Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

থ্রী-জি সেবার নামে প্রতারণায় চরম ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা: নেটওয়ার্ক চলে ঠেলা গাড়ির গতিতে

network1473660550

টেকনাফ প্রতিনিধি:

কক্সবাজার জেলায় মোবাইল কোম্পানীর থ্রি-জি সেবা বর্তমানে জিরো-জি’তে পরিণত হয়েছে। রবি ও গ্রামীণে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা চরম হতাশায় পড়েছে। এ দুই কোম্পানীই সর্বত্র থ্রি-জি চালুর প্রচার করলেও শুধু মাত্র টু-জি’তে সিমাবদ্ধ রয়েছে। আবার তা নামে মাত্র থ্রি-জি। অনেকে দুঃখ করে বলেন, জীবনে অনেক প্রতারণায় পড়েছি, এবার থ্রীজি প্রতারণায় শিকার হলাম আমরা

আবদুর রহমান চৌধুরী নামের একজন গ্রাহক বলেন, ইন্টারনেট নির্ভর কাজ করতে গিয়ে প্রচন্ড বেগ পেতে হচ্ছে। এখানে নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট গতির কোন পরিবর্তন আসেনি। শুধু প্রতারনামূলক বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে থ্রী-জি সিম বলে বিক্রি করা হলেও তার সুফল পাচ্ছেনা গ্রাহকরা। গ্রামীণ কোম্পানী নাম হলেও কক্সবাজার জেলার অনেক গ্রাম এখনো রয়ে গেছে নেটওয়ার্কের বাইরে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ‘গ্রামীণ ফোন থ্রি-জি, ইচ্ছা হলেই চলো বহুদূর’, রবি ‘জ্বলে উঠুন আপন শক্তিতে’-গণমাধ্যমে এরকম নানান চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে নজর কাড়তে সক্ষম হলেও কাঙ্খিত সেবা দিতে পারছে না এ কোম্পানি গুলো। এতে করে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন থ্রিজি’র গ্রাহকরা। এমনটাই জানিয়েছেন নিম্নমানের সেবায় ক্ষুব্ধ গ্রাহকদের অনেকে। অথচ সেবার নামে নির্ধারিত অর্থ কেটে নিতে এতটুকু কার্পণ্য নেই তাদের। গ্রামীণ ফোন ও রবি থ্রিজি প্যাকেজ ব্যবহার করেন, এমন কয়েকজন গ্রাহকের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্রই পাওয়া গেছে।

রবি কোম্পানীর থ্রিজি ব্যবহারকারী আখতার হোসেন রিয়াদ এ প্রতিবেদককে বলেন, ফেসবুক বা কোনো ওয়েবসাইটে ঢুকতে চাইলে অপেক্ষা করতে হয় টু-জি গ্রাহকদের মতোই। থ্রি-জি ও টু-জির কোনো পার্থক্য বুঝতে পারি না। কক্সবাজার শহরের বৈদ্যঘোনা এলাকার অবস্থা আরও ভয়াবহ উল্লেখ করে আরফাত বলেন, সেখানে কখনও থ্রিজি আবার কখনও টুজির সিম্বল ভেসে ওঠে। গতি খুবই কম।

অপরদিকে টেকনাফের হ্নীলা রংগীখালী এলাকার শাখাওয়াত হোসেন নামের একজন গ্রাহক বলেন, টেকনাফ উপজেলায় মোবাইল নেটওয়ার্ক কোম্পানী গ্রামীণ এর চেয়ে রবি’র গ্রাহক অনেক গুণ বেশী হলেও সেবার দিকে রবি অত্যান্ত পিছিয়ে বলে মনে করছেন গ্রাহকরা। রবি’র টাওয়ার প্রায় সময় পাওয়ার শূন্য হয়ে থাকে। ভাসা ভাসা নেটওয়ার্ক দিয়ে কথা বলতে গিয়ে প্রতিনিয়ত বিড়ম্বনার শিকার হয় গ্রাহকরা। বার বার নেটওয়ার্ক বিপর্যয়, অবাঞ্চিত বিল, অপ্রত্যাশিত কোম্পানী নম্বর থেকে কল ও ম্যাসেজ এর ভারে নুব্জ্য হয়ে পড়ে রবির গ্রাহকরা। এসব বিষয় নিয়ে কোম্পানীর দেয়া হেল্প লাইনে অভিযোগ জানাতে গেলে গুণতে হয় প্রায় অর্ধশত টাকা এবং দীর্ঘ সময়। এ বিড়ম্বনা থেকে মুক্তি পেতে টেকনাফে আশংকা জনক হারে হ্রাস পাচ্ছে রবির গ্রাহক। রবি সিম বদলে গ্রাহক হচ্ছে অন্যান্য অপারেটরের। এক্ষেত্রে টেকনাফস্থ রবি ডিলার এর পক্ষ থেকে ঘাম ঝরা কষ্ট করেও কাঙ্খিত অর্জন ধরে রাখতে হিমশিম খাচ্ছে বলে জানা গেছে। এ অবস্থার পরিবর্তন না হলে আগামীতে টেকনাফ উপজেলায় রবির অর্জিত সুনাম নষ্ট হয়ে গ্রাহক শূন্য হয়ে পড়ার আশংকা করছেন বিজ্ঞজন। মোবাইল নেটওয়ার্ক কোম্পানীর অসহনীয় প্রতারনা থেকে মুক্তি ও উন্নত নেটওর্য়াকিং এর আওতায় আনার দাবী জানিয়েছেন সচেতন মহলও।  শাখাওয়াত নামের এই গ্রাহক ক্ষুব্ধ হয়ে তার ফেসবুক পাতায় লিখেছেন, ‘রবি নামে প্রতারণা , ভোগান্তিতে আছে সহস্রাধিক ইন্টারনেট ব্যবহারকারী। এখন সময় থ্রিজির। আছে দেশ-দেশান্তরে আপনজনের সাথে যোগাযোগের অনেক সহজ মাধ্যম।

খুব বেশী গতিতে নেট ব্যবহার করার সুযোগ গ্রাহকের। সময়ের সাথে সাথে বদলে যাওয়া পৃথিবীর গতির সাথে পায়ে পা রেখে চলার প্রবল আগ্রহী দেশের সকল শ্রেণির মানুষ। তাই তারা ইন্টারনেট ব্যবহার করতে সংগ্রহ করছে পছন্দের (দামী) ইলেকট্রিক ডিভাইস। কিন্তু এত স্লো যদি হয় নেটওয়ার্কের গতি, তাহলে কিভাবে নেট ইউজ করবে কাংখিত গ্রাহকরা?’

দ্রুত গতিতে নেট ব্যবহার করার বদলে গ্রাহকরা এখন সম্পূর্ণভাবে ভোগান্তিতে সময় পার করে যাচ্ছে। রবিসহ বিভিন্ন নেটওয়ার্ক সার্ভিস কোম্পানির বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ এনেছে হ্নীলা-রংগীখালী এলাকার সহস্রাধিক নেট ব্যবহারকারী।

সর্বোপরি, সরকার এবং কর্তৃপক্ষের প্রতি সহস্রাধিক গ্রাহকের জোর দাবী ‘যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে দ্রুত নেটওয়ার্ক সমস্যা দূর করে সঠিক সেবা প্রদানের মাধ্যমে দেশ ও জাতির উন্নয়নে সঙ্গে থাকার”।

একই এলাকার এনজিও কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন রাজু লিখেছেন, টেকনাফ থানার অন্তর্গত হ্নীলা ইউনিয়নের রংগীখালীতে রবির থ্রি জি প্রতারণা সহনীয় মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। মন চাই রবি সিমটা পাল্টিয়ে ফেলি।

রামু ঈদগড়ের স্থানীয় এক সংবাদকর্মী আবুল কাশেম লিখেছেন, আমার এখানে রবি সিম ফেলে দিয়েছি, টাওয়ারের নিচেও নেট স্লো।

শহরে কর্মরত সংবাদকর্মী সাইফুল আলম বাদশা লিখেছেন, রবি আর রবি নাই, নামকরণ করে শনি করে দিলে মনে হয় স্পিড হবে।

জিয়াউর রহমান নয়ন নামে একজন গ্রাহক পেইসবুকে লিখেছেন, থ্রি-জি নামে রবির বাটপারি ছাড়া আর কিছুই নয়…..।

তারেক নামে এক কলেজ ছাত্র লিখেছেন, শপথ করে ফেলেছি, রবি সিম নিয়ে আর কোন কাজ করব না, ব্যাস এতটুকু ছাড়া আর বলার কিছুই নেই।

টেকনাফের সিনিয়র সাংবাদিক প্রথমআলো প্রতিনিধি গিয়াস উদ্দিন লিখেছেন, প্রতিটি কোম্পানি সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছে। অনেক সময় দেখা গেছে এমবি নেওয়ার পর এমবি উধাও। সে ব্যাপারে কথা বলতে গেলে আরও টাকা ব্যয় হয়। কথা হচ্ছে এদেশের মানুষ হল হালের গরু।

সংবাদকর্মী বাবুল মিয়া মন্তব্য করেছেন, কিসের থ্রি-জি, ‘ই’ ছাড়া কিছু আসেনা। মরিচ্যা, রামু, কক্সবাজার সব খানে রবির প্রতারণা।

সরওয়ার কামাল নামের একজন ব্যবসায়ী লিখেছেন, লিখা আছে, পড়া নেই। থ্রিজি আছে চালু নেই। গরিবের বাড়ী, ছাউনের ছানি, এয়ারকন্ডিশন খাওয়ার শখ কত?

ক্ষুব্ধ হয়ে কক্সবাজারের সংবাদকর্মী এইচ.এম নজরুল ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন, রবি কোম্পানীর জন্ম হল বেঈমানী করার জন্য। তিনি আরো লিখেছেন, দ্রুতগতির থ্রিজি ও মুলাতত্ত্ব!

‘ভাই হা হয়ে গেলাম, ইন্টারনেটের দাম কমবে ভেবেছিলাম। কিন্তু একি! এখন দেখি দাম আরো বাড়ানো হয়েছে। হা বাড়ালে অসুবিধা নেই কিন্তু সার্ভিস ভাল নেট ব্যবহারে কথামত থাকতে হবে তো। তারপরেও কী দ্রুতগতির সাশ্রয়ী ইন্টারনেট মুলা ঝোলানোর কারবার শুরু করেছে? এভাবেই নিজের অভিমত ব্যক্ত করেন নজরুল।

এভাবেই গ্রাহকরা তিক্ততা তুলে ধরে এই কোম্পানীগুলোর উপর ফুঁসে উঠেছে যার ফলে যে কোন মুহুর্তে থ্রি-জি’র নামে প্রতারণা বন্ধে ও নেটওয়ার্ক কার্যক্রম আরো বৃদ্ধি করতে আন্দোলনে যেতে পারে বলে অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তাই মোবাইল কোম্পানীগুলোর প্রতি দ্রুত থ্রিজি সার্ভিস এর মাধ্যমে গ্রাহক সেবা বৃদ্ধি ও নেটওয়ার্ক সবসময় সচল রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট গ্রাহকরা।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন