শিগগিরই পুনর্গঠন হতে যাচ্ছে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ

Distric-640

জেলা প্রতিনিধি, রাঙামাটি :

শিগগিরই পুনর্গঠন হতে যাচ্ছে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ। এ লক্ষ্যে সংসদের চলতি অধিবেশনেই সংশোধনী বিল পাস হতে পারে। নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো এ খবর নিশ্চিত করেছে। এবার চেয়ারম্যানসহ প্রত্যেক পরিষদে ৫ থেকে ১১ সদস্যে উন্নীত করে পরিষদ তিনটি পুনর্গঠন করতে যাচ্ছে সরকার।

 

 

সংসদে তিনটি পরিষদের পৃথক তিন সংশোধনী বিল পাস হলে শিগগিরই পুনর্গঠন করা হবে চেয়ারম্যানসহ ১১ সদস্যের তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান। আগে পরিষদ সংক্রান্ত আইন বলে সরকার দলীয় লোক দিয়ে ১জন চেয়ারম্যান ও ৪ জন সদস্য দিয়ে পরিষদগুলো পরিচালনা করা হতো। এখন থেকে পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত একজন চেয়ারম্যানসহ ১১ সদস্য দিয়ে পরিষদ তিনটি পরিচালিত হবে। প্রত্যেক পরিষদে চেয়ারম্যান নিয়োগ পাবেন উপজাতিদের মধ্য হতে। এছাড়া ১০ সদস্যের মধ্যে হবেন উপজাতি ৭ জন এবং অ-উপজাতি ৩ জন। সদস্য সংখ্যা নির্ধারণ করা হবে জনগোষ্ঠী ও জনসংখ্যা অনুসারে।

যেমন রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদে উপজাতি সদস্যদের মধ্যে থাকবেন তিনজন চাকমা, একজন মারমা, একজন খিয়াং ও লুসাই থেকে, তঞ্চঙ্গ্যা থেকে একজন এবং ত্রিপুরা থেকে একজন। খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদে চাকমা তিনজন, মারমা দুইজন এবং ত্রিপুরা দুইজন। বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদে মারমা দুইজন, তঞ্চঙ্গ্যা ও চাকমা থেকে একজন, মুরং একজন, ত্রিপুরা একজন, চাক, খিয়াং ও খুমি থেকে একজন এবং বম, লুসাই ও পাংখোয়া থেকে একজন।

এদিকে পরিষদগুলোতে চেয়ারম্যান ও সদস্য পদে মনোনয়ন পেতে সরকারের উচ্চ মহলে জোর লবিং-তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন মনোনয়ন প্রত্যাশিরা। একটি সূত্র জানিয়েছে, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদে বর্তমান চেয়ারম্যান কৈশহ্লা মারমাকে চেয়ারম্যান পদে পুন:নিয়োগের বিষয়টি অনেকটা নিশ্চিত। রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে বর্তমান চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতা নিখিল কুমার চাকমা এবং বর্তমান সদস্য অংস্ইুপ্রু চৌধুরীকে। এ দু’জনের মধ্যে আওয়ামী লীগের তৃণমুল থেকে শুরু করে জেলা পর্যায়ে প্রায় নেতাকর্মী এবং এলাকার বেশিরভাগ জনগণ নিখিল কুমার চাকমাকে আবারও চেয়ারম্যান পদে বহাল রাখতে চান বলে জানা গেছে।

খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদে বর্তমান চেয়ারম্যান জেলা আওয়ামী লীগ সহসভাপতি চাইথোয়াই অং মারমা ও রণবিক্রম ত্রিপুরার নাম শোনা যাচ্ছে।

এছাড়া রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদে সদস্য পদে মনোনয়ন পেতে লবিং-তদবিরে রয়েছেন প্রিয়নন্দ চাকমা, সুবীর চাকমা, সমরেশ দেওয়ান, প্রবর্তক চাকমা, স্মৃতি বিকাশ ত্রিপুরা, নিউচিং মারমা, যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা মুজিবুর রহমান দীপু, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মুছা মাতব্বর, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মতিন, অমর কুমার দে, আশুতোষ বড়ুয়া, সুনীল কান্তি দে, বাদল দেসহ অনেকের নাম শোনা যাচ্ছে। তাদের মধ্যে যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা মুজিবুর রহমান দীপুর ব্যাপারে জেলা ও উপজেলা যুবলীগ এবং ছাত্রলীগসহ দলের তৃণমুল নেতাকর্মীরা জোরালো সুপারিশ করেছেন বলে জানা গেছে। তার ব্যাপারে একাধিক মন্ত্রী, এমপিও সুপারিশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী বরাবরে। এছাড়া স্থানীয় সাংবাদিক সমাজ থেকে রাঙ্গামাটি রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সুশীল প্রসাদ চাকমাকে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য পদে মনোনীত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপির বরাবরে প্রস্তাবনা পাঠিয়েছেন জেলায় কর্মরত সব সংবাদকর্মী, সুশীল সমাজের নেতা, আইনজীবী, শিক্ষক, এনজিও প্রতিনিধি, ইউপি চেয়ারম্যান, সদস্য ও মৌজা হেডম্যান, কারবারিসহ স্থানীয় নেতারা। সূত্র জানায়, ইতিমধ্যে পার্বত্য তিন জেলার অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের পরিসর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে।

সংসদে আইন সংশোধনী বিল পাস হলেই বর্ধিত পরিসরে পুনর্গঠন করা হবে পরিষদ তিনটি। এজন্য সংসদের চলতি অধিবেশনেই বিল তিনটি পাস হয়ে যেতে পারে। সংসদে বিল তিনটি পাস হলে এখন থেকে পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠান না হওয়া পর্যন্ত রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলায় প্রত্যেক অন্তর্বর্তীকালীন জেলা পরিষদে একজন চেয়ারম্যান ও ১০ সদস্য নিয়ে পরিষদ তিনটি পরিচালিত হবে।  

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: খাগড়াছড়ি, তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ, বান্দরবান
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন