পানছড়ি উপজেলায় দপ্তরী নিয়োগে নীতিমালা উপেক্ষা : স্বজনপ্রীতির অভিযোগ

xcdf5

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি :

খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলার মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে দপ্তরী কাম প্রহরী পদে নিয়োগে অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি ও নীতিমালা উপেক্ষা করার অভিযোগ উঠেছে। দপ্তরী নিয়োগে অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি ও নীতিমালা উপেক্ষা করায় তালিকায় চূড়ান্ত প্রার্থী মো: শহিদ উল্ল্যাহ বাদী হয়ে গত ৭মার্চ পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান চাইথোঅং মারমা সহ ৫জনের বিরুদ্ধে খাগড়াছড়ি যুগ্ম জজ আদালতে মামলা দায়ের করেছে। মামলা নং-৫৭/১৪।

জানা যায়, আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরী কাম প্রহরী পদে পানছড়ি মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে সদস্য সচিব করে নিয়োগ কমিটি তিনজন প্রার্থীর মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণ করে। মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণের পর গত ৪মার্চ চূড়ান্ত মেধাস্থান অর্জনকারীদের তালিকা চেয়ারম্যান, পার্বত্য জেলা পরিষদ, খাগড়াছড়ির নিকট প্রেরণ করে নিয়োগ কমিটি। প্রেরিত তালিকায় ১নং মেধাস্থানে-মো: শহিদ উল্ল্যাহ, ২নম্বরে-ইকবাল হোসেন ও ৩নম্বরে মো: আমিনকে দেখানো হয়। বিদ্যালয় থেকে প্রেরিত তালিকায় স্বাক্ষর করেন পানছড়ি উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের ইন্সট্রাক্টর মোহাম্মদ খলিলুর রহমান, প্রধান শিক্ষক মো: হুমায়ুন কবির ও বিদ্যালয় পরিচালনা  কমিটির সভাপতি নুর মোহাম্মদ।

স্থানীয় সূত্র ও মো: শহিদ উল্ল্যাহ অভিযোগ করেন, মৌখিক পরীক্ষায় মেধা তালিকায় দুই নম্বর প্রার্থী মো: ইকবাল হোসেন উক্ত বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি নুর মোহাম্মদের রক্ত সম্পর্কীয় জেঠাতো ভাইয়ের ছেলে হওয়ায় স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে ২নং প্রার্থীকে জেলা পরিষদের তালিকায় নির্বাচিত করা হয়েছে। যা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নীতিমালা বহির্ভূত। এক্ষেত্রে আমাকে চাকুরী হতে বঞ্চিত করা হয়েছে। আমি এ ব্যাপারে পাজেপ চেয়ারম্যান সহ সরকারের দৃষ্টি আকর্ষন করছি।

তথ্যানুসন্ধানে দেখা যায়, গত ২৬ জানুয়ারী পানছড়ি উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোশারফ হোসেন সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয় সমূহে দপ্তরী কাম প্রহরী পদে নিয়োগের নীতিমালার কপি তাঁর অফিসের স্মারক নং-২৮ (২৬)মূলে প্রেরণ করে। উক্ত নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়, নীতিমালা অনুচ্ছেদ ০৫ এর শেষে ‘‘বাছাই এ নিয়োগ কমিটির সভাপতি বা কোন সদস্যের নিজ সন্তান বা রক্ত সম্পর্কিত নিকট আত্নীয় দপ্তরী কাম প্রহরী পদে নিয়োগের জন্য প্রার্থী হইতে তিনি নিয়োগ কমিটির সভাপতি বা সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করিতে পারিবে না’’। অথচ এ বিদ্যালয়ে দপ্তরী পদে চাকুরী প্রার্থী ২নং প্রার্থীর সম্পর্কীয় চাচা। বর্তমানে তিনি উপজেলা আওয়ামীলীগের একটি পদে ও মোহাম্মদপুর গুচ্ছগ্রামের প্রজেক্ট চেয়ারম্যান বলে জানা গেছে। দলীয় ক্ষমতার অপব্যবহার, স্বজনপ্রীতি ও নীতিমালা উপেক্ষা করে আপন ভাতিজাকে চাকুরীতে নিয়োগে তিনি দৌড়ঝাপ চালিয়ে যাচ্ছেন বলে স্থানীয় সূত্র জানায়।  

এ বিষয়ে পানছড়ি মোহাম্মদপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি নুর মোহাম্মদকে নীতিমালা প্রসংগে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, আমি নীতিমালার কপি পাইনি। তবে ইকবাল হোসেন তার জেঠাতো ভাই হারুন অর রশিদের পুত্র বলে স্বীকার করেছেন।

এদিকে, প্রধান শিক্ষক মো: হুমায়ুন কবির জানান, মৌখিক পরীক্ষা চলাকালীন প্রার্থী ইকবাল হোসেন বিদ্যালয়ের সভাপতির ভাতিজা বলে আমার জানা ছিল না ও কোন প্রার্থী অভিযোগ করেনি। পরক্ষণে জানতে পারি, বিদ্যালয়ের সভাপতি নুর মোহাম্মদের ভাতিজা। এতে আমার কোন দোষ নাই ও আমি কোন অনিয়ম করেনি।

এব্যাপারে পার্বত্য জেলা পরিষদের একটি সূত্র জানায়, নিয়োগ অনুমোদনের নিমিত্তে প্রাপ্ত প্যানেলভূক্ত প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণের মাধ্যমে অগ্রগণ্যতারক্রম নির্ধারন করে তালিকা প্রকাশ করা হয়। তালিকায় নীতিমালা মোতাবেক পাজেপ চেয়ারম্যান স্বাক্ষর করার কথা থাকলেও খাগড়াছড়ি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, পাজেপ এর নির্বাহী কর্মকর্তা, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, পাজেপ সদস্য সাহাব উদ্দিন মিয়া গত ৩০ মার্চ স্বাক্ষর করেন।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: খাগড়াছড়ি, নিয়োগ, পানছড়ি
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন