ধর্ষিত হয়ে অন্তসত্ত্বা হওয়া ৫ম শ্রেণীর ছাত্রীর রক্তক্ষরণে মৃত্যু

fec-image

মৃত্যু

লামা প্রতিনিধি:

বান্দরবানের লামা উপজেলার রুপসীপাড়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড মাষ্টার পাড়া এলাকার ৫ম শ্রেণীর ছাত্রী সুমাইয়া আক্তার(১২) তার খালাত ভাই কর্তৃক ধর্ষিত হয়েছে। ধর্ষনের ফলে অনাকাঙ্খিত গর্ভের সন্তান নষ্ট করতে পরিবারের লোকজন পাহাড়ি ঔষধ ব্যবহার করলে প্রচুর রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয় বলেও জানা যায়।

সুমাইয়া লামা উপজেলার রুপসীপাড়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড মাষ্টার পাড়া এলাকার আলী আকবর(৫৫) ও লুৎফা বেগমের(৪৮) মেয়ে। সুমাইয়া মাতামুহুরী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর ছাত্রী। অভিযুক্ত ধর্ষক তাজুল ইসলাম(২৩) একই এলাকার শামসুল হক এর ছেলে।

সুমাইয়ার মা লুৎফা বেগম(৪৮) বলেন, ‘ধর্ষক তাজুল ইসলাম সম্পর্কে আমার ভাগিনা হয়। প্রায় ৪ মাস আগে আমার ছোট মেয়ে সুমাইয়া বাড়ির উপরে পাহাড়ে গেলে সেখানে জোর করে তাজুল ইসলাম তাকে ধর্ষন করে লজ্জায় সুমাইয়া বিষয়টি কাউকে বলেনি। ১০-১৫ দিন আগে মেয়ের গর্ভে বাচ্চা আসার বিষয়টি আমরা জানতে পারি। লোকলজ্জার ভয়ে কাউকে না বলে বনজ ঔষধ এর মাধ্যমে অনাকাঙ্খিত গর্ভের সন্তানটি নষ্ট করতে গেলে তার প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়।

ধর্ষিতার মা আরও বলেন, গত ২৭শে সেপ্টেম্বর অসুস্থ মেয়েকে লামা হাসপাতালে ভর্তি করি। তার অবস্থার আরও অবনতি হলে লামা হাসপাতালের ডাক্তার তাকে চমেক হাসপাতালে রেফার করে। ২৯ সেপ্টেম্বর চমেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে তার মৃত্যু হয়। স্থানীয় সমাজের নেতৃবৃন্দরা বিষয়টি পরে সমাধান করে দিবে বলে মেয়েটিকে দাফন দিয়ে দেয়। অসুস্থ সুমাইয়ার বাবা আলী আকবর তার মেয়ের ধর্ষনের ও মৃত্যু বিচার দাবি করেন। এদিকে সুমাইয়াকে হাসপাতালে ভর্তির পর থেকে অভিযুক্ত তাজুল ইসলাম ও তার বাবা সামশুল ইসলামকে এলাকা দেখা যাচ্ছেনা বলে স্থানীয়রা জানায়।

সুমাইয়ার সহপাঠি অনেকে জানায়, সে লেখাপড়ায় ভাল ছিল। সুমাইয়া নিয়মিত স্কুলে আসত ,অভিযুক্ত তাজুল ইসলামের বাবা শামসুল হক মুঠোফোনে বলেন, সমাজের সবাই বলছে আমার ছেলে ধর্ষন করেছে, কিন্তু আমি তা স্বীকার করিনা।

মাতামুহুরী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. খালেকুজ্জামান বলেন, সুমাইয়ার মা লুৎফা বেগম আমাকে জানায় তার মেয়ে অসুস্থ হয়েছে। তবে কি রোগ তা আমাকে বলেনি। ২৯ সেপ্টেম্বর তার মৃত্যু হলে স্কুলের পাশে কবরস্থানে তাকে কবর দেয়া হয়।

এ বিষয়ে রুপসীপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান সাচিং প্রু মার্মা বলেন, বিষয়টি অত্যান্ত দুঃখজনক। দরিদ্র অসহায় মেয়েটি ধর্ষনকারীকে আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন