টেকনাফে বসত বাড়িতে ভাংচুর ও লুটপাট
কক্সবাজারের টেকনাফে উপ পরিদর্শক (এসআই) ও তার সদস্যদের লোকজনের সামনেই দুই বসত বাড়ি ভাংচুর ও লুটপাট করেছে প্রতিপক্ষ। এমন অভিযোগ করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও আশে পাশের লোকজন।
১৯ আগস্ট সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে হোয়াইক্যং ইউনিয়নের খারাংখালী নাসেরপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের লোকজন জানান, টেকনাফ থানার এসআই কামরুজ্জামানের সামনে এসব তাণ্ডব চালায় প্রতিপক্ষরা।
জানা গেছে, স্থানীয় মৃত আফালাতুনের ছেলে বাদশা মিয়া ও আব্দু রশিদের ছেলে দানু মিয়া গংয়ের সাথে মৃত ধলুর ছেলে নুর আহমদ তার ছেলে আব্দুল গফুর গংয়ের দীর্ঘ দিন ধরে প্রায় ৮০ শত জমি সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে। এ জমির জন্য মামলা মোকাদ্দমা ও বিচার সালিশ হয়েছে একাধিকবার। এর মধ্যে বাদশা ও দানুর পক্ষে প্রায় ডিক্রি আসে। এক যুগের বেশি সময় ধরে জমিটি বাদশা মিয়া ও দানু মিয়া গংয়ের দখলে রয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে ফের টেকনাফ অভিযোগ দায়ের করে নুর আহমদ গং। সে সূত্রে মামলা থাকা সত্ত্বেও টেকনাফ থানার এসআই কামরুজ্জামান খোদ অবস্থান নিয়ে নুর আহমদ গংদের সীমানা প্রাচীর তৈরি করে দেয়।
পুলিশ ঘটনাস্থল ত্যাগ করা মাত্রই উভয় পক্ষের মধ্যে মারামারি লেগে যায়। এতে অনেকে আহত হন। নুর আহমদ গং বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় মামলা রুজু করেন। অপর দিকে বাদশা মিয়া বাদী হয়ে বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করে। টেকনাফ থানার মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তাও ওই এসআই। তিনি বেশ কয়েকজন আসামীকে জুমার নামাজরত অবস্থায় গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করে।
এ ব্যাপারে এসআই কামরুজ্জামানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,‘আমি ঘটনাস্থলে রয়েছি, জমিটি পরিমাপ করে সীমানা প্রাচীর দেওয়া হচ্ছে। বিরোধীয় জমিতে আপনি কি এটা পারেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনি যা লিখার লেখেন পুলিশ এসব চিন্তা করেনা।
গত ১৪ আগস্ট আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন লাভ করে অনেকে দানু ও বাদশা মিয়া গংরা।
ফের নুর আহমদ গংরা টেকনাফ থানার এসাআই কামরুজ্জামান ও তার দল নিয়ে প্রতিপক্ষের বাড়িতে হানা দেয় বলে জানান বাদশা মিয়ার স্ত্রী আয়েশা বেগম। পুলিশের সাথে নুর আহমদ গংরাও ছিলেন।
তিনি আরো বলেন, কোনো কারণ ছাড়া পুলিশ বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বাদশা মিয়াকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। অথচ বাদশা মিয়া জামিনে রয়েছেন। এ সময় নুর আহমদ, ছেলে আব্দুল গফুর ও তার ছেলে আব্দু রহমান, আব্দু রহিম, নজির আহমদ, রুপা ও জমিলা মিলে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দ্বারা বাড়িতে ব্যাপক তান্ডব চালায়। গ্যাস সিলিন্ডার সহ দামি দামি জিনিসপত্র লুট করা হয়। ৩য় শ্রেণীর ছাত্রী সুমাইয়া ও ৫ম শ্রেণীর ছাত্রী রোকসানাকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করা হয়।
স্থানীয় শফিক আলম জানান, ওই এসআই এর আগেও নামাজরত অবস্থায় জুমার দিনে গেইট বন্ধ করে আসামির নামে ধরপাকড় চালায়। যা ধর্মীয় অনুভূতি আঘাতের শামিল। এ ব্যাপারে মুসলিম জনতা ক্ষুব্ধ রয়েছে বলে জানা গেছে।
জানতে চাইলে আব্দুল গফুর এসব অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে বলেন, ভাংচুর আমদের উপর বর্তাচ্ছে। মূলত টেকনাফ থানার এসআই কামরুজ্জামান আসামি ধরার জন্যে বাড়িতে অভিযান চালান। এ সময় ১নং আসামি বাদশা মিয়াকে ধরে নিয়ে যান বলে জানান তিনি।
হোয়াইক্যং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হারুনর রশিদ সিকদার বিষয়টি শুনেছে জানিয়ে বলেন, এ ব্যাপারে এলাকায় আলোচনা ও সমালোচনা চলছে। এ ব্যাপারে টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
এ ব্যাপারে টেকনাফ থানার এসআই কামরুজ্জামানের কাছে জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার কারে বলেন, আমি কক্সবাজারে রয়েছি।