Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

দুষ্কৃতিকারীরা সরকারের ছত্রছায়ায় থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে: সন্তু লারমা

রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি:

পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান ও জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা প্রকাশ সন্তু লারমা বলেছেন, ষড়যন্ত্রকারীরা সরকারের ছত্রছায়ায় থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।

শনিবার (১০ নভেম্বর) পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির প্রতিষ্ঠাতা মানবেন্দ্র নারায়ন লারমা এর ৩৫তম মৃত্যুবাষির্কী পালন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

তিনি বলেন, চুক্তি স্বাক্ষরের পর এ পর্যন্ত জনসংহতি সমিতির ৮৯ নেতা কর্মীকে ইউপিডিএফ হত্যা করেছে। আমরা ঘাতকদের ধিক্কার জানাই। জুম্মদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় যারা জীবন দিয়েছে তাদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ এবং তাদের সম্মান ও স্মরণ করছি।

সকাল ১০টায় শিল্পকলা একাডেমী হল রুমে আয়োজিত মৃত্যু বাষির্কী পালন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, কিশোর কুমার চাকমা, সহ-সভাপতি, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন, সংসদ সদস্য উষাতন তালুকদার, ও সহ-সভাপতি, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি, প্রকৃতি রঞ্জন চাকমা, সভাপতি পার্বত্য চট্টগ্রাম আদিবাসী ফোরাম, কেন্দ্রীয় কমিটি, গুনেন্দু বিকাশ চাকমা, সদস্য পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ, গৌতম কুমার চাকমা, সদস্য, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি, কেন্দ্রীয় কমিটি, প্রফেসর মংসান চৌধুরী, নিরূপা দেওয়ান, শিক্ষাবিদ ও মানবাধিকার কর্মী ও মিনা চাকমা, সভাপতি হিল উইমেন্স ফেডারেশন কেন্দ্রীয় কমিটি।

সন্তু লারমা বলেন, ১৯৮২ সালে বিভেদপন্থীরাই চেয়েছিল নের্তৃত্ব তাদের হাতে নিয়ে যেতে, সেই বিভেদপন্থীরাই জুম্মজাতির মহান নেতা মানবেন্দ্র নারায়ন লারমাকে হত্যা করেছে, আমরা তাদের চিনি। তারাই সরকারের সাথে আঁতাত করে জুম্মদের অধিকার ধ্বংস করছে।

তিনি আরও বলেন, ২১ বছর আগে পার্বত্য চুক্তি হয়েছে, কিন্তু বাস্তবায়নে এতো দ্বিধা কেন? পরিস্থিতিরও মৌলিক পরিবর্তন হয়নি। দিন বদলে গেছে, পাহাড়ের মানুষ গামছা পড়ার দিন ফেলে এসেছে। আমরা চাই সেই নতুন জীবন ধারা, যেখানে থাকবেনা মতবিরোধ, নির্যাতন, নিপীড়ন, হানাহানি। তিনি মানবেন্দ্র নারায়ন লারমার সেদিনের কথা স্মরণ করে বলেন, সেদিন ছিল মেঘাচ্ছন্ন আকাশ, আবহাওয়ায় ছিল সতর্ক সংকেত, পরিবেশ ছিল দুর্যোগের। বিভেদ পন্থীরা তাঁকে হত্যা করেছিল। শুধু তাই নয় তারা গ্রেনেড ছুঁড়ে মেরেছিল বিস্ফোরন না হওয়া আমি ও আমার সঙ্গীরাসহ বেঁচে যাই। সেদিন মহান নেতার মৃত্যু স্মৃতি এখনো আমাকে তাড়িয়ে বেড়ায়। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীদের কোনো ক্ষমা নেই। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি ২৫ বছর আগে যেভাবে ছিল বর্তমানেও একই বলে উল্লেখ করেন।

এসময় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য উষাতন তালুকদার বলেন, পার্বত্য মন্ত্রণালয় হলো ঢালা নাই তলোয়ার নাই নিধিরাম সর্দার। বর্তমানে সংকট অবস্থা বিরাজ করছে তাই আসুন সমাধানে। আমাদের হাতেও সময় নেই। আমরাও দেশের উন্নয়ন চাই।

উষাতন তালুকদার বিভেদ পন্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, মতানৈক্য থাকবে কিন্তু সেটি চরম নয়, তাই আসুন শান্তির জন্য একাট্টা হই। মানবেন্দ্র নারায়ন লারমা যেমন দেশ প্রেমিক ছিলেন তেমনি মানুষের অত্যাচার নিপীড়ন ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে ছিলেন অকুতোভয়। জুম্মজাতিকে গভীরভাবে উপলদ্ধী করতে হবে মানবেন্দ্র নারায়ন লারমা কী চেয়েছিলেন। কেন তাঁর জীবন যৌবন বিসর্জন দিয়েছিলেন। তিনি অত্যাচার নিপীড়ণ নির্যাতনের বিরুদ্ধে গিয়ে শান্তির জন্য সংগ্রাম করেছিলেন। অথচ নের্তৃত্বে ও অধিকার আদায়ে অবিচল থাকায় দেশী বিদেশী ষড়যন্ত্রের কারণে তাঁকে প্রাণ দিতে হলো। ভাই ভাই দ্বন্দ্ব ভুলে হানাহানি বন্ধ করতে হবে। পার্বত্য চুক্তির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকারের ভুল নীতি ও কৌশলের কারণে চুক্তি পূর্ণ বাস্তবায়ন হচ্ছে না। তাই পাহাড়ে মানুষের মনে অজানা ভয়ের কাজ করছে।

এসময় অন্যান্য বক্তারা বলেন, অধিকার কেউ কাউকে দেয় না, আদায় করে নিতে হয়। বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির জনক এদেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান। এদেশের স্বাধীনতার শত্রুরা তাঁকে স্বপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। শুধু তাই নয়, এখনো তারা ষড়যন্ত্র করছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে জুম্মদের মহান নেতা মানবেন্দ্র নারায়ন লারমা এখানের ষড়যন্ত্রকারীদের শিকার। নষ্ট রাজনীতি তাঁকে ছুঁতে পারেনি। তাঁর আদর্শ ধারণ করেই নের্তৃত্বকে এগিয়ে নিতে হবে।

এর আগে সকালে শ্যোক র‌্যালি করা হয়, পরে শিল্পকলার বটতলায় মানবেন্দ্র নারায়ন লারমা এর শ্রদ্ধা বেধিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতিসহ সর্বস্তরের মানুষ ফুলেল শুভেচ্ছা জানায়। তিন পার্বত্য জেলাসহ সকল উপজেলাতেও মৃত্যু বার্ষিকী পালন করে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন