কোরবানি উপলক্ষে টুং টাং শব্দে মুখর চকরিয়ার কামার পল্লীগুলো
আগামী ১২ আগস্ট পবিত্র ঈদুল আযহা অর্থাৎ কোরবানীর ঈদ। আর কোরবানীর ঈদকে ঘিরে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার কামার পল্লীগুলো এখন টুং টাং শব্দে মুখরিত। কর্মব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে কামররা। পশুর মাংস কাটার নতুন সরঞ্জামাদি তৈরি ও পুরাতন দা, ছুরি, বঁটি, চাপাতি শান দেয়ার ধুম পড়েছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, চকরিয়া পৌরশহরের বাণিজ্যিক জনপদ সোসাইটি এলাকায় অন্তত ১৪-১৫টি কামার দোকান রয়েছে। বর্তমানে এ সব কামারের দোকানে বিদ্যুৎচালিত শান মেশিন ব্যবহার করে অল্প সময়ে অধিক কাজ করছেন কামাররা। পাশাপাশি আগুনের বাদির মাধ্যমে লোহা পেটাচ্ছেন অন্য কর্মচারীরা। এছাড়া পাড়া-মহল্লায় মৌসুম ভিত্তিক কামাররা রেত (শান দেয়ার যন্ত্র) দিয়ে দা, বঁটি, ছুরি, চাপাতি ও অন্যান্য সরঞ্জাম শান দিচ্ছেন।
চকরিয়া পৌরশহরের বালিকা বিদ্যালয় সড়কের দোকানদার অনিল কর্মকার জানান, কোরবানির ঈদে হাজার হাজার গরু-ছাগল কোরবানি হয়ে থাকে। পশু জবাই থেকে শুরু করে কোরবানির মাংস রান্নার জন্য চূড়ান্ত প্রস্তুতি পর্যন্ত দা, বঁটি, ছুরি, চাপাতি ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি প্রয়োজন হয়। বছরের অন্যান্য সময় কাজ কম থাকলেও এ সময়ে আমরা কর্মব্যস্ত হয়ে পড়ি।
চকরিয়া ওয়াপদা সড়কের দোকানদার বাদল কর্মকার জানান, সারাবছর কষ্ট করে চলতে হয়। ঈদ এলেই আমাদের কর্ম ব্যস্ততা বেড়ে যায়। চাঁদ রাত পর্যন্ত নির্ঘুম রাত কাটাতে হবে। একসময় এ পেশায় অনেক লোক ছিল কিন্তু এখন সেই আগের মতো কাজের লোকও মিলছেনা। বাপ-দাদার ব্যবসা কোন রকম টিকিয়ে রেখেছি। আমাদের ছেলেরা এখন এ পেশায় আসতে চাচ্ছেনা।
কাকারা ইউনিয়নের কুমারপাড়ার বাসিন্দা দুলাল কর্মকার বলেন, আধুনিক সব দা-ছুরি আসার ফলে ক্রেতা কমে গেছে। আগের মতো সেই জৌলুস নেই। তাছাড়া কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিক্রিতে তেমন লাভ হচ্ছেনা। মঙ্গলবার ওয়াপদা সড়কের কামার দোকানে কোরবানী উপকরণ দা ও বটিঁ কিনতে এসেছেন চকরিয়া বিমানবন্দর রোড ব্যবসায়ী সমিটির সম্পাদক মো. নুরুস শফি। তাঁর সঙ্গে এসেছেন ব্যবসায়ী মোজাম্মেল ও আনোয়ার হোসেন।
দোকানে দরদাম যাছাই শেষে তাঁরা বলেন, একটি দা আকার ও লোহা ভেদে ১০০-৪০০ টাকা, ছুরি ৪০-৪০০ টাকা, হাঁড় কাটার চাপাতি একেকটি ৩’শ থেকে ৫’শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এবং পুরনো যন্ত্রপাতি মেরামত করতে ১’শ থেকে ৩’শ টাকা পর্যন্ত নিচ্ছেন কামাররা। তারা বলেন, মনে হচ্ছে দাম একটু বেশি তারপরও কি করব সামনে ঈদ। প্রয়োজনের তাগিদে নিতে হচ্ছে। কোন উপায় নেই।