তাইন্দংয়ে গৃহবধূ হত্যা : ঘাতক স্বামী পলাতক

Foloup

মুজিবুর রহমান ভুইয়া : 

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার তাইন্দংয়ে যৌতুকের দাবীতে স্বপ্না আকতার মুক্তা (৩০) নামে এক গৃহবধূকে হত্যার ১৮ ঘন্টা পরে শনিবার দুপুরে নিহতের বড় ভাই মো: সোহেল বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ১১ (ক) ধারা মতে ঘাতক স্বামী মো: কামাল হোসেন সহ দুই জনের বিরুদ্ধে মাটিরাঙ্গা থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

জানা গেছে, ২০০০ সালের ৯ এপ্রিল পারিবারিক ভাবেই মাটিরাঙ্গা উপজেলার তাইন্দংয়ের মাইজপাড়া গ্রামে ডা: আজগর আলীর ছেলে মো: কামাল হোসেন‘র সাথে বিয়ে হয় ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার প্রবাসী মো: জিল্লুর রহমান এর কণ্যা স্বপ্না আকতার মুক্তা‘র। বিয়ের পর থেকেই মোটা অঙ্কের যৌতুক দাবী করতে থাকে ঘাতক স্বামী মো: কামাল হোসেন।

মামলার বাদী ও নিহতের বড় ভাই মো: সোহেল পার্বত্যনিউজকে জানান, বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন সময়ে ভগ্নিপতি কামাল হোসেন আমার বোনের কাছে মোটা অঙ্কের যৌতুক দাবী করে তার উপর নির্মমভাবে নির্যাতন চালায়। আমরা বোনের সুখের কথা বিবেচনা করে বিভিন্ন সময়ে তাকে ছয় লাখ টাকা প্রদান করি। দীর্ঘদিন ধরে সে আরো পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক দাবী করে আসছিল। যৌতুকের টাকা না দেয়ার কারণেই আমার বোনকে নির্মমভাবে জীবন দিতে হলো। তিনি তার বোনের হত্যাকারী ঘাতক স্বামীর বিচার দাবী করেন।

এদিকে ঘটনার জানাজানি হলে মাটিরাঙ্গা থানা পুলিশ লাশের সুরত হাল করতে গেলে তবলছড়ি পুলিশ ফাঁড়ির তদন্ত কর্মকর্তা এস আই গোলাম মোরশেদ সরকারের সাথে খারাপ ব্যবহার করে বলে ঘটনাস্থলে উপস্থিত একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। এদিকে রাতভর অনেক দেনদরবার, নানা নাটকীয়তা আর ঘাতক স্বামী ও তার আত্মীয়-স্বজনের বাঁধার মুখে নিহত স্বপ্না আকতার মুক্তা‘র বড় ভাইসহ আত্মীয়-স্বজনের উপস্থিতিতে শনিবার সকালে পুলিশ নিহতের সুরত হাল করে।

এদিকে লাশের সুরত হাল করার পর থেকেই উধাও হয়ে যায় ঘাতক স্বামী মো: কামাল হোসেন তার সহযোগী। তারা দুজনেই এখন পলাতক রয়েছে। বন্ধ রয়েছে তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনগুলো।

মাটিরাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: মাইন উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, লাশ ময়না তদন্তের জন্য খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশী চেষ্ঠা চলছে বলেও জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, গত বুধবার রাতে স্বামী ডা: কামাল হোসেন মদ্যপ অবস্থায় ঘরে প্রবেশ করে দাবীকৃত যৌতুকের দাবীতে স্ত্রীকে বেধরক মারধর করে। শারিরীক নির্যাতনে স্ত্রী স্বপ্না আকতার মুক্তা অসুস্থ হয়ে গেলে পল্লী চিকিৎসক স্বামী নিজেই স্বপ্না আকতার মুক্তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করেন। তার অবস্থার অবনতি হলে শুক্রবার বিকালের দিকে তাকে পানছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে স্বপ্না আকতার মুক্তা (৩০) মারা যায়।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন