খাগড়াছড়ি’র ছয় উপজেলার চারটিতেই একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী

upazila election logo

মু. আব্দুল হালিম, খাগড়াছড়ি সংবাদদাতা:
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী প্রথম পর্যায়ে আগামী ১৯ ফ্রেবুয়ারি খাগড়াছড়ির আটটি উপজেলার মধ্যে সদর, মহালছড়ি ,রামগড়.মানিকছড়ি,মাটিরাঙ্গা, ও পানছড়িসহ ছয়টি উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দিঘীনালা ও লক্ষিছড়ি দু‘টি উপজেলাতে নির্বাচন হচ্ছে দ্বিতীয় ধাপে। তবে আটটির মধ্যে চার উপজেলাতেই উভয় দলের একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

নির্বাচনে ইতোমধ্যেই আওয়ামীলীগ,বিএনপি, ,জাতীয় পাটি, পার্বত্য নাগরিক পরিষদসহ স্থানীয়  রাজনৈতিক দলের পক্ষে মনোনয়নপত্র দাখিল করা হয়েছে। তবে আওয়ামীলীগ ও বিএনপির একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় কিছুটা বেকায়দায় পড়তে হবে উভয় দলকেই। একক প্রার্থী নিয়ে নির্বাচন করে বিজয়ী হওয়ার লক্ষ্যে শেষ পযর্ন্ত চেষ্টা চালিয়ে যাবেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। তবে এখন পযর্ন্ত বিদ্রোহী প্রার্থীরা নিজ নিজ অবস্থানে অনড় থাকার কথা জানা গেছে।  

জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, ছয়টি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৪০জন, ভাইস-চেয়ারম্যান পদে ৩৩জন, ভাইস-চেয়ারম্যান মহিলা পদে ২৭ জনসহ মোট ১০০জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করলে বাছাইপর্বে সবগুলোই বৈধ হয়ে যায়্। আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের পরের দিন প্রতীক বরাদ্দের পরেই শুরু হবে নির্বাচনী প্রচারনার কাজ। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে  সবদল অংশগ্রহণ না করায় প্রাণহীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আর এবারের উপজেলা নির্বাচনে সবদল অংশগ্রহণ করায় বেশ জমেই উঠবে নির্বাচন ধারনা করছেন অনেকেই।

মাটিরাঙ্গা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের পক্ষে বর্তমান চেয়ারম্যান শামছুল হক মনোনয়নপ্রত্র দাখিল করলেও উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন সম্পাদক ও তাইন্দং ইউপি চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছে। আর বিএনপির একক প্রার্থী হিসেবে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম নির্বাচন করছেন।

এছাড়া পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্রপরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও পার্বত্য নাগরিক পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আলহাজ্ব আলকাছ আল মামুন ভূইয়া নির্বাচন করছেন। তিনি গতবারে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নিবার্চন করে হেরে গেলেও এবার চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেছেন। অন্যদিকে পার্বত্য নাগরিক পরিষদের মহা-সচিব অ্যাডভোকেট এয়াকুব আলী চৌধুরী চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করলেও তিনি আলকাছ মামুনকে সমর্থন করে তার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করবেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। সদর উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের সমর্থনে বর্তমান চেয়ারম্যান শানে আলম ও বিএনপির সমর্থনে জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি কংচাইরী মারমা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

মানিকছড়িতে চেয়াম্যানপদে আওয়ামীলীগের সাবেক উপজেলা সভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য মাগ্র্য মারমা কে দলীয় সমর্থন দিলেও বর্তমান উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি জয়নাল আবদীন বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এছাড়া বিএনপির পক্ষে মানিকছড়ি উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এনামূল হককে দলীয় মনোনয়ন দিলেও বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি  রবিউল ফারুক মনোনয়নপত্র দাখিল করেন রামগড়ে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম ফরহাদকে দলীয় মনোনয়ন দিলেও বর্তমান চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি বেলায়েত হোসেন ভূইয়া ,ও সাবেক জেলা ছাত্রদলের আহবায়ক রিয়াজ উদ্দিন রিপন নিবার্চন করেছেন। এছাড়া আওয়ামীলীগের সমর্থনে একেএম আলিম উল্লাহকে ঘোষণা দেওয়া হলেও বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে কাজী রফিকুল ইসলাম মিন্টু মনোনয়নপদ দাখিল করেন। আর জাতীয় পাটির সমর্থনে মজিবুর রহমান নির্বাচন করেছেন।

পানছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান পদে সাবেক জেলা পরিষদের সদস্য বিএনপি নেতা অনিমেষ দেওয়ান রিংকু বিএনপির সমর্থনে একক প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন এবং আওয়ামীলীগের পক্ষে বকুল চন্দ্র চাকমা মনোনয়নপত্র জমা দেন। মহালছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান পদে বিএনপির একক প্রার্থী দানু মিয়া নির্বাচন করলেও আওয়ামীলীগের রয়েছে একাধিক প্রার্থী। আওয়ামীলীগ নেতা নিলোৎপল খীসাকে দলীয় মনোনয়ন দিলেও অপর আওয়ামলীগ নেতা গিয়াস উদ্দিন নির্বাচন করছেন। এছাড়া আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল ইউপিডিএফ সমর্থিত সদর উপজেলায় চঞ্চুমনি চাকমা, পানছড়িতে বর্তমান চেয়ারম্যান সর্বোত্তম চাকমা, মহালছড়িতে বর্তমান চেয়ারম্যান সোনারতন চাকমা

জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি সাবেক জেলা পরিষদের চেয়াম্যান মনিন্দ্র লাল ত্রিপুরা জানান, সরকার বিরোধী আন্দোলনে যারা ভূমিকা রাখতে পারবে এবার তাদেরকেই দলীয় সমর্থন দিয়ে বিজয়ী করে ঘরে পিরে আসব।
আওয়ামীলীগের জেলা সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ সমীর দত্ত চাকমা বলেন, দলের বিদ্রোহী প্রার্থীর জন্যে ৩ ফের্রুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।  ইউপিডিএফ‘র মুখপাত্র নিরন চাকমা জানান,‘ সাংগঠনিকভাবে এখনো প্রার্থী ঘোষনা হয়নি। জনগনের সমর্থিতরাই আমাদের প্রার্থী হতে পারেন।’
জনসংহতি সমিতির (এনএন লারমা) অংশের কেন্দ্রীয় নেতা  সুধাকর ত্রিপুরা জানান, ‘এবার মহালছড়িতে বিমল কান্তি চাকমা চেয়ারম্যান পদে তাদের প্রার্থী হয়েছেন। আর কয়েকটি উপজেলায় কৌশলগত অবস্থান নেয়া হয়েছে।’

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন