গুইমারায় কিশোরী ধর্ষণের ৬ দিন পর ধর্ষক গ্রেফতার

guimara

গুইমারা প্রতিনিধি:

 খাগড়াছড়ির গুইমারায় এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে মো. মিলন প্রকাশ নার্সারী মিলন (৫৫) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মাটিরাঙ্গা পৌরসভার হাতিয়া পাড়ার নিজ বাসা থেকে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে গুইমারা থানার পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।

শনিবার খাগড়াছড়ি অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল আদলতে মো. মিলন ধর্ষণের দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়, মাটিরাঙ্গা পৌরসভার হাতিয়াপাড়ার বাসিন্দা ৬ সন্তানের জনক মো. মিলন প্রকাশ নার্সারী মিলন গত রবিবার (২রা এপ্রিল) রাতে গুইমারা উপজেলার হাজীপাড়ায় বিজিবি সেক্টর সংলগ্ন ইদ্রিস মিয়ার স্ত্রী রুনা আক্তারের ভাড়া বাসায় ১৫ বছরের এক কিশোরীকে ধর্ষণ করে। তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণকালে ঐ কিশোরীর আর্তচিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে মিলন পালিয়ে যায়। ধর্ষিতা হাতিমুড়া এলাকার মৃত বাচ্ছু মিয়ার কন্যা।

এদিকে সোমবার সকালে হাতে নাতে আটকের পর ঘটনা ধামাচাপা দিতে জালিয়াপাড়া এলাকার ডা. নুরন্নবী ও সাফলাই ইকবালসহ বেশ কজন মিলে ধর্ষণকারী মিলনের কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থ নিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অর্থ বানিজ্যের বিষয়ে গুইমারা থানা পুলিশের যোগ সাজস রয়েছে বলেও অভিযোগ উঠে।

এছাড়াও ঘটনার প্রকৃত তথ্য সংগ্রহে গেলে হাতিমুড়া পুলিশ ক্যাম্পের আইসি আবুল কালাম ও কনস্টেবল নাসির সংবাদকর্মীদের সাথে দূর্ব্যবহার করেছেন বলেও অভিযোগ করেছে স্থানীয় সাংবাদিকরা। এবিষয়ে গণমাধ্যমে ফলাও করে সংবাদ প্রকাশের পর এক পর্যায়ে পুলিশ মামলা নিতে বাধ্য হয়।

বৃহস্পতিবার ধর্ষিতার মা হাওয়া বিবি গুইমারা থানায় বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন আইন ২০০৩এর ৯(১১/৩০) ধারায় একটি মামলা (মামলা নং-১, তারিখ, ৬-৪-১৭)  দায়ের করেন। মামলা রুজুর পরই গুইমারা থানা পুলিশ আসামি গ্রেফতার করতে অভিযান শুরু করে।

এক পর্যায়ে মাটিরাঙ্গা থানা পুলিশের সহযোগিতায় বৃহস্পতিবার রাত ২টার দিকে গুইমারা থানা পুলিশ মাটিরাঙ্গা পৌরসভার হাতিয়াপাড়ার বাসায় অভিযান চালিয়ে মিলনকে গ্রেফতার করে। তবে সহযোগিতার দায়ে এ মামলার অপর আসামি ইদ্রিস আলীর স্ত্রী রুনা বেগমকে এখনও আটক করেনি পুলিশ। অপরদিকে ধর্ষণের ঘটনা আপোষ করে মীমাংসার চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ায় ডা. নুরুন্নবীসহ অন্যান্য জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয়রা জানায়, বর্তমানে মিলনের দুই স্ত্রী ও ৬ সন্তান রয়েছে। দুই স্ত্রীর মধ্যে একজন ত্রিপুরা (উপজাতি)। এর আগে চার স্ত্রীকে সে তালাক দেয়।

গুইমারা থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) জোবায়ের হোসেন মুঠোফোনে জানান, মো. মিলন প্রকাশ নার্সারী মিলনকে শুক্রবার খাগড়াছড়ি অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রোকেয়া আক্তারের আদালতে হাজির করা হয়। আসামি ধর্ষণের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। তার জবানবন্দী রেকর্ড করার পর আদালতের নির্দেশে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন