চকরিয়ায় বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে চলছে জোয়ার-ভাটা, হুমকির মুখে বাটাখালী সেতু

fec-image

অব্যাহত ভারী বর্ষণ ও মাতামুহুরী নদীতে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের প্রভাবে কক্সবাজারের চকরিয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিশাল এলাকার বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। গতকাল শুক্রবার ভোরে উপজেলার কোনাখালী ইউনিয়নের পুরুত্যাখালী পয়েন্টে ঘটেছে এ ঘটনা।

এরপর থেকে বেড়িবাঁধের ভেঙে যাওয়া অংশদিয়ে লোকালয়ে অনায়সে প্রবাহিত হচ্ছে ঢলের পানি। এ অবস্থার কারণে উপজেলার উপকূলের সাত ইউনিয়নে বন্যা পরিস্থিতি চরম অবনতি ঘটেছে বলে দাবি করেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।

অপরদিকে ভারী বর্ষণ পরবর্তীতে লামা-আলীকদমের পাহাড় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের তান্ডবে মাতামুহুরী নদীতে ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করেছে। গত দুইদিনে নদীর দুই তীরের বিভিন্ন পয়েন্টে অন্তত ২০ থেকে ২৫ অংশে বড়ধরণের ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।

এ অবস্থায় ভাঙ্গনের কবলে পড়ে চরম হুমকির মুখে পড়েছে চিরিঙ্গা-বদরখালী-মহেশখালী সড়কের বাটাখালী সেতুটি। পাশাপাশি নদীতে বিলীন হবার পথে রয়েছে সেতুর পাশের একটি জামে মসজিদ, ওই এলাকার অন্তত ৫০ থেকে ৬০টি বসতি এবং বিপুল পরিমাণ আবাদি জমি।

ভাঙ্গনে বাটাখালী সেতুর পুর্বঅংশের এপ্রোচ অংশের মাটি সরে গেলে যে কোন মুর্হুতে চিরিঙ্গা-বদরখালী-মহেশখালী সড়কের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের চকরিয়া উপজেলার চিরিঙ্গা শাখা কর্মকর্তা (এসও) এসএম তারেক বিন সগীর। তিনি বলেন, ভারী বর্ষণ পরবর্তীতে পাহাড়ি ঢলের তান্ডবে মাতামুহুরী নদীতে ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করেছে।

পানির প্রবল ধাক্কায় গতকাল শুক্রবার ভোরে উপজেলার কোনাখালী ইউনিয়নের পুরুত্যাখালী পয়েন্টে প্রায় ৩০ মিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। এরপর থেকে বেড়িবাঁধের ভেঙে যাওয়া অংশদিয়ে লোকালয়ে অনায়সে প্রবাহিত হচ্ছে ঢলের পানি। অন্যদিকে গত দুইদিনে নদীর দুই তীরের বিভিন্ন পয়েন্টে অন্তত ২০ থেকে ২৫ অংশে বড়ধরণের ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।

বর্তমানে ভাঙ্গনের কবলে পড়ে চরম হুমকির মুখে পড়েছে চিরিঙ্গা-বদরখালী-মহেশখালী সড়কের বাটাখালী সেতুটি। পাশাপাশি নদীতে বিলীন হবার পথে রয়েছে সেতুর পাশের একটি জামে মসজিদ, ওই এলাকার অন্তত ৫০ থেকে ৬০টি বসতি এবং বিপুল পরিমাণ আবাদি জমি।

তিনি বলেন, ভাঙ্গনে বাটাখালী সেতুর পুর্বঅংশের এপ্রোচ অংশের মাটি সরে গেলে যে কোন মুর্হুতে চিরিঙ্গা-বদরখালী-মহেশখালী সড়কের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। বিষয়টি ইতোমধ্যে কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জরুরী ভিত্তিতে ক্ষতিগ্রস্থ পয়েন্টে মেরামত কাজ শুরু করতে বরাদ্দ চেয়ে পাউবোর উর্ধ্বতন বিভাগে অবহিত করেছেন। বরাদ্দ পাওয়া গেলে অতি সহসা সেখানে মেরামত কাজ শুরু হবে।

মাতামুহুরী সাংগঠনিক উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পশ্চিম বড়ভেওলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বাবলা বলেন, অবিরাম ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে এমনকিতে এলাকার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

সেখানে গতকাল ভোররাতে হঠাৎ করে মাতামুহুরী নদীর চকরিয়ার কোনাখালী ইউনিয়নের পুরুত্যাখালী পয়েন্টে পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। এরপর থেকে বেড়িবাঁধের ভেঙে যাওয়া অংশ দিয়ে অনায়সে লোকালয়ে নতুন করে ঢুকে পড়ছে বানের পানি।

তিনি বলেন, এ অবস্থার কারনে উপজেলার উপকূলীয় সাত ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। অভ্যন্তরীণ সড়কগুলো তলিয়ে যাওয়ায় সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এসব ইউনিয়নের সাথে উপজেলা সদরের।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নূরুদ্দীন মুহাম্মদ শিবলী নোমান বলেন, কোনাখালী ইউনিয়নের পুরুত্যাখালী পয়েন্টে বেড়িবাঁধের ভেঙে যাওয়ার ঘটনাটি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আমাকে জানিয়েছেন। বিষয়টি কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীকে অবগত করা হয়েছে। তিনি কথা দিয়েছেন সহসা ক্ষতিগ্রস্থ পয়েন্টের বেড়িঁবাধ মেরামত কাজ শুরু করবেন।

তিনি বলেন, উপজেলার ১৮টি ইউনিয়নের ‘বন্যার্তদের মাঝে বিতরণের জন্য জেলা প্রশাসন ৪০ মেট্টিক টন চাল ও ২০০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দিয়েছেন। এসব ত্রান সামগ্রী স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।#

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন