টেকনাফ সীমান্তে রোহিঙ্গা লাশের সংখ্যা দাঁড়াল ৩৯

টেকনাফ প্রতিনিধি:
টেকনাফে নাফ নদীর বিভিন্ন এলাকা থেকে আরও ১৬ জন রোহিঙ্গা নারী-শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের গোদামপাড়া, ওয়াব্রাং, মৌলভীবাজার ও শাহপরীর দ্বীপ এলাকা থেকে এসব মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।

এর আগে গত বুধবার শাহপরীরদ্বীপে দুই নারী শিশুসহ ৪জন, বৃহস্পতিবার ১০ নারী ৯ শিশুসহ ১৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গত তিন রোহিঙ্গা লাশের সংখ্যা দাঁড়াল।

টেকনাফ হ্নীলা ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী জানান, শুক্রবার ভোর থেকে হ্নীলার নাফ নদীর গোদামপাড়া, ওয়াব্রাং, মৌলভীবাজার পয়েন্টে কিছু মৃতদেহ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা আমাকে জানালে আমি বিজিবিকে খবর দেই। পরে বিজিবি ঘটনাস্থলে এসে মৃতদেহগুলো উদ্ধারের চেষ্টা চালায়।

টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাঈন উদ্দিন জানান, শুক্রবার সকালে নাফ নদীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ১৬ জন নারী ও শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এরমধ্যে ৯ জন শিশু ও ৭ জন নারী রয়েছে।

এরমধ্যে ১ জনকে শাহপরীর দ্বীপে থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। বিজিবি’র মাধ্যমে খবর পেয়ে টেকনাফ থানা থেকে পুলিশের একটি দল সেখানে গিয়ে মৃতদেহগুলো উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে।

এর আগে গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপ থেকে পৃথকভাবে ২৩ জন নারী ও শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এ নিয়ে মোট ৩৯ জন রোহিঙ্গা নারী ও শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করা হলো।

উল্লেখ্য, গত ২৪ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বিদ্রোহী গ্রুপের সঙ্গে সে দেশের সেনা বাহিনীর সহিংস ঘটনার পর সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে দলে দলে রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করতে থাকে। একইভাবে নাফ নদীর বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে জলসীমানা অতিক্রম করে রোহিঙ্গারা নৌকা নিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করার চেষ্টা করছে।

প্রসঙ্গত, গত বছরের অক্টোবরে সীমান্তরক্ষীদের চৌকিতে হামলার পরেই রাখাইনের গ্রামে-গ্রামে অভিযান চালায় দেশটির সেনাবাহিনী। এ সময় নির্বিচারে রোহিঙ্গা হত্যা, নির্যাতন, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের মত মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয় বলে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ উঠে।

সেনা অভিযানের মুখে প্রাণ বাঁচাতে গত অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৮৭ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা। গত কয়েক দশকে ৫ লাখের বেশি রোহিঙ্গা এদেশে আশ্রয় নিয়েছে বলে দাবি সরকার।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন