গর্জনিয়ায় ডাকাতী, মারধর, অপহরণের চেষ্টা ও ধর্ষণের ঘটনায় ৫ নারী আহত

নাইক্ষ্যংছড়ি  প্রতিনিধি:

কূখ্যাত ও স্বশস্র আনাইয়্যার নেতৃত্বে ডাকাতদল ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে  রামুর গর্জনিয়ায় ৩দিন ধরে উপর্যুপরি ডাকাতী, মারধর, অপহরণের চেষ্টা ও ধর্ষনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সব ঘটনায় ধর্ষিতা ২ নারীসহ ৫ নারী আহত হয়েছে। এদের ২জনকে নাইক্ষ্যংছড়ি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আর ডাকাতের চাঁদাদাবী করা এলাকাবাসী এখন গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে সরে গেছে অন্যত্র ।এরই মধ্যে শুক্রবার সকালে স্থানীয় পুলিশদল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঘটনার কিছু আলামত সংগ্রহ করেছে।

এলাকাবাসী জানান, আনোয়ার হোসেন ওরফে আনাইয়্যা ডাকাত বাইশারী ছেড়ে গত ৩ দিন ধরে গর্জনিয়ায় তাণ্ডব শুরু করেছে। গত মঙ্গলবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দফায় দফায় হামলা চালায় কক্সবাজার জেলার  গর্জনিয়া ইউনিয়নের দূর্গম শামার ঘোনা ও মিয়াজির ঘোনাএলাকায়। মিয়াজির ঘোনা এলাকাটি হলো ইউনিয়নের থোয়াইংগ্যার কাটা গ্রামের পূর্বদিকের পাহাড়ি এ গ্রাম।

এ গ্রামের শাহ আলম নামের এক ব্যবসায়ী ও কৃষক জানান, আন্ইায়্যা ডাকাতের নেতৃত্বে ডাকাতদল তার বাড়িতে হানা দেয় বৃহস্পতিবার গহীনরাতে। প্রথমে তারা ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে। পরে দরজা ভাঙ্গে ১টি। এর পর আরো ২ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুটে আতঙ্ক ছড়িয়ে ডাকাতি করতে থাকে। এ সময় তারা ( ডাকাতরা)  তার বাড়ি থেকে নগদ অর্থ, মোবাইল ও স্বর্ণ সহ এক লক্ষ টাকা লুট করে। আর ডাকাতদের যথাসময়ে ভেতর থেকে দরজা খুলে না দেয়ার অজুহাতে ৭ম শ্রেণির ছাত্রি তসলিমা আক্তার, গৃহবধূ রহিমা খাতুন (৩৫) ও জরিনা খাতুন ( ৩০) কে ছুরিকাঘাত সহ মারধর করে। ছাত্রি তসলিমা অপহরণের জন্যে অনেকদূর নিয়ে গেলেও এলাকাবাসী

চর্তুপাশদিয়ে এগিয়ে আসলে সে ছাড়া পায়। ডাকাতরা এ ফাঁকে পালিয়ে যায়। তারা এখন নাইক্ষ্যংছড়ি হাসপাতালে । সে আরো জানায়, এ ডাকাত দলটি শুক্রবার সকাল থেকে ফোনে ৫ লাখ টাকা চাঁদাদাবী করে আসছিলো তার কাছ থেকে। নয়তো তাকে অপহরণ করে এ টাকা আদায়ের হুমকিও  দিচ্ছে বারবার। এখন সে নিজেও এলাকাছাড়া।

সেচ্ছাসেবক লীগের ওয়ার্ড সভাপতি মো: ওসমান জানান, গত ৩ দিন ধরে তাণ্ডব চালানোর পরও শুক্রবার রাত ৮টায় এ আনাইয়্যা ডাকাত তার দলবল সহ শামার ঘোনা পাহাড়ে অবস্থান করছে। আর এ খবর ছড়িয়ে পড়লে আশপাশের ৫ গ্রামের প্রায় দেড়শতাধিক মানুষ গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে এসেছে নিরাপদে। এখন তারা বাড়ি-ঘরের মূল্যবান মালামাল নিয়ে দারুন দুঃচিন্তায়। এ গ্রাম গুলো হলো:শিয়া পাড়া, মিজ্জির ঘোনা, শামার ঘোনা, মৌলভী ঘোনা ও আবুল কাশেমের ঘোনা।

এ গ্রামের বাসিন্দা আবদুল জলিল ও আবদুল্লাহ সহ অনেকেই জানান, সোমবারের পর মঙ্গলবার রাতে এক জনকে অপহরণের করে ডাকাতদলটি থেমে থাকেনি। ডাকাতদলটি  তাদের ২ নারীকে ধর্ষণ করেছে এ রাতে। যা খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ার পর এসব গ্রামের নারীরা এখন চরম আতঙ্কে রয়েছে। তারা আরো জানান, ধর্ষিতা নারীদের একজন তরুণী আর অপর জন গৃহবধূ। তারা ডাকাতের হাতে নিগৃহীত  ও আহত হন। তাদের পরিবার এসব লোকজন নিয়ে নানাভাবে বিব্রত।

এ বিষয়ে রামু থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল মনসূর জানান, কিছু সন্ত্রাসী গর্জনিয়ার শামাঘোনা এলাকায় হানা দিচ্ছে তিনি শুনেছেন। বর্তমানে এসব এলাকায় পুলিশী টহল রয়েছে। আরো বাড়ানো হচ্ছে।  আর এসব ঘটনায় কয়েকজন নারী আহতের বিষয়েও জানেন তিনি।  তবে ধর্ষণের বিষয়টি তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন। তিনি আরো জানান, দূধর্ষ আনাইয়্যা ডাকাত ও তার দলকে আটকে পুলিশ-র‌্যাব ও বিজিবি মাঠে নেমেছে। খুব অল্প সময়েই সে আটক হবে। দুঃচিন্তার কোন কারণ নেই।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন