নাইক্ষ্যংছড়িতে পাহাড় ও জমির মাটি যাচ্ছে ইট ভাটায়
বাইশারী প্রতিনিধি:
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সদরে পাহাড়, ফসলি জমি ও টিলা কেটে প্রকাশ্যে চলছে বাণিজ্যিক ইট ভাটার কাজ। সরকারি ভাবে নিষিদ্ধ হওয়ার পরও উপজেলা সদরের বৃহত্তর বিছামারা গ্রামের বিভিন্ন স্থানে মাটি কাটায় পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সদর থেকে চাকঢালা চলাচল সড়কের চাক হেডম্যানপাড়াসহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকার পাহাড় ও ফসলি জমি থেকে মাটি কাটা হচ্ছে ইট ভাটার জন্য। এসব মাটি ইট পোড়ানোর কাজে ব্যবহার করছেন জহির আহমদ কোম্পানী। প্রকাশ্যে ফসলী জমি ও পাহাড় কেটে মাটি সরবরাহ করে লণ্ডভণ্ড করে ফেললেও স্থানীয় ও জেলা প্রশাসন রয়েছেন নিরব দর্শকের ভূমিকায়।
যদিওবা ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩-এর ৫-এর ১ ধারায় উল্লেখ রয়েছে, কোনো ব্যক্তি ইট প্রস্তত করার জন্য কৃষিজমি বা পাহাড় বা টিলা থেকে মাটি কেটে বা সংগ্রহ করে তা ইটের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। কিন্তু এ আইনের প্রয়োগ না থাকায় নাইক্ষ্যংছড়িতে ইট তৈরির জন্য কৃষি জমির মাটি ব্যবহার করা দেদারছে।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান বলেন, জমির মাটির একমাত্র উর্বরতা শক্তি হলো জৈব পদার্থ। একে বলে মাটির প্রাণ। এ জৈব পদার্থে আছে নাইট্রোজেন, পটাশিয়াম ও ফরফরাস। জমির ১০ থেকে ১৫ ইঞ্চির মধ্যে এ জৈব পদার্থের শক্তি থাকে। কিন্তু ইটভাটার মালিকেরা জমির ওপরের ২০ থেকে ২৫ ইঞ্চি মাটি কেটে নেওয়ার কারণে ওই জমি উর্বরতা শক্তি হারিয়ে ফেলে।
এ বিষয়ে কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সৈয়দ আশরাফ বলেন, নাইক্ষ্যংছড়ির ইট ভাটার কোন পরিবেশগত ছাড়পত্র নেই। কৃষি জমি, পাহাড় বা টিলা থেকে মাটি কাটা ও সরবরাহ করা যাবে না।
বান্দরবান জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক জানান, উন্নয়নকাজে ইটের প্রয়োজনীয়তার কথা বিবেচনায় নিয়ে আগে কিছুটা শিথিল করা হয়েছিল। পরিবেশ বিধ্বংসী কাজের জন্য প্রয়োজনে ইটভাটা বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।