দৃষ্টি প্রতিবন্ধী জাহিদ ব্যারিস্টার হতে চায়
নিজস্ব প্রতিবেদক:
চোখের আলো না থাকলেও জ্ঞানের আলোতে জীবন আলোকিত করতে চাই দৃষ্টি প্রতিবন্ধী জাহিদ হোসেন। হাসি ফুটাতে চায় দরিদ্র মা ও ভাইয়ের চোখে। প্রমাণ দিতে চাই দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরাও সুযোগ পেলে অনেক কিছু করার ক্ষমতা রাখে। স্বপ্ন ব্যারিস্টার হবার। বান্দরবান সমাজ সেবা অধিদপ্তর পরিচালিত সমন্বিত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষা কার্যক্রম আবাসিক থেকে এবার এসএসসি পরিক্ষায় অংশ নিয়েছে জাহিদ হোসেন। শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনানুযায়ী একই স্কুলের অষ্টম শ্রেনী পড়ুয়া মোস্তাফিজুর রহমান শ্রুতি লেখক হিসেবে পরিক্ষায় অংশ নিয়েছেন। ইংরেজী ২য় পত্র পরিক্ষা দিয়ে বের হবার সময় দেখা হয় জাহিদ হোসেনের সাথে।
জাহিদ জানান, দুই ভাইয়ের মধ্যে সে বড়। চার বছর বয়সে জাহিদ হঠাৎ করে চোখ লাল হয়ে যায় এবং ডাক্তারে ভূল চিকিৎসার কারণে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলে। পরে অনেক চিকিৎসা করেও চোখের আলো ফিরে পায়নি। ২০০০ সালে সে পার্বত্য জেলা বান্দরবানের সুয়ালক সমন্বিত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী আবাসিক শিক্ষা কার্যক্রম স্কুলে ভর্তি হন। জাহিদ এর কথার শুরুতেই কৃতজ্ঞতা জানান তার শিক্ষক ও বন্ধুদের প্রতি। যাদের সহায়তার লেখাপড়া চালিয়ে নিতে সক্ষম হচ্ছেন তিনি।
জাহিদ জানান, দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদেরকে সমাজের সবস্থরে প্রতিনিয়ত অবহেলার শিকার হতে হয়। কিন্তু অন্ধরাও এই সমাজের মানুষ। সুযোগ পেলে তারাও প্রতিভার স্বাক্ষর রাখতে পারে। অনেক অশ্রুভেজা কণ্ঠে জাহিদ বলেন আজ যারা আমাকে বিভিন্নভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করে লেখাপড়ার সুযোগ করে দিয়েছেন আমিও সুযোগ পেলে তাদের পাশে দাঁড়াতে চাই।
সমন্বিত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষা কার্যক্রমের শিক্ষক সত্যজিৎ মজুমদার জানান, জাহিদ খুব মেধাবী ছাত্র। পড়ালেখার প্রতি সে অত্যন্ত মনযোগী। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হলেও সে দিনের পড়া দিনেই শেষ করে। এস.এস.সি পরীক্ষায়ও সে ভাল ফলাফল করবে। ইতিপূর্বে পি.এস.সি ও জে.এস.সি তে সে সাধারন গ্রেডে বৃত্তি লাভ করেছে। তাছাড়া গান, বাজনা এবং বিতর্ক প্রতিযোগীতায় ও সাফল্য লাভ করেছে।
পরীক্ষা ভাল হচ্ছে উল্লেখ করে জাহিদ জানান, পড়ালেখা চালিয়ে নিতে পারলে তার ব্যারিষ্টার হওয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারবে। জাহিদের শখ লেখাপড়ার পাশাপাশি কম্পিউটার শেখা। একটি নতুন জস সফটওয়্যার সমৃদ্ধ ল্যাফটপ পেলে পড়া মুখস্থ করতে সুবিধা হবে। বিত্তবানদের সহায়তা চান জাহিদ।