নাইক্ষ্যংছড়ির উপজেলা চেয়ারম্যান তোফাইল গ্রেফতার
নিজস্ব প্রতিনিধি:
রামু বৌদ্ধ মন্দিরে হামলা মামলার আসামি, বান্দরবন জেলার নাইক্ষ্যংছড়ির উপজেলা চেয়ারম্যান তোফাইল আহম্মদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রবিবার রাত ৩টায় ঢাকার সুন্দরবন হোটেলের ৩১৮ নম্বর রুম থেকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশ (পিবিআই) এর একটি দল তোফাইল চেয়ারম্যানকে গ্রেফতার করে।
নাইক্ষ্যংছড়ির উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান কামাল জানান, গত তিন দিন ধরে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে উপজেলা চেয়ারম্যানদের নিয়ে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিতে জামায়ত সমর্থিত নির্বাচিত এ চেয়ারম্যান ঢাকায় আসেন। পরে তাকে সুন্দরবন হোটেল থেকে আটক করে পুলিশ ।
পুলিশ সুত্রে জানাগেছে, গত দূর্গাপূজার সময় জামায়াত নেতা তোফাইল বান্দরবন ও কক্সবাজারে দুটি মন্ডপে বড় ধরনের নাশকতা চালাতে চেয়েছিল। সে সময় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রচেষ্টায় বড় ধরনের নাশকতার থেকে দেশ রক্ষা পায়। এরপর থেকে সরকারি একাধিক বাহিনী তোফাইল চেয়ারম্যানকে আটক করার জন্য তার বাসায় একাধিকবার অভিযান চালায়। তোফাইল চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ২টি বিচ্ছিন্নতাবাদি সংগঠনের মদদ দেয়ার প্রমাণও পেয়েছে সরকারের বিশেষ বাহিনী। সরকারি একটি বিশেষ সংস্থা তোফাইল চেয়ারম্যানের বাসা থেকে লেপটপ ও মোবাইলসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট যব্দ করে। এরপর থেকেই অনেকটা আত্মগোপনে ছিলেন আলোচিত সমালোচিত এই জনপ্রতিনিধি।
তোফাইল আহামদের স্ত্রী মনোয়ারা আক্তার জেসমিন সাংবাদিকদের জানান, তারঁ স্বামীর বিরুদ্ধে দায়ের করা রামু বৌদ্ধবসতী ঘটনার মামলাসহ সবকটি মামলায় জামিনে রয়েছেন। এছাড়াও তোফাইলকে গ্রেফতার ও হয়রাণি না করার জন্য উচ্চ আদালতের একটি নির্দেশনাও রয়েছে। কিন্তু সরকারি প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকালীন কেন তাকে আটক করা হয়েছে বিষয়টির কিছুই জানা নেই তার। তিনি বলেন, পিবিআই সদস্যরা এর আগে গত ২৪ অক্টোবর ২০১৫ রাতে তোফাইল আহামদের ভাড়া বাসায় তল্লাসী চালিয়ে একটি ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন জব্দ করেছিল।
নাইক্ষ্যংছড়ি থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল খায়ের জানান, সোমবার রাতে রাজধানীর সুন্দরবন হোটেল থেকে পুলিশ ব্যুারো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সদস্যরা তোফায়েল আহমেদকে আটক করে। তিনি বর্তমানে পিবিআই সদরদপ্তরে আছেন। পিবিআই প্রধান ডিআইজি মাহাবুবুর রহমান জানান, এ ব্যাপারে আমাদের অভিযান চলছে।
উল্লেখ্য, ফৌজদারী মামলা জি.আর-৩৯/১২ নম্বর মামলায় দাখিলকৃত অভিযোগপত্র বিজ্ঞ আদালতে গৃহিত হওয়ায় ১ অক্টোবর স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপজেলা-২ শাখা থেকে তোফাইল আহামদকে সাময়িক বহিস্কার করা হয়েছিল। পরে প্রজ্ঞাপনটির আইনগত বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১০৪৩৫ নম্বর পিটিশন আবেদনের প্রেক্ষিতে তোফাইল আহামদ হাইকোর্টে রিট মামলা করে ২৯ নভেম্বর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আদেশে তাঁর দায়িত্বভার ফিরে পান।
হোটেল সুন্দরবনের সিনিয়র কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন জানান, পিবিআই পরিচয় নিশ্চিত হয়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে অভিযানে সহযোগিতা করা হয়। এ সময় তারা ৪১৮ নম্বর রুম থেকে তোফাইল আহমদ কে আটক করে বলে তিনি জানান।