গুইমারায় ফাঁড়ি ইনচার্জের বিরুদ্ধে অর্থ আদায়ের অভিযোগ

fec-image

খাগড়াছড়ির গুইমারা থানার অন্তর্গত হাফছড়ি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আসহাফ উদ্দিনের বিষয়ে ইয়াবা দিয়ে চাকমা যুবককে ফাঁসানোর হুমকি দিয়ে ৮০ হাজার টাকা আদায় করার অভিযোগ উঠেছে।

ভুক্তভোগী যুবক উপজেলার গড়াইছড়ি এলাকার সন্তু রাম চাকমার সন্তান জ্যোতি চাকমা।

ভুক্তভোগী জানায়, ৭ মে রংপুর থেকে তার বাড়িতে আলমগীর নামে একজন মেহমান বেড়াতে আসে। বিকেলে যাওয়ার সময় হাফছড়ি পুলিশ ফাড়িঁর ইনচার্জ আসহাফ উদ্দিন ও তার লোকজন অন্যায়ভাবে তাকে জালিয়াপাড়া পুলিশ বক্সে আটক করে জ্যোতিকে ফোনে ডেকে এনে দু’জনক ফাঁড়িতে নিয়ে যায়।

সেখানে নিয়ে আইসি এক লাখ টাকা দাবি করে অন্যথায় ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর হুমকি দেয়। একপর্যায়ে কোন উপায় না পেয়ে সে মোবাইল ফোনে বাড়ি থেকে ৭০ হাজার টাকা এনে দেয়। বাকি টাকার বিষয়ে দুই দিনের সময় দিয়ে ছেড়ে দেয়। পরে দশ হাজার টাকা দিলেও মোবাইল ফোনে বাকি টাকার জন্য হুমকি দিচ্ছেন বলেও জানিয়েছে তিনি। ভয়ে বাজারে আসতে পারছেন না তিনি। তবে বেশ কিছু অডিও রেকর্ডিং রেখেছেন তিনি। পরে বিষয়টি সাংবাদিকসহ বিভিন্ন মহলে জানালে আইসি আসহাফ উদ্দিন ঘটনার ৭ দিন পর ২০ হাজার টাকা ফেরত দিয়ে বলেন, কেউ জানতে চাইলে সব টাকা ফেরৎ দিয়েছেন। অন্যথায় খবর আছে। কিন্তু তিনি বাকি পঞ্চাশ হাজার টাকা ফেরৎ চান।

ঘটনার সময় উপস্থিত পুলিশ ফাঁড়ির টু আইসি আলাউদ্দিন বলেন, ৭০ হাজার টাকা নিয়েছে এটা সত্য। তবে তিনি জুনিয়র অফিসার তার কিছু করার ছিলো না। কিন্তু তিনি বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে সত্যতা স্বীকার করেছেন।

প্রকল্প চেয়ারম্যান ও হাফছড়ি সমাজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি আব্দুল কাদের বলেন, তার উপস্থিতিতে লোকটাকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর হুমকি দিয়েছে পুলিশ ইনচার্জ। ভয়ে লোকটা বাড়ি থেকে ৭০ হাজার টাকা এনে দিয়েছেন এটা সত্য। না হলে তাদের ইয়াবা দিয়ে মামলা দিয়ে দিতেন আসহাফ উদ্দিন।

এছাড়াও তার বিষয়ে রাতে গাছের ও লাকড়ির গাড়ির সামনে দাড়িয়ে টাকা আদায় করা, অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা না নেওয়াসহ পুলিশ বক্সের পিছনে চায়ের দোকানে জুয়া খেলার অভিযোগ রয়েছে।

স্থানীয় রুবেল জানান, সে দিন যা কিছু করেছে আইসি করেছে আমরা শুধু দেখেছি।

অভিযুক্ত ফাঁড়ির ইনচার্জ আসহাফ উদ্দিনের নিকট জানতে গেলে তিনি প্রথমে কিছু টাকা দিয়ে গণমাধ্যম কর্মীর সাথে সমন্বয় করতে চান। ব্যর্থ হয়ে বলেন তদন্ত চলছে তদন্তে যা হবার হবে।

এ বিষয়ে গুইমারা থানার অফিসার ইনচার্জ বিদ্যুৎ বড়ুয়া জানান, বিভিন্ন মাধ্যমে বিষয়টি জেনে ফাঁড়ির ইনচার্জ আসহাফ উদ্দিনেরর নিকট বিষয়টি জানতে চেয়েছেন। প্রথমে সে অস্বীকার করলেও পরে টাকা ফেরৎ দিয়েছেন বলেছেন।

তিনি বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছেন। বিষয়টি নিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি রামগড় সার্কেল) তদন্ত করছেন এবং তদন্তের কাজ চলমান রয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন