অবহেলিত ও বঞ্চিত নারীদের কর্মসংস্থানে উদ্যোগ নিবেন বলে জানান।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতোমধ্যে দাবী উঠেছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সরকারী দলের মনোনয়নের কারণে তিন জন উপজাতীয় সদস্য জাতীয় সংসদে এমপি হয়েছে। সেকারণে সংসদে বাঙালীর প্রতিনিধিত্বের অংশ হিসেবে একজন বাঙালি মহিলা নেত্রীকে সংসদের মহিলা কোটায় এমপি মনোনয়ন দেয়া হোক।

৩ পার্বত্য জেলার উপজাতীয় মন্ত্রী ও এমপির পাশাপাশি একজন বাঙালি মহিলা সংরক্ষিত আসনের এমপি করার দাবী উঠেছে বাঙালী সম্প্রদায়ের মধ্যেও।

পার্বত্য অধিকার ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো: মাঈন উদ্দীন এক বিবৃতিতে বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পার্বত্য চট্টগ্রামে নির্বাচিত তিন জন সংসদ সদস্যই উপজাতি। তাদের মধ্যে একজনকে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পুর্নমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া দেওয়া হয়েছে।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, সারা দেশের দেশের ন্যায় পার্বত্য চটগ্রামে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় এগিয়ে নিতে ও সংরক্ষিত নারী আসনে ৫১ শতাংশ বাঙালিদের প্রতিনিধি হিসেবে ক্ষমতার সম-বন্টনের  জন্য একজন বাঙালিকে নির্বাচিত করে (মন্ত্রী পদমর্যাদায়)কে এমপি করে সংসদে বাঙালিদের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ সৃষ্টি করার দাবী জানান।

সংসদে সংরক্ষিত আসনে রাঙামাটিতে দু’নারী মনোনয়ন প্রত্যাশী

গত ৩০ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদীয় নির্বাচনী ডামাডোল পেটানো শেষ । আ’লীগ তথা মহাজোট নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে আবারো ক্ষমতায় আসীন হয়েছে।

সরকার  শপথ গ্রহণ করার মধ্যে ক্ষমতায় এসে ঘোষণা দিয়েছে এবার নারীদের জন্য সংসদে ৫০টি সংরক্ষিত আসন রেখেছে। নারীরা এ সংরক্ষিত আসনের মাধ্যমে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করবেন।

তাই মহাজোট সরকারের নারী সমর্থকরা  এ আসনগুলোর মধ্যে একটি আসন আগামী পাঁচ বছরের জন্য নিজের করে নিতে এবার দৌঁড় ঝাঁপ শুরু করেছে।  চালাচ্ছে লবিং, করছে আলোচনা। যেন দম ফেলার ফুসরত পাচ্ছে না মনোনয়ন প্রত্যাশী এসব নারীরা।

আর সারাদেশের ন্যায় রাঙামাটি থেকে  দলীয় লবিং  চালিয়ে যাচ্ছে রাঙামাটি মহিলা আ’লীগের সভানেত্রী ও বর্তমান মহিলা সংরক্ষিত আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু।

এছাড়াও  সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও মানুষের মুখে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে বাঙালী নেত্রী বেগম নূরজাহান নামের এক নারীর। তিনি মহিলা সংরক্ষিত আসনে প্রতিনিধিত্ব করতে চাইছেন।

বেগম নূর জাহান অতীতে  আ’লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন।  তৎকালীন আমলে তিনি পৌর আ’লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকার দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি আঞ্চলিক সংগঠন পার্বত্য অধিকার ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা পদে রয়েছেন।

তিনি সংগঠনটি মাধ্যমে বাঙালী জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য সংসদে মহিলা সংরক্ষিত কোটায় প্রতিনিধিত্ব করতে চান। এ বিষয়টার ব্যাপারে  তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি গোচর করার আহ্বান জানান।

এদিকে মহাজোট তথা আ’লীগ থেকে  মহিলা সংসদীয় আসন পেতে মরিয়া রাঙামাটি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী বর্তমান মহিলা সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু।

এছাড়াও জেলা মহিলা আ’লীগ থেকে রোকসানা আক্তার নামের এক নারী মহিলা সংরক্ষিত আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন বলে শোনা গেলেও তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি কোন লবিং করিনি বা আমার আগ্রহের ব্যাপারে কাউকে কিছুই জানায়নি। দল যাকে পছন্দ করে মনোনয়ন দিবেন তিনি  সংসদে প্রতিনিধিত্ব করবেন বলে যোগ করেন তিনি।

এদিকে অতীতে পাহাড় থেকে  সুদীপ্তা দেওয়ান  ছাড়া আর কোন নারীকে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করতে দেখা যায়নি। আ’লীগ তথা মহাজোট সরকার ২০১৪  সালে দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচনে জয়ী লাভ করে ক্ষমতায় এসে  নতুন করে পাহাড় থেকে জাতীয় সংসদের জন্য নারী  প্রতিনিধিত্ব সৃষ্টি করে। সেইবার প্রথম পাহাড় থেকে তথা রাঙামাটি মহিলা আ’লীগের সভানেত্রী ফিরোজা বেগম চিনুকে মহিলা সংরক্ষিত আসন থেকে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করতে মনোনয়ন প্রদান করে।

চিনু সংসদে নিয়ম মেনে পাঁচ বছর ক্ষমতায় ছিলেন। সংসদে পাহাড়ে অবৈধ অস্ত্রের বিরুদ্ধে এবং পাহাড়ের সুষম উন্নয়নে  জোরালো ভূমিকা পালন করেছেন।

পাহাড়ে  রাজনৈতিক অঙ্গনে নারীদের তেমন কোন উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি না থাকলেও বর্তমানে এমপি চিনুকে দেখে অনেকে নারী এগিয়ে এসেছে রাজনীতির মাঠে।

এ ব্যাপারে এমপি চিনু জানান, আমি সংসদ গিয়ে বসে থাকিনি। সংসদে এবং সংসদের বাইরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বারবার বলেছি পাহাড়ের উন্নয়ন করার জন্য। আরও বলেছি পাহাড়ের অবৈধ অস্ত্রে ঝনঝনানীর কথা।

এছাড়া রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ স্থাপনে জোরালো ভূমিকা রেখেছি। বর্তমানে প্রশাসন পাহাড়ে অবৈধ অস্ত্রধারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছে।

রাঙামাটি প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং মেডিকেল কলেজে ছেলে-মেয়েরা ভালভাবে লেখা-পড়া করছে।  এটাই আমার চাওয়া ছিলো, আর এ চাওয়া পূরণ হয়েছে।

পাহাড়ের অনেক নারীর ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করেছি দিন-রাত। যাকে যেভাবে সহযোগিতা দেওয়ার দরকার তাকে সেভাবে সহযোগিতা দেওয়ার চেষ্টা করেছি।

পাহাড়ের সার্বিক উন্নয়নে সর্বেোপরি পিছিয়ে পড়া নারীদের উন্নয়নে কাজ করতে আমি আবারো মহিলা সংরক্ষিত আসনে এমপি হওয়ার আশা করছি। দলের সভানেত্রী ও দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা  যদি আমাকে সেই সুযোগ প্রদান করে তাহলে আমি পাহাড়ের পাহাড়ের উন্নয়নে আবারো কাজ করে যেতে চাই।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন